ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সাত বছরেও দাখিল হয়নি সাগর-রুনি হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৯
সাত বছরেও দাখিল হয়নি সাগর-রুনি হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন সাংবাদিক দম্পতি মেহেরুন রুনি নাহার ও সাগর সরওয়ার

ঢাকা: সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি নাহার হত্যা মামলার প্রতিবেদন সাত বছরেও দাখিল করতে পারেননি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য ৬২ বার তারিখ দিয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ জানুয়ারি মামলাটির প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধায্য ছিল।

কিন্তু ওই দিনও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের সহকারী পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি দাখিলের জন্য নতুন করে দিন ধায্য করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

মামলার বাদী নিহত রুনির ছোট ভাই নওশের আলম রোমান  বলেন, দীর্ঘ সময়েও এ হত্যা রহস্য উদঘাটন করতে পারেননি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আদালতের কাছ থেকে দফায় দফায় ৬২ বার সময় নিয়েছেন।

রোমান বলেন, মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রয়েছে। এখনই কোনো ধরনের অগ্রগতি দেখছি না। তদন্ত কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তারা যেন দ্রুত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন।  

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যার মামলায় আমাদের ক্লায়েন্ট জড়িত নয়। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। মূল অপরাধীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। আমার ক্লায়েন্টদের বিরুদ্ধে মিথ্যা-হয়রানিমূলকভাবে অভিযোগ আনা হয়েছে। ’

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুনি তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ঘটনাস্থলে গিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা পাল্টেছে বহুবার।  

এ ঘটনায় নিহত রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা করেন। ১২ ফেব্রুয়ারি প্রথমে মামলাটির তদন্ত করেছেন শেরে বাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই)। ২০১২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলাটির তদন্তের জন্য ডিবি উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলম তদন্তভার গ্রহণ করেন। দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্ত দেওয়া হয় র‌্যাবকে। ওই দিন থেকে এখন পর্যন্ত ৬২ বার সময় নিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা।  

মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার ৮ জনের কেউই এখন পর্যন্ত হত্যার দায় স্বীকার করেনি। মামলার আসামিদের মধ্যে দুই জন তাদের বাড়ির দারোয়ান পলাশ রুদ্র পাল ও কথিত বন্ধু তানভীর রহমান জামিনে রয়েছেন। অন্য ছয় আসামি মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু, বকুল মিয়া, কামরুল হাসান অরুণ, রফিকুল ইসলাম, এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবিল ও আবু সাঈদ কারাগারে আটক।

২০১৫ সালের জানুয়ারিতে সাগর-রুনির ভাড়া বাসার নিরাপত্তা প্রহরী এনামুল হক ও পলাশ রুদ্র পাল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

এর আগে ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মো. সাইদ, মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ ও নিহত দম্পতির বন্ধু তানভীর রহমান এ পাঁচজনকে মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক নারায়ণ চন্দ্র হত্যার ঘটনায় র‌্যাব ও ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। মামলায় এ পর্যন্ত ১৫৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র‌্যাব।  

চাঞ্চল্যকর মামলাটির বর্তমানে তদন্ত করছেন র‌্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহম্মেদ। গত বছরের ২৫ নভেম্বর মামলার তদন্তভার তার উপর ন্যাস্ত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৯
এমএআর/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।