ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

অভিনয়ে উত্তরাধিকার

বিপুল হাসান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১১

হলিউড ও বলিউডে প্রায়ই দেখা যায়, তারকা সন্তানেরা শোবিজে পায় বাড়তি মনোযোগ। বাবা-মায়ের দেখানো পথ ধরে অনেক সন্তানই এগিয়ে যায়, পৌঁছে যায় লাইম লাইটে।

তবে উত্তরাধিকার সূত্রেই শুধু সাফল্যের পায়রার নাগাল পাওয়া যায় না, এজন্য নিজেরও থাকতে হয় মেধা আর নিষ্ঠা। আমাদের শোবিজের বিভিন্ন শাখায় শিল্পীর উত্তরসূরি হয়ে এসেছেন বেশ কজন তারকা। এমনই কজনকে নিয়ে বাংলানিউজের ধারাবাহিক আয়োজন, আজ থাকছে অভিনয়শিল্পীদের গল্প।

সুবর্ণা মুস্তাফা

প্রয়াত অভিনেতা ও আবৃত্তিকার গোলাম মুস্তাফার কন্যা সুবর্ণা মুস্তাফা। মঞ্চ, বেতার, টিভি ও চলচ্চিত্র প্রতিটি মাধ্যমেই গোলাম মুস্তাফা নিজেকে মেলে ধরেছিলেন। ‘রাজধানীর বুকে’ ছবির মাধ্যমে গোলাম মুস্তাফা চলচ্চিত্রে আসেন ভিলেন হিসেবে। পরে নায়ক ও চরিত্রাভিনেতা হিসেবে অভিনয় করেন প্রায় দেড়শ ছবিতে। গোলাম মুস্তাফা বিয়ে করেন অভিনেত্রী হোসনে আরাকে। তাদেরই যোগ্য সন্তান সুবর্ণা মুস্তাফা। বাবার মতোই অভিনয়ের প্রতিটি শাখায় হেঁটেছেন। নিজেকে নিয়ে গেছেন জনপ্রিয়তার শিখরে। টিভিনাটকে সমসাময়িক অভিনেত্রীদের মাঝে তিনিই হলেন সবচেয়ে সফল।

‘ঘুড্ডি’ ছবির মধ্য দিয়ে সুবর্ণা চলচ্চিত্রে আসেন। অভিনয় করেন ‘নয়নের আলো’, ‘লাল সবুজের পালা’, ‘সুরুজ মিঞা’, ‘নতুন বউ’, ‘ফুলের মালা’ প্রভৃতি ছবিতে। তবে মঞ্চ ও টিভিনাটকের সাফল্যের মতো চলচ্চিত্রে প্রতিষ্ঠা পাননি সুবর্ণা মুস্তাফা।

বাবা-মায়ের পথ ধরে অভিনয়ে আসা প্রসঙ্গে সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, জন্মের পর থেকেই বাবাকে অভিনয় করতে দেখে আসছি। মা অবশ্য আমার জন্মের আগেই অভিনয় ছেড়ে দেন। অভিনয়ে এসেছি বাবার অনুপ্রেরণায়। বাবার কাছে লোকজন আসতেন যারা আসতেন, তারা সিনেমা-নাটকের লোক। তারা ছোটবেলা থেকেই আমাকে আদর করে বলতেন, তুমি একদিন বড় অভিনেত্রী হবে। জানি না, বড় অভিনেত্রী হতে পেরেছি কিনা, এটুকুই শুধু বলবো অভিনয়ে আছি, অভিনয়ে থাকবো।

বাপ্পারাজ ও সম্রাট

নায়করাজ রাজ্জাকের দুই ছেলে বাপ্পারাজ আর সম্রাট বাবার হাত ধরে চলচ্চিত্রে আসেন। বড়ছেলে বাপ্পারাজকে নিজের প্রযোজনা-পরিচালনায় নির্মিত ছবি ‘চাপা ডাঙ্গার বউ’-এর মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আনেন রাজ্জাক। একইভাবে তিনি সম্রাটকে চলচ্চিত্রে আনেন ‘কোটি টাকার ফকির’ ছবির মাধ্যমে। তবে নায়করাজের সাফল্যের ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারেননি তারা।

