ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে ভুয়া ভিডিও ছড়ান রুমা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২১
সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে ভুয়া ভিডিও ছড়ান রুমা

ঢাকা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নোয়াখালীর যতন সাহা হত্যার শিরোনামে অন্য ঘটনার একটি ভিডিও আপলোড করে গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্টের অপপ্রয়াস চালান রুমা সরকার। রমনা থানায় র‌্যাবের দায়ের করা মামলায় তার বিরুদ্ধে করা রিমান্ড আবেদনে একথা বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রমনা থানায় রুমার বিরুদ্ধে র‌্যাব বাদী হয়ে একটি মামলা করে। এদিন দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, রুমা সরকার সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নোয়াখালীর যতন সাহার হত্যার শিরোনামে অন্য ঘটনার একটি ভিডিও আপলোড করে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্টের অপপ্রয়াস চালান, যা বিভ্রান্তিমূলক। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি গত ১৬ মে বিকেল ৪টার সময় ঢাকার পল্লবী থানাধীন ডি-ব্লকের শাহিন উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার ভিডিও। এ সময়ে সনাতন ধম্বালম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা কেন্দ্রিক সহিংসতাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্টে এ ঘটনা ঘটানো হচ্ছিল।

এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে রুমা সরকার গত ১৯ অক্টোবর দুপুর ২টা ৩৫ মিনিট থেকে ২টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত ফেসবুক লাইভে আসেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি ভুল করে যতন সাহার মৃত্যুর দৃশ্য দেখে ফেলেছিলাম। গরুর মাংস যেভাবে কুপিয়ে বানায়, আহা হিন্দুদের প্রতি তোর এত ক্ষোভ! তোরা অমানুষ, হত্যার পর এই ভাবে কোপালি ক্যান?’

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, দেশের সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে নাজুক পরিস্থিতিতে তার লাইভ ভিডিওটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ও ভয়ভীতি ছড়াতে সাহায্য করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, রুমা সরকার রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম বিনষ্ট করার অভিপ্রায়ে ফেসবুকে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে, মিথ্যা অপপ্রচার, হিন্দু সম্প্রদায়কে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিল।

কী উদ্দেশ্যে, কার ইন্ধনে, কোন পরিকল্পনাকে সামনে রেখে রুমা সরকার ফেসবুক লাইভে এ ভিডিওর মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়েছেন, তা যাচাই এবং ওই ঘটনার অন্য কোনো গভীর ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে কিনা, তা উদঘাটনের লক্ষ্যে রুমা সরকারের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

এ সময় আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট লিটন কুমার সাহা, সুব্রত বিশ্বাস (শুভ্র) রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ উর রহমান দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

আদালতে রমনা থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই নিজাম উদ্দিন ফকির এসব তথ্য জানান।

গত ১৯ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের বাসা থেকে রুমা সরকারকে আটক করে র‌্যাব-৩। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‍্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে র‌্যাব তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫/২৮/৩১ ধারায় রমনা থানায় মামলা দায়ের করে।

আরও পড়ুন: বদরুন্নেসার শিক্ষক রুমা রিমান্ডে

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২১
কেআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।