ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০০ জিলকদ ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

বজ্রপাতের সময় করণীয়-সতর্কতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৫৩, এপ্রিল ২৮, ২০২৫
বজ্রপাতের সময় করণীয়-সতর্কতা বজ্রপাত থেকে বাঁচতে সচেতনতার বিকল্প নেই।

আমাদের দেশে বজ্রপাত একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।  সোমবার (২৮ এপ্রিল) দেশের পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এর মধ্যে কুমিল্লায় চারজন, কিশোরগঞ্জে তিনজন, নেত্রকোনায় দুই, চাঁদপুর ও হবিগঞ্জে একজন করে। বজ্রপাত থেকে বাঁচতে সচেতনতার বিকল্প নেই। জেনে নিন বজ্রপাতের সময় করণীয়-সতর্কতা:

* হঠাৎ বজ্রঝড় শুরু হলো তখন বাইরে অবস্থান করবেন না। যদি জরুরি কাজে ঘরের বাইরেও থাকেন তাহলে অবশ্যই নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।

* গভীর ও উলম্ব আকৃতির মেঘ দেখলেই বুঝবেন বজ্রঝড় হতে পারে। যদি জরুরি প্রয়োজন থাকেই তাহলে রাবারের জুতা পরে বেরোবেন।

* গ্রামের মাঠে অবস্থান করলে পায়ের আঙুলে ভর দিয়ে দাঁড়ান। তারপর কানে আঙুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসুন। বজ্রপাতের সময় এভাবে নিজেকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা অনেক আগে থেকেই প্রচলিত।

* যদি আপনার ভবনে বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা না থাকে তাহলে বজ্রঝড়ের সময় সবাই আলাদা আলাদা কক্ষে বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করুন।

* বজ্রপাতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে যদি আক্রান্ত হন তাহলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। বজ্রপাতে আক্রান্ত হলেই সবাই তাৎক্ষণিকভাবে মারা যায় এমন না। তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। বজ্রপাতে কেউ আহত হলে ওই ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালান।  

বজ্রপাতের সময়ে সতর্কতামূলক কয়েকটি পরামর্শ

* ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে কোনো অবস্থাতেই খোলা বা উঁচু স্থানে থাকা যাবে না। সবচেয়ে ভালো হয় কোনো একটি পাকা দালানের নিচে আশ্রয় নিতে পারলে।

* বৈদ্যুতিক খুঁটি ও খোলা স্থানে বিচ্ছিন্ন যাত্রী ছাউনি, তালগাছ বা বড় গাছগুলোতে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই ওই স্থানে আশ্রয় নেবেন না।

* বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি থাকবেন না। জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভেতর থাকুন।

* বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ স্পর্শ করবেন না। এমনকি ল্যান্ড লাইন টেলিফোনও স্পর্শ করবেন না। বজ্রপাতের সময় এগুলো স্পর্শ করেও অনেক মানুষ আহত হয়েছে।

* বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। টিভি, ফ্রিজ বন্ধ করা থাকলেও ধরবেন না। বজ্রপাতের আভাস পেলে আগেই এগুলোর প্লাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করুন।

* বজ্রপাতের সময় গাড়ির ভেতরে থাকলে সম্ভব হলে গাড়িটি নিয়ে কোনো কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন। গাড়ির ভেতরের ধাতব বস্তু স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। গাড়ির কাচেও হাত দেবেন না।

* বজ্রপাতের সময় ধানক্ষেত বা বড় মাঠে থাকলে তাড়াতাড়ি নিচু হয়ে যান। বাড়ির ছাদ বা উঁচু কোনো স্থানে থাকলে দ্রুত সেখান থেকে নেমে যান।

* বজ্রপাতের সময় আপনি যদি ছোট কোনো পুকুরে সাঁতার কাটেন বা জলাবদ্ধ স্থানে থাকেন তাহলে সেখান থেকে সরে পড়ুন। পানি খুব বেশি বিদ্যুৎ পরিবাহী।

* বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক। এ সময় বিদ্যুৎ অপরিবাহী রাবারের জুতা সবচেয়ে নিরাপদ।

* আপনার বাড়িতে বজ্রপাত থেকে নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। এজন্য আর্থিং সংযুক্ত রড বাড়িতে স্থাপন করতে হবে। এক্ষেত্রে দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ নিতে হবে। ভুলভাবে স্থাপিত রড বজ্রপাতের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।

* বজ্রপাতের সময় আশপাশের মানুষের খবর রাখুন। কেউ আহত হলে বৈদ্যুতিক শকে আহতদের মতো করেই চিকিৎসা করতে হবে। প্রয়োজনে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। একইসঙ্গে বজ্রপাতে আহত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এ বিষয়ে প্রাথমিক চিকিৎসায় প্রশিক্ষণ নিয়ে রাখুন।

এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।