বুধবার (০৭ জুন) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৬৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি দেখা যায়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বৈধতা নিয়ে তিনটি রিটের শুনানি শেষে গত ১১ মে এ রায় দেন হাইকোর্ট।
অবশ্য রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে এ রায়ের ওপর আগামী ০২ জুলাই পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিয়ে ওইদিনই রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
গত ২১ মে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দিয়ে জানান, ০২ জুলাইই শুনানি শুরু হবে।
ফলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে আপাতত ভ্রাম্যমাণ আদালত চলবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
২০১১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ভবন নির্মাণ আইনের কয়েকটি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে আবাসন কোম্পানি এসথেটিক প্রপার্টিজ ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খানকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। ২০ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পান। এরপর ১১ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের (মোবাইল কোর্ট অ্যাক্ট, ২০০৯) কয়েকটি ধারা ও উপধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন তিনি।
এ রিটের শুনানি নিয়ে একই বছর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আদালতের জারি করা রুলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত
পরিচালনার ৫ ধারা, এবং ৬(১), ৬(২), ৬(৪), ৭, ৮(১), ৯, ১০, ১১, ১৩, ১৫ ধারা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিলো।
পরে এ ধরনের আরও দু’টি রিট করা হয়। তিন রিটে মোট ১৯ আবেদনকারীর শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
হাইকোর্টের রায়ের পরে হাসান এম এস আজিম বলেছিলেন, রায়ের হাইকোর্ট বলেছেন, এটি অসাংবিধানিক ও মাসদার হোসেন মামলার (বিচার বিভাগ পৃথককরণ) রায়ের পরিপন্থি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পরিপন্থি।
এছাড়াও মোবাইল কোর্ট আইনে আবেদনকারীদের দেওয়া সাজাও বাতিল করেছেন। এর মধ্যে একজনকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিলো। তার টাকাও ৯০ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে রায় দিয়েছেন।
হাসান আজিম বলেন, কিছু ধারা অবৈধ হয়ে যাওয়ায় এখন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অবৈধ। এ অবস্থায় মোবাইল কোর্ট আর পরিচালনার সুযোগ নেই। এখন যদি মোবাইল কোর্ট আইন পরিচালনা করতে হয়, তাহলে নতুনভাবে একটি আইন করতে হবে, যেখানে সংবিধান ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য থাকতে হবে।
তবে আইন হওয়ার পরে যাদের সাজা হয়েছে তাদের ব্যাপারে তিনি বলেন, এ বিষয়টি মার্জনা করেছেন আদালত। তবে যেসব সাজার বিষয়ে এখন বিচারাধীন সেগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলবে।
২০০৭ সালে ভ্রাম্যমাণ আদালত অধ্যাদেশ জারি করে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ২০০৯ সালের ০৪ অক্টোবর জাতীয় সংসদে এটিকে আইনে পরিণত করে। এরপর থেকে এটি ‘ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন ২০০৯’ নামে পরিচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৭
ইএস/এএসআর