বাপ্পারাজ যেমন ‘রাজ্জাকের ছেলে’ পরিচয় থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি, সম্রাটও এখন পর্যন্ত নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। দুই ছেলে সম্পর্কে নায়করাজ বলেন, চলচ্চিত্রে এগিয়ে যেতে হলে যা যা দরকার বাপ্পা আর সম্রাটের মধ্যে তার সবই আছে। আমার সন্তান হিসেবে বাড়তি কোনো সুযোগ তারা পাক, তা আমি কখনো চাইনি। আমার হাত ধরে তাদের অভিষেক হয়েছে, এটুকুই যথেষ্ট। বাকিটুকু নির্ভর করছে তাদের ওপরই।

চলচ্চিত্রে বড় ভাই বাপ্পারাজের শক্ত অবস্থান গড়ে না উঠার কারণ ব্যাখ্যা করে সম্রাট বললেন, আসলে বড়ভাই যখন অভিনয় করা শুরু করেন তখন তো বাবাও নায়ক হিসেবে অভিনয় করতেন। এ কারণে লোকজন তাকে রাজ্জাকের ছেলে হিসেবেই গ্রহণ করেছে। আমিও রাজ্জাকের ছেলে। নায়করাজ রাজ্জাকের ছেলে পরিচয়ে আমি গর্বিত। তবে এখন আব্বা সেইভাবে চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন না। মাঝেমধ্যে চরিত্রভিনেতা হিসেবে অভিনয় করছেন। কাজেই আমাকে নিজের যোগ্যতা দিয়েই নিজের পরিচয়ে চলচ্চিত্রে জায়গা করে নিতে হবে। নায়করাজ রাজ্জাকের ছেলে, এই পরিচয় আমার জন্য প্লাস পয়েন্ট। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।

অরুণা বিশ্বাস

যাত্রানট অমলেন্দু বিশ্বাসের মেয়ে অরুণা বিশ্বাস। মা জ্যোৎস্না বিশ্বাসও একজন খ্যাতিমান যাত্রাশিল্পী। অরুণা বিশ্বাসের অভিনয়ে অভিষেক ছোটপর্দায়। ১৯৮৬ সালে ‘চাপা ডাঙ্গার বউ’ ছবির মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে বেশ কিছু ছবিতে অভিনয়ের পর আমেরিকা চলে যান। দেশে ফিরে আর চলচ্চিত্রে কাজ করেননি। টিভিনাটকে নিয়মিত অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন। এছাড়া বাবা অমলেন্দু বিশ্বাসের গড়ে তোলা যাত্রাদল চারণ নাট্যগোষ্ঠী সাংগঠনিকভাবে পরিচালনা কাজটিও করে চলেছেন।

অভিনয়ে আসার পেছনে পারিবারিক আবহকেই প্রধান কারণ বলে অরুণা বিশ্বাস মনে করেন। তিনি বলেন, আমি অমলেন্দু বিশ্বাস আর জ্যোৎস্না বিশ্বাসের সন্তান বলেই আমার রক্তে
অভিনয়টা ঢুকে গেছে। জন্মের পর থেকে বাবা-মাকে দেখেছি শিল্পের পেছনে ছুটে বেড়াতে, শিল্পই ছিল তাদের ঘর-সংসার। কাজেই তাদের সন্তান হিসেবে আমার শিল্পী হওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না।

কাজী মারুফ

চলচ্চিত্র পরিচালক কাজী হায়াতের সন্তান কাজী মারুফ। হাতে ধরে মারুফকে নায়ক বানিয়েছেন তার বাবা। শুরুর দিকে কাজী মারুফ শুধু তার বাবার ছবিতে কাজ করলেও এখন কাজ করছেন অন্য পরিচালকদের ছবিতেও। কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘ইতিহাস’ ছবিতে অভিনয় করে দর্শকদের নজরে আসেন মারুফ। এখন তার হাতে রয়েছে একডজনের বেশি ছবি। কাজী মারুফ অভিনীত সর্বশেষ তিনটি ছবিই ব্যবসা সফল হওয়ায় তাকে নিয়ে নির্মাতারা এখন নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন।

