সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের গুলশানের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে এবার জবানবন্দি দিয়েছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) বহিষ্কৃত কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপু।
বুধবার (০৬ আগস্ট) বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জামশেদ আলম তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এ মামলায় গত ২ আগস্ট অপুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। সেই রিমান্ড শেষে বুধবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তিনি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর অপুকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ১ আগস্ট জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এ মামলায় গত ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিলুপ্ত কমিটির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়াও মামলাটিতে সাতদিনের রিমান্ড শেষে একই দিনে কাজী গৌরব অপু, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব ও মো. ইব্রাহিম হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
রিয়াদ ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন—কাজী গৌরব অপু, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, মো. ইব্রাহিম হোসেন ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক একজন।
গত ২৬ জুলাই শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফর বাদী হয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় চাঁদাবাজির মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৭ জুলাই সকাল ১০টায় আসামি আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ, কাজী গৌরব অপু গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি শাম্মী আহম্মেদের বাসায় যান। তখন তারা হুমকি-ধমকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যায়িত করে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানোর হুমকি দেন এবং টাকা চেয়ে চাপ দিতে থাকেন তারা।
একপর্যায়ে মামলার বাদী সিদ্দিক আবু জাফর বাধ্য হয়ে নিজের কাছে থাকা নগদ পাঁচ লাখ টাকা ও ভাইয়ের কাছে থেকে নিয়ে আরও পাঁচ লাখ টাকা দেন। এ ঘটনার পর গত ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টা দিকে আসামি রিয়াদ ও অপু বাদীর বাসায় প্রবেশ করে তার ফ্ল্যাটের দরজায় সজোরে ধাক্কা মারেন। বিষয়টি গুলশান থানা পুলিশকে মোবাইল ফোনে অবহিত করলে আসামিরা চলে যান।
পরবর্তীতে গত ২৬ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টায় আসামি রিয়াদের নেতৃত্বে অপরাপর আসামিরা বাদীর বাসার সামনে এসে তাকে খুঁজতে থাকেন। বাসার দারোয়ান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে বিষয়টি জানান। তখন আসামিদের দাবি করা বাকি ৪০ লাখ টাকা না দিলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেবেন বলে হুমকি দিতে থাকেন। পরবর্তীতে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে তাৎক্ষণিক গুলশান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচ আসামিকে হাতেনাতে আটক করে।
কেআই/এমজেএফ