ঘড়িতে অ্যালার্ম বেজে ওঠে। ক্লান্ত চোখে ফোন হাতে নিই, ঘুম ভাঙে না, মাথায় চিন্তার পাহাড়।
আসলে দিন ভালো কাটানোর সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি লুকিয়ে থাকে দিনের শুরুতে। আর তাই সময় এসেছে নিজেকে বলার—সকালটা শুরু হোক নিজের মতো করে।
কেন নিজের মতো করে সকাল শুরু করা জরুরি?
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, যাঁরা দিনের শুরুটা আত্মকেন্দ্রিকভাবে, মানে নিজের ইচ্ছা, অভ্যাস, বা মনের আরামের জায়গা থেকে শুরু করেন—তাঁরা তুলনামূলকভাবে কম উদ্বিগ্ন হন, সিদ্ধান্ত নিতে দক্ষ হন, এমনকি সম্পর্কেও বেশি স্থিতিশীল হন।
অন্যদিকে, দিন শুরুতেই যদি মোবাইল স্ক্রল, অফিসের চিন্তা, বা পরিবারিক দায়িত্বে জড়িয়ে পড়তে হয়, তখন মস্তিষ্ক 'রিঅ্যাকশন মোড'-এ চলে যায়। আপনি তখন নিজের সময়কে নিয়ন্ত্রণ করছেন না—সময় আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
নিজের মতো করে সকাল শুরু করার ৫টি সহজ উপায়
১. ফোন নয়, প্রকৃতি হোক প্রথম দেখা
ঘুম থেকে উঠে প্রথম ১৫ মিনিট যেন কোনো স্ক্রিনে চোখ না পড়ে। জানালা খুলে গাছপালা দেখুন, বারান্দায় দাঁড়িয়ে পাখির ডাক শুনুন, অথবা শুধু কয়েকটা গভীর নিঃশ্বাস নিন। এটাই আপনার ‘মাইন্ডফুল মর্নিং’।
২. নিজেকে জিজ্ঞেস করুন—আজ আমি কেমন আছি?
নিজের মনের সঙ্গে এক মিনিট কথা বলুন। কোনো প্রত্যাশা ছাড়াই। শুধু অনুভব করুন—আপনার শরীর কী বলছে, মনের ভেতরে কোন শব্দটা বেশি জোরে বাজছে।
৩. এক কাপ চা বা কফিতে দিন শুরু করুন, কিন্তু ধীরে
তাড়াহুড়া করে নয়—নিজের পছন্দের কাপে, প্রিয় বারান্দায় বসে, এক কাপ চায়ের ধোঁয়ার সঙ্গে কয়েকটা নিঃশ্বাস ভাগ করে নিন।
৪. ৫ মিনিট কিছু লিখুন—নিজের জন্য
দিনের উদ্দেশ্য, ভাবনা, অথবা শুধু আবোলতাবোল যা মনে আসে—লিখে ফেলুন। এটি আপনার ভেতরের অগোছালো ভাবনাগুলো গুছিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
৫. একটু শরীরচর্চা, একটু ধ্যান
এমনকি ৩ মিনিট হাত-পা ছড়িয়ে স্ট্রেচ করলেও শরীরে একধরনের আলোড়ন আসে। আর ২ মিনিট চোখ বন্ধ করে বসলে মস্তিষ্ক শান্ত হয়। মিলিয়ে দেখুন, ৫ মিনিটেই আপনি হয়ে উঠতে পারেন নিজে নিজেই অনুপ্রাণিত।
আপনি দিনটাকে যেভাবে শুরু করেন, সেটাই বলে দেয় বাকিটা কেমন যাবে।
জীবনটা এমনিতেই নানা চাপে ভরা। তবু প্রতিদিন সকাল এক নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসে। এই সকাল আপনার—তাই তাকে অন্যের নিয়মে নয়, নিজের মতো করে শুরু করুন। আপনি যখন নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকবেন, তখন জীবনও আপনার ছন্দে চলতে শিখবে।
আরএইচ