ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

ইমপ্রেস টেলিফিল্মের চলচ্চিত্র সংগ্রহ কার্যক্রম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১০

আশীর্বাদ চলচ্চিত্রের নন্দিত ৪টি চলচ্চিত্রের ‘স্বত্ব’ গ্রহণ করেছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড। এই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে শুরু হলো ইমপ্রেস টেলিফিল্মের চলচ্চিত্র সংগ্রহ কার্যক্রম।

আশীর্বাদ চলচ্চিত্রের এই ৪টি ছবি হচ্ছে - ঋতিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, গৌতম ঘোষের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, অনুপ সিং এর ‘দি নেইম অব এ রিভার’ এবং বাসু চ্যাটার্জীর ‘হঠাৎ বৃষ্টি’।

আশীর্বাদ চলচ্চিত্রের ৪টি চলচ্চিত্রের স্বত্ব গ্রহণ উপলে ০৫ আগস্ট বেলা ১২টায় এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় চ্যানেল আই ভবনে। স্বত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, আশীর্বাদ চলচ্চিত্রর কর্ণধার হাবিবুর রহমান খান এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা গৌতম ঘোষ। এ সময় ফরিদুর রেজা সাগরের হাতে ছবিগুলোর মাস্টার কপি তুলে দেন হাবিবুর রহমান খান ও গৌতম ঘোষ।

আশীর্বাদ চলচ্চিত্রের ৪টি ছবির প্রচার ন্বত্ব গ্রহণের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, বানিজ্যিক উদ্দেশ্যেই প্রতিটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়।   আমরা জানি সব কিছুর পেছনে রয়েছে টাকা। কিন্তু আজকের বিষয়টি ভিন্ন। এই সময়টুকু আমার কাছে শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালোবাসার। যে ৪টি ছবির প্রচার স্বত্ব ইমপ্রেস গ্রহণ করছে তার শিল্প মূল্য অপরিমেয়। যা আমাদের শিল্প-সংস্কৃতির পরিচয় বহন করছে। আমরা সেই স্বর্ণ যুগের দর্শক নন্দিত ছবিগুলো এ সময়ের দর্শকদের কাছে পৌছে দেয়ার জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।

ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান থেকে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে মুক্তি দেয়া হয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক চলচ্চিত্র। এই প্রতিষ্ঠানটি গত ১০ বছরে প্রযোজনা ও পরিবেশনা করেছে ৫৬টি চলচ্চিত্র। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ও পরিবেশিত বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই দেশে বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। পেয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নানান সম্মাননা ও পুরস্কার। ছবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শাস্তি, সুভা, কাল সকালে, স্বপ্নডানা, বৃত্তের বাইরে, শ্যামল ছায়া, মেঘের পরে মেঘ, কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি, জয়যাত্রা, আমার আছে জল, দারুচিনি দ্বীপ, কীর্তনখোলা, মেড ইন বাংলাদেশ, রূপান্তর, থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নম্বর, গহীনে শব্দ প্রভৃতি।

স্বত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা গৌতম ঘোষ। তিনি বলেন, আমার খুব ভালো লাগছে এ অনুষ্ঠানে আসতে পেরে। বাংলাদেশে আসলেই আমার সেই ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ ছবি তৈরির স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভাসে। তবে আমি অবাক হচ্ছি ইমপ্রেসের এতগুলো ছবির কথা শুনে। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই এরকম একটি উদ্যোগের জন্য। কিছু সিনেমা আছে যা একটি অঞ্চলের শিল্প-সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। এরকমই ৪টি ছবি ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে পৌছে দেয়ার উদ্দেশ্যে স্বত্ব গ্রহণের মাধ্যমে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম এদেশে এক ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করতে চলেছে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর-এর এক প্রশ্নের জবাবে গৌতম ঘোষ বলেন, ফকির লালনের জীবনী অবলম্বনে আমার পরিচালনায় নির্মিত ‘মনের মানুষ’ ছবির আনুষাঙ্গিক কিছু কাজের জন্য আমি কয়েকদিন ঢাকা থাকবো। এ দেশে আমার প্রিয় বেশ কজন মানুষ আছেন। তাদের মধ্যে রাইসুল ইসলাম আসাদ ও চম্পা অন্যতম। আমার ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ ছবিটির সাফল্যের পেছনে এই দুই অভিনয়শিল্পীর রয়েছে বিশেষ অবদান। প্রতিবার ঢাকা আসলেই তাদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছে। তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাকে আজ আমি ভিন্ন দেশের মানুষ হতে পারি। কিন্তু আমার সাংস্কৃতিক পরিচয় আমি বাঙালী। আমার রক্তে আমি বাংলা সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহন করছি। বাংলাদেশই হলো বাংলা সংস্কৃতি ধারণ, সংরক্ষণ ও অগ্রসর করার মূলধারা। তাই মানসিকভাবে আমি এখানকারই বাসিন্দা।

বাংলাদেশে চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিবেশনার ক্ষেত্রে আশীর্বাদ চলচ্চিত্র একটি বড় ব্যানার। এ দেশের বহু দর্শক নন্দিত চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিবেশনরা দায়িত্ব পালন করে চলেছে এই  সংস্থা। এই প্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকটি ছবি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তিসহ আন্তর্জাতিকভাবে সুনাম অর্জন করেছে। আশির্বাদ চলচ্চিত্রের কর্ণধার হাবিবুর রহমান খান তার বক্তব্যে বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি ছবি আমি নিঃশর্তভাবে ফরিদুর রেজা সাগরের হাতে তুলে দিয়ে ইমপ্রেসের চলচ্চিত্র ভান্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস এতে ইমপ্রেস অনুপ্রাণিত হয়ে শিল্পমান সম্পন্ন ছবি সংগ্রহে সচেষ্ট হবে। অতীত ও আজকের চলচ্চিত্রকে তারা পৌছে দিবে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে।

ইমপ্রেস টেলিফিল্ম সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের দর্শক নন্দিত ও শিল্পমান সমৃদ্ধ আরো বহু ছবির প্রচার স্বত্ব সংগ্রহের জন্য তারা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আগামীতে এসব ছবি নিয়ে তাদের উৎসব আয়োজনের পরিকল্পনা আছে। আমাদের শিল্প-সংস্কৃতির পরিচয় বহনকারী এসব চলচ্চিত্র বিভিন্ন সময় চ্যানেল আইতে নিয়মিত প্রদর্শণ করা হবে।

বাংলাদশ সময় ১৫৩০, আগস্ট ৫, ২০০২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।