গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে হাইকোর্ট বিভাগে ৮ জন বিচারপতি নিয়োগের জন্য সুপ্রিম কোর্ট থেকে নির্বাহী বিভাগে পরামর্শ দেওয়া হলেও তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি।
এ অবস্থায় প্রধান বিচারপতি তার এক বক্তব্যে জনসংখ্যা এবং মামলার সংখ্যা অনুপাতে বিচারক নিয়োগ প্রদান করা এখন সময়ের দাবি বলে উল্লেখ করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মোট বিচারপতি নয়জন। এর মধ্যে ০১ জানুয়ারি বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। বাকি আটজনের মধ্যে বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা আগামী ০৭ জুলাই এবং বিচারপতি মো. নিজামুল হক আগামী ১৪ মার্চ অবসরে যাবেন।
হাইকোর্ট বিভাগে মোট বিচারপতি ছিলেন ৯০ জন। এর মধ্যে ১৫ ডিসেম্বর বিচারপতি জে এন দেব চৌধুরী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বাকি ৮৯ জনের মধ্যে পাঁচজন এ বছর অবসরে যাবেন।
বিচারপতি মো. মিজানুর রহমান ভূঁঞা ০৬ সেপ্টেম্বর, বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদুল হক ৩০ ডিসেম্বর, বিচারপতি ফরিদ আহাম্মদ ০২ জানুয়ারি, বিচারপতি শামীম হাসনাইন ২৩ এপ্রিল এবং বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ২৯ মে অবসরে যাবেন।
জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধান বিচারপতি এ বিষয়ে বলেছেন, ‘আমেরিকায় ১০ লাখ মানুষের জন্য ১০৭ জন, কানাডায় ৭৫ জন, ইংল্যান্ডে ৫১ জন, অস্ট্রেলিয়ায় ৪১ জন, ভারতে ১৮ জন বিচারক রয়েছে। অথচ বাংলাদেশে ১০ লাখ মানুষের জন্য মাত্র ১০ জন বিচারক রয়েছেন। জনসংখ্যা এবং মামলার সংখ্যা অনুপাতে বিচারক নিয়োগ প্রদান করা এখন সময়ের দাবি’।
‘বর্তমানে আপিল বিভাগে ৯ জন এবং হাইকোর্ট বিভাগে ৮৯ জন বিচারকের মধ্যে ৩ জন বিচারক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে ৪ জন বিচারক গুরুতর অসুস্থ। ফলে বিভিন্ন সময় বেঞ্চ গঠনের সময় আমাকে হিমশিম খেতে হয়। তাদের মধ্য থেকে ২০১৭ সালে ৭ জন বিচারক অবসর গ্রহণ করবেন। ফলে বেঞ্চ গঠনে জটিলতা আরো প্রকট হবে’।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘২০১৬ সালের আগস্ট আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর উভয়পক্ষের সম্মতিক্রমে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আমি ৮ জন অতিরিক্ত বিচারক নিয়োগের জন্য সরকারকে পরামর্শ প্রদান করি। দীর্ঘ আলোচনার পরে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে এ সুপারিশ প্রেরণ করা হলেও দীর্ঘ চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও এ নিয়োগ প্রক্রিয়া আলোর মুখ দেখেনি’।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৭
ইএস/এএসআর