ঢাকা, শুক্রবার, ২০ ভাদ্র ১৪৩২, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আইন ও আদালত

এজলাসে বিচারকের সামনেই সাংবাদিককে মারধর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:০৮, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫
এজলাসে বিচারকের সামনেই সাংবাদিককে মারধর

ঢাকার শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান পান্নার জামিন শুনানিকালে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বিচারকের সামনেই মারধরের শিকার হয়েছেন এক সাংবাদিক।  

মারধরের শিকার ওই সাংবাদিক হলেন বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভির রিপোর্টার আসিফ মোহাম্মদ সিয়াম।

 

বৃহস্পতিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনের আটতলায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাস পিয়াসের আদালতে এ ঘটনা ঘটে।  

এ সময় ওই সাংবাদিককে কয়েকজন আইনজীবী মারধর করেন। এতে আহত হন সিয়াম। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির একটি সভা থেকে লতিফ সিদ্দিকী, সাংবাদিক পান্নাসহ ১৬ জনকে আটক করা হয়। শুক্রবার শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ লতিফ সিদ্দিকী এবং সাংবাদিক পান্নার জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল। লতিফ সিদ্দিকীতে আদালতে হাজির করা না হলে সাংবাদিক পান্নাকে আদালতে হাজির করা হয়।  

জামিন শুনানির সংবাদ সংগ্রহ করতে আদালতে যান কয়েকজন সাংবাদিক। দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটের দিকে তাকে এজলাসে তোলা হয়।

এ সময় মোক্তাদির রশীদ নামে এক সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান পান্নার কাছে জানতে চান, কারাগারে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে কি না?

এজলাসের বেঞ্চে বসে থাকা অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন মাহি আসামির সঙ্গে কথা বলার কারণ জিজ্ঞেস করেন। বিষয়টি নিয়ে কিছুটা তর্ক-বিতর্ক হয় তাদের।  

একপর্যায়ে তাকে এজলাস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন আইনজীবী মহিউদ্দিন। ওই সাংবাদিক তার কাছে জানতে চান, ‘আপনি কোর্ট ইন্সপেক্টর কি না? আমাকে বেরিয়ে যেতে বলছেন। বিচারক বললে আমি বেরিয়ে যাব। ’

এরমধ্যেই এজলাসে ওঠেন বিচারক। তখন একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা সিয়াম এসে ওই আইনজীবীকে বলেন, উনি বহিরাগত নন, একজন সাংবাদিক। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে বেঞ্চ থেকে লাফ দিয়ে উঠেই কানের ওপর ঘুষি দেন মহিউদ্দিন।  

এ সময় সিয়াম তার হাতে থাকা সময় টিভির মাইক্রোফোন উঠিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। তবে আইনজীবী তাকে টেনে নিয়ে আসেন।

সিয়াম কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই আইনজীবীর সঙ্গে আরও কয়েকজন সহযোগী তাকে ঘিরে মারধর শুরু করেন।  

সিয়ামকে চড়, থাপ্পড়, কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকেন তারা। এতে আহত হন সিয়াম।  

পরিস্থিতি দেখে এজলাস থেকে নেমে খাসকামড়ায় চলে যান বিচারক। এ সময় প্রসিকিউশনের পক্ষে থাকা কাইয়ুম হোসেন নয়ন ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করে সাক্ষীর কাঠগড়ার কাছে নিয়ে যান।  

এ বিষয়ে সিয়াম বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই বিচারকের সামনে মব সৃষ্টি আমাকে মারধর করলো কয়েকজন আইনজীবী। আমি এঘটনার বিচার চাই।  

এরপর বেলা ৩টা ২৫ মিনিটের ফের এজলাসে উঠেন বিচারক। এরপর শুনানি নিয়ে আদালত লতিফ সিদ্দিকী এবং সাংবাদিক পান্নার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।

এদিকে এজলাসে বিচারকের সামনে সাংবাদিকের উপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে উচ্চ আদালতে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন সংগঠন ল' রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) ও নিম্ন আদালতে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটি (সিআরইউ)।  

কেআই/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।