ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

ননদ-ভাবির সম্পর্কের টানাপোড়েন দূর করতে কী করবেন? 

লাইফস্টাইল ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৪
ননদ-ভাবির সম্পর্কের টানাপোড়েন দূর করতে কী করবেন?  সংগৃহীত ছবি।

কেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে পায়েলকে বিয়ে করেছেন। পায়েলের পরিবার বেশ সচ্ছল, শিক্ষিত ও সমাজে প্রতিষ্ঠিত।

কেয়ার বয়সী একটি বোন আছে পায়েলের। তার নাম হিরা। কেয়া ও হিরার মধ্যে চমৎকার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে এটা দেখে আত্মীয়-স্বজনরা খুব খুশি। কিন্তু ধীরে ধীরে এ সম্পর্ক ফিকে হতে শুরু করে বছর যেতেই।

কীভাবে ননদ-ভাবির সুন্দর সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে? যেমন, পায়েল হয়তো কেয়ার জন্য একটা উপহার নিয়ে এলেন।  হিরা এটা নিয়ে মন্তব্য জুড়ে দিলেন। বিষয়টি কেয়ার মোটেও ভালো লাগেনি। আবার কেয়ার জন্মদিনে খুব আগ্রহ নিয়ে হিরা কেক থেকে শুরু করে উপহার কেনা, আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত করা, খাবারের ব্যবস্থা সব করলেন। কিন্তু কেক কাটার সময় হিরাকেই ডাকতেই ভুলে গেলেন কেয়া। এবার বোঝেন অভিমানী হিরার কী অবস্থা! আর এসবের কারণে ননদ ও ভাবির মধ্যে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে দূরত্ব।

আসলে বিয়ের পর বরের বোন থাকলে অনেক পরিবারেই সমস্যার শুরু হয় এই ননদ-ভাবির সম্পর্কের জটিলতা থেকে। আর এদের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হতে থাকলে তার প্রভাব পড়ে নতুন বিবাহিত দম্পতির জীবনেও।

ননদ-ভাবির সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ আন্তরিক রাখতে হলে সবাইকেই উদ্যোগী হতে হবে। কিছু বিষয়ে লক্ষ্য রাখলেই একে ও অপরের সঙ্গী হতে পারবেন:

দ্বিমত হলেও শান্ত থাকা: সব কথা বা কাজে সবার মতো এক থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। যেকোনো বিষয়ে ননদের সঙ্গে দ্বিমত হতেই পারে। তাই বলে ননদের কথাটি বড় কোনো ইস্যু তৈরি করে অশান্তি করা ঠিক নয়। একই কথা ননদের জন্যও। ভাবিরও নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। তিনি নিজের মতো ভাববেন আর তার সিদ্ধান্ত জানাবেন। যদি আপনার কথার বিপক্ষে চলে যায় তবে বিরুদ্ধে গিয়ে কটুক্তি করা বা আচরণে এমন কিছু প্রকাশ করা যা ভাবির ব্যক্তিত্বে লাগে এমন কিছু করা যাবে না।

সরাসরি কথা বলা: কোনো সমস্যা হলে বা নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হলে ভাবি প্রথমেই বরের কাছে বা নিজের বাবার বাড়ির আত্মীয়দের কাছে ননদ সম্পর্কে কটুক্তি করবেন না। আর ননদের জন্য পরামর্শ হচ্ছে, ভাবিও কিন্তু একটি পরিবারের আদরের মেয়ে। আপনাদের পরিবারে এসে তিনি সবার সঙ্গে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন, কিছু ভুল তো হতেই পারে। এটা বড় করে না দেখে সরাসরি কথা বলে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করুন।

বন্ধুত্ব: নিজেদের মাঝে বন্ধুত্ব তৈরি করুন। ননদের সঙ্গে সবকিছু শেয়ার করুন। তার কাছে পরামর্শ চান কীভাবে পরিবারের সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করবেন বা কোনো কাজ করতে গেলে তার সাহায্য চান। এভাবেই দেখবেন এক সময় ননদ-ভাবির মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ আর নির্ভতার সম্পর্ক গড়ে উঠবে।

একসঙ্গে সময় কাটানো: সময় পেলে ননদ-ভাবি বেরিয়ে পরুন। শপিং বা কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে বা আত্মীয় বন্ধুর বাড়িতে একসঙ্গে যান। বিকেলে চা-পান করার সময় বা রাতে টিভি দেখার সময়ও একসঙ্গে থাকুন। হয়তো ননদের পরীক্ষা, তিনি পড়া নিয়ে ব্যস্ত তো ভাবিই চা-নাস্তা নিয়ে চলে যান ননদের ঘরে।

মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে: কখনোই নিজের মতামত অন্যের ওপর চাপিয়ে দেবেন না। যদি ননদ কোনো বিষয়ে তার মতামত দেয় তবে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করুন। সে যেন ভাই ও ভাবির সংসারেও নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে থাকতে হলে নিজেদের সহ্য এবং ধৈর্য দুটোই বাড়াতে হবে।

ননদ, বরেরও নিশ্চয় খুব আদরের বোন। আর বিয়ের পর ভাইয়ের কাছে ভাবির গুরুত্ব কিন্তু অন্য অনেকের চেয়েই বেশি। তাই ননদ-ভাবি নিজেদের স্বার্থেই বন্ধুত্ব গড়ে ভালো থাকুন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।