ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ রবিউস সানি ১৪৪৭

আইন ও আদালত

প্রজ্ঞাপন জারি

আইসিটি মামলায় অভিযুক্ত হলে অংশ নেওয়া যাবে না নির্বাচনে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:৩২, অক্টোবর ৭, ২০২৫
আইসিটি মামলায় অভিযুক্ত হলে অংশ নেওয়া যাবে না নির্বাচনে

>>এটি বিচার ছাড়া শাস্তি দেওয়ার শামিল: শাহদীন মালিক

মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হলে তিনি সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার পরিষদ বা প্রতিষ্ঠানের সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক অথবা সরকারি কোনো পদ বা দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। অংশ নিতে পারবেন না নির্বাচনেও।

এমনই বিধান রেখে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট, ১৯৭৩ সংশোধন করে ৬ অক্টোবর অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। অধ্যাদেশে আইনের ২০(সি) সংযোজন করা হয়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অনুমোদনে অধ্যাদেশটি জারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কার্যকর হয়েছে।

ইতোমধ্যে ফরমাল চার্জ দাখিল হয়ে ক্ষমতাচ্যুত পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ অনেক সরকারি কর্মকর্তা-পুলিশের বিচার শুরু চলছে। এছাড়া জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ দাখিল করা হয়েছে।

এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট ১৯৭৩ একটি সেকশন যুক্ত করা হয়েছে। নতুন সংযোজিত ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে উক্ত আইনের সেকশন ৯–এর ১–এর অধীনে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র (ফরমাল চার্জ) দাখিল হলে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা বহাল থাকার অযোগ্য হবেন।

তিনি আরও বলেন, একইভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তি স্থানীয় সরকার পরিষদ বা প্রতিষ্ঠানের সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা বহাল থাকার অযোগ্য হবেন। এমনকি প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে নিয়োগ পাওয়া বা অন্য কোনো পাবলিক অফিসে অধিষ্ঠিত হওয়ারও অযোগ্য হবেন।

তবে,  পরবর্তীতে যদি কেউ ট্রাইব্যুনাল থেকে অব্যাহতি পান বা খালাসপ্রাপ্ত হন, তাহলে তার ওপর থেকে এই অযোগ্যতা তুলে নেওয়া হবে।

আইনের সংশোধনের কারণ ব্যাখ্যা করে ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ের প্রয়োজনেই এই সংশোধন করা হয়েছে, কারণ দেশ এখন এক বিপ্লবোত্তর পরিস্থিতিতে পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

অবশ্য এই সংশোধনের সমালোচনা করেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, এটি ন্যায়বিচারের সবচেয়ে মৌলিক নীতিকে লঙ্ঘন করে। কারণ অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত একজন ব্যক্তি নির্দোষ। কেউ কেবল অভিযুক্ত হলেই যদি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন বা সরকারি চাকরিতে যেতে না পারেন, তা বিচার ছাড়া শাস্তি দেওয়ার শামিল।

ইএস/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আইন ও আদালত এর সর্বশেষ