ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘মন্ত্রী গোনার টাইম নাই’ হেলেনার ফেসবুক ভিডিও আদালতে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২১
‘মন্ত্রী গোনার টাইম নাই’ হেলেনার ফেসবুক ভিডিও আদালতে

ঢাকা: ‘আমি প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কাউকে গুনি না, মন্ত্রী গোনার টাইম নাই’ এমন বক্তব্য সম্বলিত হেলেনা জাহাঙ্গীরের ফেসবুক ভিডিও আদালতে উপস্থাপন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তার রিমান্ড শুনানি হয়।

এদিন রাত ৭টা ৫০ মিনিটে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয় হেলেনা জাহাঙ্গীরকে। পুলিশের একটি প্রাইভেটকারে করে আদালতের গেটে নামিয়ে সরাসরি তাকে নেওয়া হয় পাঁচতলার এজলাস কক্ষে।

রাত আটটার দিকে রিমান্ড শুনানি শুরু হয়। শুরুতে ঢাকার মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক শেখ শাহানুর রহমানের করা পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদনের উপর শুনানি করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীর ফেসবুকে সরকারবিরোধী বিভিন্ন বক্তব্য দেন। এর মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন তিনি৷ তার এসব বক্তব্য সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ। এ ষড়যন্ত্রে পেছনে একটি চক্র কাজ করছে। এ চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত, তাদের উদ্দেশ্য কী, তা জানতে তদন্ত কর্মকর্তার প্রার্থীত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।

অপরদিকে, আসামিপক্ষে আইনজীবী শফিকুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীর একজন সিআইপি। তিনি সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছেন৷ তিনি জয়যাত্রা নামে একটি আইপি টিভির মালিক। এ মামলায় তার মোবাইল জব্দ করা হয়েছে৷ তিনি যদি কিছু বলে থাকেন, তা ফেসবুকে আছে৷ এখানে উদ্ধারের কিছু নেই, তাই রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই৷ তাছাড়া তিনি অসুস্থ, তার একটি সার্জারি হয়েছে গত এপ্রিলে। তাই তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করছি।

এ সময় বিচারক হেলেনা জাহাঙ্গীরের কাছে তার কিছু বলার আছে কিনা, জানতে চান। তিনি আদালতকে বলেন, আমি সরকারের লোক, রাষ্ট্রের লোক, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করি। আমি এখনও সরকার দলে আছি, কারণ বহিষ্কারের কোনো কাগজপত্র এখনও হাতে পাইনি। আমার পদ এখনও আছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ২৫ টি দেশ সফর করেছি।

তিনি আরও বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আমি কোনো সময় কিছু বলিনি, বরং যারা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেছে তাদের বিরুদ্ধে আমি কথা বলেছি, প্রতিবাদ করেছি, এগুলো ইন্টারনেটে আছে। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার মতো কোনো কাজ করিনি।

তখন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সিএমএম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন ফেসবুক থেকে বের করে হেলেনার ভিডিও বিচারককে দেখান। মোবাইল থেকে বিচারক ভিডিওটি দেখেন। যেখানে হেলেনা বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কাউকে গুনি না। মন্ত্রী গোনার টাইম নাই। এরপর বিচারক তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

বৃহস্পতিবার রাতে হেলেনাকে তার বাসা থেকে আটক করে র‌্যাব। শুক্রবার বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়।

এরপর রাত ৭টা ৫০ মিনিটে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

বৃহস্পতিবার হেলেনার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫/২৯/৩১ ধারায় এ মামলা করেন র‌্যাব-১ এর সিপিও মজিবুর রহমান। মামলায় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সংস্থার বিরুদ্ধে উসকানিমূলক ও মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪০ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২১
কেআই/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।