তিনি বলেন, ভুল রিপোর্ট দেওয়ায় বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, উল্টো সরকারই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সেমিনার হলে শনিবারের (১৮ মার্চ) এ অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বলা হয়, বিচার বিভাগ প্রশাসনের প্রতিপক্ষ। এটি অত্যন্ত একটি ভুল ধারণা। কোনোদিনই প্রশাসন বা সরকারের প্রতি বিচার বিভাগের ক্ষোভ নেই’।
‘আমাদের ছোট ছোট সমস্যা। আমরা কিন্তু বেশি কিছু চাচ্ছি না, এই ছোট ছোট সমস্যাগুলো ঠিকমতো তুলে ধরা হয় না। বরঞ্চ উল্টোভাবে পেশ করা হয়’।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘বিচারক শূন্যতা নিয়ে আমরা চিঠি দেই। কিন্তু সময়মতো সহযোগিতা পাই না। এটি হলো নিম্ন পর্যায়ের প্রশাসন। উচ্চ পর্যায়ে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়’।
‘প্রশাসনে যারা আছেন, এ সংক্রান্ত বিষয় যারা ডিল করেন, তারা ভুল রিপোর্ট সরবরাহ করবেন না সরকার প্রধানকে। ঠিক রিপোর্ট দেবেন, যেন বিচার বিভাগ ও সরকারের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক থাকে’।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগকে সংবিধান ও আইনের আওতার মধ্যে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে, সে ক্ষমতা অনুসারে যদি ঠিকমতো কাজ করতে দেওয়া হয়, তাহলে দেশে অনেকাংশে দুর্নীতি, অপরাধ প্রবণতা, এমনকি সন্ত্রাসমূলক কাজ- এগুলো কিন্তু চলে (কমে) যেতো। বিচার বিভাগের যে রকম কাজ করতে দেওয়ার কথা সেটা দেওয়া হোক, তাহলে এগুলো চলে যাবে’।
‘সরকার ও প্রশাসন এটি উপলব্ধি করবেন। ভবিষ্যতে যেন আর কোনো ভুল বোঝাবুঝি না হয়’।
বিচারকের পদ শূন্য উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এখনও ৬ জন জেলা জজের পদ খালি। এটা কি কল্পনা করা যায়? শুধু জেলা জজ পদই নয়, অতিরিক্ত জেলা জজের ৯টি, যুগ্ম জেলা জজের ১৬টি, সহকারী জজ পর্যায়ের ১২৩টি এবং জুডিসিয়াল সার্ভিসের ১৫৯টিসহ সর্বমোট ৩০৭টি পদ খালি রয়েছে।
তিনি বলেন, পদায়নের জন্য সুপ্রিম কোর্ট থেকে রিক্যুইজিশন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের তরফ থেকে গভর্মেন্ট আদেশ করা হয়নি। তাই খালি।
বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ও আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদ, বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি, বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের সচিব পরেশ চন্দ্র শর্ম্মা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) কমিশনের অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমের উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি। জুডিসিয়াল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে এখন থেকে www.bjsc.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের যেকোনো স্থান থেকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৭
ইএস/এএসআর