ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ ভাদ্র ১৪৩২, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আইন ও আদালত

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রকৃত অপরাধীদের বিচার শেখ হাসিনা চাননি: আসামি পক্ষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:২৪, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রকৃত অপরাধীদের বিচার শেখ হাসিনা চাননি: আসামি পক্ষ বক্তব্য দিচ্ছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান।

আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের বিচার দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা চাননি বলে মন্তব্য করেছেন এই মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সব আসামির খালাসের রায় বহাল রেখে হাইকোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তারা এই মন্তব্য করেন।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, আজকে রাষ্ট্র কর্তৃক আনিত সব আপিল ও পিটিশান ডিসমিস হয়েছে। অর্থাৎ হাইকোর্ট বিভাগের আসামিদের খালাসের যে রায়, সেটা বহাল আছে। আমি গর্ব অনুভব করি আমার সুপ্রিম কোর্ট নিয়ে, আমার হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগ নিয়ে। তারা ন্যায়ের মানদণ্ড আজকে আবারো উঁচু করে ধরলেন। বাংলাদেশে আইনের শাসন আছে- এটা আবারো প্রমাণিত হলো।

তিনি আরো বলেন, এই মামলা সঠিকভাবে তদন্ত করেনি বলে হাইকোর্ট বিভাগ যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল পুনঃতদন্তের, সেটা রাষ্ট্রের কাজ, বিচার বিভাগের না। কারণ এটিকে এক্সপান্স করা হয়েছে। আর তারেক রহমানসহ অন্যান্য যারা আপিল করতে পারেননি, তাদের বেলায়ও খালাসের আদেশ প্রযোজ্য হবে।

এস এম শাহজাহান বলেন, তারেক রহমানসহ এই মামলায় যারা আছেন, তারা বেকসুর খালাস। এই মামলায় আর কোনো সাজা কারো নেই। আদালতের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিনা বিচারে অন্যায়ভাবে কাউকে ফাঁসি দেওয়া যাবে না- এটা আবারো প্রমাণিত হলো। এই ধারাবাহিকতা যেন বজায় থাকে।

তিনি আরো বলেন, মুফতি হান্নানের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির ওপর এই মামলাটি ছিল। কিন্তু আজকে প্রধান বিচারপতি যখন রায় পড়ে শোনালেন, তখন তিনি বলেছেন, সিলেটে আনোয়ার চৌধুরীর ওপরে গ্রেনেড হামলা মামলায় মুফতি হান্নানের ফাঁসির সাজা হয়েছিল। সেখান থেকে এনে দ্বিতীয়বার তার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু তিনি নন, এই মামলায় অন্য যাদের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছিল তারা কেউ স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দেননি বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। স্বেচ্ছায় যদি কেউ স্বীকারোক্তি না দেয়, তাহলে সেই স্বীকারোক্তির কোনো মূল্য নেই।

তারেক রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আজকে যে রায় দিয়েছেন, সেই রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ন্যায় বিচার পেয়েছেন। এই মামলাটি অত্যন্ত মানবিক অপরাধ ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা রাজনৈতিক উদ্দেশে, ব্যক্তিগত জিঘাংসা থেকে তারেক রহমানকে অন্যায়ভাবে এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। আজকে সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, তারেক রহমান নির্দোষ এবং তিনি খালাস পেয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, আজকে এটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রকৃত অর্থে আইভি রহমানসহ যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের বিচার তিনি চাননি। যদি শেখ হাসিনা প্রকৃত অপরাধীদের বিচার চাইতেন, তাহলে হয়তো রাজনৈতিক জিঘাংসার বশবর্তী হয়ে তারেক রহমানকে এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করতেন না।

এ সময় আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও বিএনপিপন্থি আইনজীবী মাহাবুব উদ্দিন খোকন উপস্থিত ছিলেন।

এসসি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।