ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৭ সফর ১৪৪৭

লাইফস্টাইল

পরনিন্দার অভ্যাস কেন ক্ষতিকারক?

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯:০৯, জুন ১৪, ২০২৫
পরনিন্দার অভ্যাস কেন ক্ষতিকারক? পরনিন্দা ব্যাভিচারের চেয়েও জঘন্যতম গুনাহ।

অফিসে ফিসফিসানি বা বন্ধুদের মধ্যে হইহুল্লোড়, যেকোনো পরিস্থিতিতেই অনুপস্থিত ব্যক্তিকে নিয়ে দু’-চার কথা না বললে দিন সম্পূর্ণ হয় না। পরনিন্দা-পরচর্চায় প্রাণের আরাম।

তাই না? ভেবে দেখুন তো, কোনো ব্যক্তির বিষয়ে গোপনে কথা বলার সময়ে আপনার মনে এ ধরনের কিছু চলে কি?

নিন্দা করলে অন্য বন্ধু বা সহকর্মীর কাছে আমার মূল্য বাড়বে। আমি সবার মধ্যমণি হয়ে উঠব।

অন্যের বিষয়ে গোপন খবর দিতে পারলে, বাকিরা আমায় ভরসা করবে।

নিন্দামন্দ করলে বাকিদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক দৃঢ় হবে।

আমার রাগ হচ্ছে, তাই নিন্দা করে বাকিদের সামনেও তার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে হবে।

অনেক সময়ে এমন হতেই পারে, কোনো বন্ধু বা সহপাঠী আপনার সঙ্গে খারাপ কিছু করেছেন, তাই সেটি বাকিদের কাছে বলে আপনি শান্তি পাচ্ছেন। কিন্তু তা ছাড়া যদি বাকি সম্ভাবনার সঙ্গে আপনার মনোভাব মিলে যায়, তা হলে কিন্তু সেটি আর স্বাস্থ্যকর নয়। হালকা চালে কখনও-সখনও পরের বিষয়ে কথা বলা ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু নিন্দা বা চর্চার অভ্যাস যদি প্রাত্যহিক হয়, তা হলে সেটি ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে পারে। নিজের জন্যেও, অন্যের জন্যেও।  

নিন্দার অভ্যাস কেন ক্ষতিকারক?

কারও অনুপস্থিতিতে এমন কিছু বলছেন কি, যাতে সেই ব্যক্তির ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে? এই অভ্যাস কিন্তু আদপেই ভালো নয়। নিয়মিত এক ঘটনা ঘটতে থাকলে, উল্টে আপনার নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে বাকি বন্ধুদের বা সহকর্মীদের কাছে। তা ছাড়া সম্পর্কগুলোর মধ্যে ভরসা কমে যেতে থাকবে।  

মনোবিদ বলছেন, বিশ্বাস ভেঙে গেলে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। তা ছাড়া যে ব্যক্তির সম্পর্কে কথা বলা হচ্ছে, সেই ব্যক্তির বিষয়ে অন্যদের মনে খারাপ ধারণা তৈরি হয়ে যায়। ফলে তার ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার দায় কিন্তু সেই ব্যক্তির, যিনি নিন্দা করছেন। তবে শুধু সম্পর্কের ক্ষেত্রে বা অন্যের ক্ষেত্রে নয়, নিজের জন্যও এই অভ্যাস অত্যন্ত ক্ষতিকারক। যিনি নিন্দা করতে ভালবাসেন, তার মানসিক প্রশান্তির সুযোগই নেই। সর্ব ক্ষণের চিন্তা, যদি তার বলা কথাগুলি অন্য কেউ জেনে যায়! ফলে সারা ক্ষণ উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটে তাদের। এর থেকে অ্যাজাইটির সমস্যা তৈরি হতে পারে। তা ছাড়া তার সম্মানহানি হওয়ার ঝুঁকি থাকে অনেক ক্ষেত্রেই।

পাঁচটি উপায়ে এ অভ্যাস দূর করুন

পাঁচটি উপায়ে এই অভ্যাস কাটিয়ে বেরোনোর পরামর্শ দিচ্ছেন মনোবিদ।

ধারণা বা অনুমানের ভিত্তিতে কথা না বলে সত্যিটা জেনে নেওয়া উচিত। সত্যি জানার পর আলোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু অনুমানের ভিত্তিতে নিন্দা করা উচিত নয়।

অন্যের বিষয়ে কোনো কথা বলার সময়ে নিজেকে তার জায়গায় বসিয়ে দেখবেন। প্রথমেই খারাপ না ভেবে, সমব্যথী হওয়ার চেষ্টা করুন।

নিন্দা করার আগের মুহূর্তে মনে করবেন, যাকে নিয়ে বলছেন, সেই ব্যক্তি সামনেই আছেন। এর ফলে যা খুশি তা-ই বলা থেকে বিরত থাকবেন।

নিন্দা করার সময়ে চেষ্টা করবেন, যাতে খুব ব্যক্তিগত কথা সবাইকে না বলেন। নয়তো আপনাকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করবে সবাই।

সবশেষে বলা ভালো, কারও অনুপস্থিতিতে তার ব্যাপারে প্রশংসা ছাড়া আর কিছু না বলাই উচিত।

সূত্র: আনন্দবাজার

এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।