ঢাকা: ছয়জন জেল সুপারের পদোন্নতি সংক্রান্ত রায় বাস্তবায়ন না করায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী ও কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম আনিসুল হককে তলব করা হয়েছে।
আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানিতে সোমবার (২০ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আগামী ৪ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় আদালতে তাদের সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল। কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শফিকুল ইসলাম।
আইনজীবীর তথ্য মতে, ২০০৮ সালে জেল সুপারের চলতি দায়িত্বে ছিলেন ছয় কর্মকর্তা। তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল ১৯৮৪ সালের নিয়োগ বিধি অনুসারে। ১৯৯৬ সালে নিয়োগ বিধিমালাটি সংশোধন করে সরকার। ফলে তাদের পদোন্নতি হচ্ছিল না। এ অবস্থায় ২০১৬ সালে তারা প্রথমে সরকারের কাছে আবেদন করেন। আবেদনে সাড়া না পেয়ে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে পদোন্নতির জন্য মামলা করেন। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ১৯৮৪ সালের নিয়োগ বিধি অনুসারে তাদের পদোন্নতির পক্ষে রায় দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করে কারা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের আপিল মঞ্জুর করে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল করেন প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে আপিল বিভাগে আবেদন করেন ওই ছয় কর্মকর্তা। ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ তাদের আবেদন খারিজ করে দেন। পরে ওই বছরই এই খারিজ আদেশের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করা হয়।
আইনজীবী ইব্রাহীম খলিল জানান, গত বছর ৭ এপ্রিল আপিল বিভাগ পুনর্বিবেচনার রায়ে ছয় জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়া, ইকবাল কবির চৌধুরী, মো. আনোয়ারুজ্জামান, মনির আহমেদ, মো. বজলুর রশিদ আকন্দ ও মো. নুরুননবী ভূঁইয়াকে ১৯৮৪ সালের অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফ (ডিপার্টমেন্ট অফ প্রিজন্স) রিক্রুটমেন্ট বিধিমালা অনুসারে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি ও সেবা সুবিধা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পদোন্নতি পেলে তারা জ্যেষ্ঠ জেল সুপার হতেন। কিন্তু রায়ের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও রায় বাস্তবায়ন হয়নি।
পরে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করলে গত ৬ নভেম্বর কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী রায় বাস্তবায়নের জন্য দুই সপ্তাহ সময় নেন। সোমবার কারা অধিদপ্তরের পক্ষে হলফনামা করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। সে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রায় বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই কমিটি রায় বাস্তবায়নের সুযোগ নেই বলে অভিমত দিয়েছেন। পরে আদালত সচিব এবং কারা মহাপরিদর্শককে তলব করেন বলে জানান এই আইনজীবী।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২৩
ইএস/এমজেএফ