চলচ্চিত্রে আসা প্রসঙ্গে কাজী মারুফ বললেন, আমি যে কখনো চলচ্চিত্রে আসব তা ছিল আমার নিজের ভাবনার বাইরে। আমাকে নায়ক বানাবার পুরো কৃতিত্বই আমার বাবার । একদিন মধ্যরাতে তিনি আমাকে ঘুম থেকে টেনে তুলে বললেন, তোকে কালকে সকালে আমার সঙ্গে এফডিসি যেতে হবে। তোকে ছবিতে অভিনয় করতে হবে। ভাবলাম, হয়তো বাবা কথার কথা বলেছেন। কিন্তু না বাবার চাপে পড়ে আমাকে পরদিন এফডিসি যেতে হলো এবং কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই ক্যামেরা সামনে দাঁড়াতে হলো। এই হলো আমার চলচ্চিত্রে আসার গল্প। চলচ্চিত্রে আসার পর দেখলাম, নানাদিকে আমার ঘাটতি রয়ে গেছে। এখন সেই ঘাটতিগুলো ঢাকার চেষ্টা করছি। নাচ শিখেছি, ফাইটিং শিখেছি। মাথায় আছে বাবার হুকুম, আমাকে আরো বহুদূর যেতে হবে।

বিপাশা হায়াত

অভিনেতা আবুল হায়াতের বড় মেয়ে বিপাশা হায়াত। তবে নিজের অভিনয় মেধা দিয়েই তিনি পেয়েছেন জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি। মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্র তিন মাধ্যমেই অভিনয় করেছেন বিপাশা। নব্বইয়ের দশকে ছোটপর্দা নাটকে তাকে ঘিরে তৈরি হয় ক্রেজ। হুমায়ূন আহমেদের ‘আগুনের পরশমণি’ ছবিতে করেন অসাধারণ অভিনয়। অভিনেতা-নির্মাতা তৌকীর আহমেদের সঙ্গে বিয়ের পর ঘর-সংসারকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী। বর্তমানে নাটক রচনায় বেশি জোর দিচ্ছেন, কমিয়ে দিয়েছেন অভিনয়। পাশাপাশি চারুকলায় পড়াশোনা করা বিপাশা চালিয়ে যাচ্ছেন ছবি আঁকা।

বাবা আবুল হায়াতের উত্তরাধিকার হিসেবে অভিনয়ে আসা প্রসঙ্গে বিপাশা হায়াত বললেন, এটা ঠিক বাবার প্রেরণাতেই আমি অভিনয়ে আসি। আমি পারবো কিনা, এ বিষয়ে নিজের মধ্যেই ছিল দ্বিধা। আমাকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছেন আমার বাবা। বাবার অভিনয় ছোটবেলা থেকেই খুব মন দিয়ে দেখতাম। বেশির ভাগ সময় বাবার অভিনয়ের সমালোচনা করতাম। আমি অভিনয় শুরু করার পর ভাবলাম, এবার বাবা আমার অভিনয়ের সমালোচনা করে শোধ নেবেন। কিন্তু তার কাছ থেকে প্রশংসা ছাড়া আর কিছু পাই নি। বাবার মুখের প্রশংসাই ছিল আমার অনুপ্রেরণা।


ত্রপা মজুমদার

নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার ও অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদারের মেয়ে ত্রপা মজুমদার। বাবা-মায়ের পথ ধরে ত্রপা মজুমদারও অভিনয়ে এসেছেন। টিভিনাটকে তাকে তুলনামূলক কম দেখা গেলেও মঞ্চে নিয়মিত অভিনয় করছেন। থিয়েটার নাট্যদলের একাধিক প্রযোজনার নির্দেশনাও দিয়েছেন ত্রপা। লম্বা বিরতির পর ত্রপা মজুমদারকে বর্তমানে এটিএন বাংলার  ‘পৌষ ফাগুনের পালা’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন।

