বিডিআর হত্যা মামলা
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতর পিলখানায় বিদ্রোহের নামে হত্যাযজ্ঞের ঘটনা ঘটে। এতে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।
বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানির জন্য ২০১৫ সালে হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হয়। বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে ওই বছরের জানুয়ারি মাসে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ জন আসামির ডেথ রেফারেন্স ও আপিল, খালাসপ্রাপ্ত ৬৯ আসামির সর্বোচ্চ দণ্ড চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল, যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১৬০ জন এবং বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডপ্রাপ্ত ২৫৬ জনের আপিল বিচারাধীন রয়েছে এ বিশেষ বেঞ্চে।
ষোড়শ সংশোধনী
২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ০৫ নভেম্বর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ হাইকোর্টে এ রিট আবেদন করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৯ নভেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ১০ মার্চ এ রুলের শুনানি শেষে ০৫ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট।
ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ করে দুই বিচারপতির দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ১১ আগস্ট এবং দ্বিমত পোষণকারী বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের রায় ০৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়।
এরপর আপিল বিভাগে এ মামলার দ্রুত শুনানির জন্য হাইকোর্টের রিট আবেদনকারী পক্ষ ২৮ নভেম্বর আবেদন করেন।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, হাইকোর্টের রায়ে ওই সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টির সঙ্গে সাংবিধানিক ব্যাখ্যা জড়িত থাকায় আপিলের জন্য সার্টিফিকেট দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষও আপিল করেননি। তাই বাদী এ বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য আপিল বিভাগে আবেদনটি করেছেন।
আদালত বাদীপক্ষের করা আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ০৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।
রাজীব হত্যা মামলা
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠা শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকে রাজধানীর পল্লবীতে তার বাসার সামনে ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনায় রাজীবের বাবা ডা. নাজিম উদ্দিনের করা মামলায় ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র রেদোয়ানুল আজাদ রানা (পলাতক) ও ফয়সাল বিন নাঈম ওরফে দীপকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায়ে মাকসুর হাসান অনিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এহসান রেজা রুম্মান, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজকে দশ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া আনসারুল্লা বাংলাটিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানিকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামি সাদমান ইয়াছির মাহমুদকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত।
এ রায়ের পর মামলার নথিপত্র গত বছরের ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে আসে। ০৭ নভেম্বর বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ মামলার শুনানি শুরু হয়।
নিজাম হাজারী
‘সাজা কম খেটেই বেরিয়ে যান সাংসদ’ শিরোনামে ২০১৪ সালের ১০ মে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়৷
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০০০ সালের ১৬ আগস্ট অস্ত্র আইনের এক মামলায় নিজাম হাজারীর ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু দুই বছর ১০ মাস কম সাজা খেটে কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি’।
পরে ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে নিজাম হাজারীর সংসদ সদস্য পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন ফেনী জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া।
রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ৮ জুন রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
রুল শুনানি শেষে গত বছরের ০৬ ডিসেম্বর রায়ের রায় ঘোষণা করা হয়। এক বিচারপতি তার সংসদ সদস্য পদকে অবৈধ বলে রায় দিলেও অন্যজন বৈধ বলে উল্লেখ করে এ বিষয়ে করা রিট ও রুল খারিজ করে দিয়েছেন।
আইন অনুসারে এখন রিট আবেদনটি প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। প্রধান বিচারপতি তৃতীয় বেঞ্চ গঠন করে সেটির নিষ্পত্তির জন্য পাঠাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৭
ইএস/এএসআর