অভিনয়ে আসা প্রসঙ্গে ত্রপা মজুমদার বললেন, বাবা-মা আমাদের পরিবারে যতোটুকু সময় দিতেন তার চেয়ে অনেক বেশি সময় দিতেন থিয়েটারে। ছোটবেলা থেকেই তো বাবা-মার সঙ্গে আমার থিয়েটারে নিয়মিত যাতায়াত। তখন থেকেই মনে মনে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করি, আমাকেও থিয়েটার করতে হবে। থিয়েটারে আসার পর মনে হলো, থিয়েটারে যখন অভিনয় করছি, তখন টিভি নাটকেও অভিনয় করা যেতে পারে। এভাবেই টিভি নাটকে অভিনয়। উভয়ক্ষেত্রেই বাবা-মা আমার অনুপ্রেরণা উৎস। তবে এটাও ঠিক যে, আমি চেয়েছি বলেই অভিনয়ে আসা। যদি অভিনয় করতে না চাইতাম তাহলে বাবা-মা কোনো দিন জোর করতেন না।

জিতু আহসান

টিভিনাটক ও চলচ্চিত্রের প্রয়াত অভিনেতা সৈয়দ আহসান আলী সিডনির ছেলে জিতু আহসান। বাবার মাধ্যমেই তার অভিনয়ে আসা। এ বিষয়ে জিতু আহসান বলেন, বাবা মারা যাবার কিছুদিন আগে আমাকে কাছে ডাকেন। বললেন, আমি আজীবন চেয়েছি আমার সন্তান যেন আমার মতোই অভিনেতা হয়। তুমি যদি অভিনয় করতে না চাও আমি জোর করবো না। তবে অভিনয় করলে আমি খুশি হবো। বাবার এই কথার পর অভিনয়ে না এসে আমার উপায় ছিল না।

জিতু আহসান জানালেন, এমবিএ পাস করার পর তার ইচ্ছে ছিল কর্পোরেট লেভেলে চাকরির। কিন্তু বাবার চাওয়াকে পূরণ করার জন্যই তাকে অভিনেতা হতে হয়েছে। প্রয়াত নাট্যব্যক্তিত্ব আবদুল্লাহ আল মামুন তখন ‘জোয়ার ভাটা’ নামে একটি ডেইলি সোপ নির্মাণের পরিকল্পনা করছিলেন। বাবা আহসান আলী সিডনি জিতু আহসানকে নিয়ে গেলেন তার কাছে। আবদুল্লাহ আল মামুনকে অনুরোধ করলেন, জিতু আহসানের দিকে দৃষ্টি রাখতে। ‘জোয়ার ভাটা’ ধারাবাহিকের মাধ্যমেই জিতু আহসান অভিনয়ে পদার্পণ করেন।

তনিমা হামিদ

নাটকই যে পরিবারের বন্ধন সেই পরিবারের মেয়ে অভিনয়ে না আসাটাই তো অস্বাভাবিক বিষয়। ম হামিদ আর ফাল্গুনী হামিদের মেয়ে তনিমা হামিদ অভিনয়ে এসেছেন স্বাভাবিক নিয়মেই। নাট্যচক্রের প্রধান সংগঠক ম হামিদের সঙ্গে সত্তর দশকের শেষভাগে পরিচয় হয় নাটক করতে আসা নবীন অভিনেত্রী ফাল্গুনী হামিদের। বাবা-মার প্রেম-প্রণয় আর ঘর-সংসার সবই নাটকের সূত্রেই। বাবা-মার হাত ধরে তনিমা হামিদও বোঝার বয়স থেকে নাট্যচক্রে আসা-যাওয়া করছেন। মঞ্চের পাশাপাশি একসময় টিভি নাটকেও অভিনয় শুরু করেন।

অভিনয়ে আসা প্রসঙ্গে তনিমা বললেন, যে পরিবারে আমার জন্ম সেখানে দিনের বেশির ভাগ কথাবার্তাই হতো নাটক নিয়ে। তবে মা বলতেন, তোমার যদি ইচ্ছে না করে তাহলে অভিনয়ে আসার দরকার নেই। আবার এটাও বুঝতাম আমি অভিনয়ে এলে আমার মা সবচেয়ে খুশি হবেন। আমার অবশ্য অভিনয়ে আসার ইচ্ছে ছিল। সেই ইচ্ছে থেকেই অভিনয়ে আসা।

ইরেশ যাকের

নাট্যদম্পতি আলী যাকের ও সারা যাকেরের ছেলে ইরেশ যাকের। পড়াশোনা করেছেন দেশের বাইরে। বছর চারেক আগে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরেন। হঠাৎ করেই তার মাথায় খেয়াল চাপে, বাবা-মায়ের মতো তিনিও অভিনয় করবেন। অনুমতির জন্য মা সারা যাকেরের কাছে গেলে তিনি মনে মনে খুশি হলেন। অনুমতি মিলে গেল সহজেই। এবার বাবা আলী যাকেরের কাছে গেলেন ইরেশ । আলী যাকের তাকে দিলেন কঠিন ধমক, আরে ধ্যাৎ। তুই আবার কী অভিনয় করবি? ইরেশ আর কথা বাড়াবার সাহস পেলেন না। মাকে গিয়ে বললেন, বাবা হ্যাঁ বা না কিছুই বললেন না। মা আশ্বাস দিলেন, একটা নাটকে অভিনয় করে ফেল। তোর বাবা কিছু বললে আমি দেখবো। ইরেশ যাকের অভিনয় করলেন। সেই অভিনয় দেখলেন বাবা আলী যাকের। ছেলেকে ডেকে বললেন, ভালোই তো অভিনয় করলি। লেগে থাকলে ভালো করবি। সেই থেকে অভিনয়ে ইরেশ যাকেরের লেগে থাকা।

বাবা-মায়ের পথ ধরে অভিনয়ে আসা প্রসঙ্গে ইরেশ যাকের বললেন, বাবা দুজনেই অভিনয় শিল্পী। তাহলে আমি কেনো বসে থাকবো। উনারা পারবেন আমি কেনো পারবো না? বাবা-মার দেখাদেখিই আসলে আমি অভিনয়ে চলে এসেছি। অভিনয় করতে ভালোই লাগছে।


হৃদি হক ও প্রীতি হক

নাট্যদম্পতি ড. ইনামুল হক ও লাকী ইনামের দুই মেয়ে। একজন হৃদি হক, অন্যজন প্রীতি হক। দুজনেই নাগরিক নাট্যাঙ্গনে কাজ করছেন। হৃদি হক মঞ্চের পাশাপাশি টিভিনাটকেও নিয়মিত অভিনয় করছেন। উপস্থাপনা ও নাটক পরিচালনাতেও দেখিয়েছেন দক্ষতা।   প্রীতি হক অভিনয় করছেন শুধু মঞ্চে।

যারা জন্মেই দেখেছে তাদের বাবা-মাকে অভিনেতা-অভিনেত্রী হিসেবে সারা দেশের মানুষ চেনে, তাদের অভিনয়ের প্রতি দুর্বলতা তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কীভাবে কীভাবে যে আমি অভিনয়ে এলাম, তা আমি নিজেও বলতে পারবো না। অভিনয়ে আসা প্রসঙ্গে এভাবেই বললেন হৃদি হক। তিনি জানান, বাবা-মা কখনোই কোনো কিছু তাদের উপর চাপিয়ে দেননি। নিজের ইচ্ছে ছিল বলেই অভিনয়ে আসা। হৃদি আরো বললেন, তারা দুই বোন যদি মন থেকে অভিনয়ে না আসতে চাইতো কখনোই বাবা-মা চাপ দিতেন না।


ঐন্দ্রিলা

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের মহানায়ক খ্যাত প্রয়াত বুলবুল আহমেদের মেয়ে ঐন্দ্রিলা আহমেদ। একসময় নিয়মিত তাকে মডেলিং আর টিভিনাটকে অভিনয় করতে দেখা গেছে।   ইদানীং অবশ্য খুব একটা কাজ করছেন না। বাবা বুলবুল আহমেদের অনুপ্রেরণাতেই ঐন্দ্রিলা অভিনয়ে এসেছিলেন।

বিজরী বরকতউল্লাহ

বিটিভির সাবেক প্রযোজক ও নাট্যনির্মাতা মোহাম্মদ বরকতউল্লাহ এবং নৃত্যশিল্পী জিনাত বরকতউল্লাহর মেয়ে অভিনেত্রী বিজরী বরকতুল্লাহ। বাবা-মার অনুপ্রেরণা তাকে অভিনয়ে নিয়ে এসেছে।

এ প্রসঙ্গে বিজরী বরকতউল্লাহ বলেন, বাবা সে সময় ‘কোথাও কেউ নেই’-এর মতো অনেক জনপ্রিয় নাটক নির্মাণ করেছেন। ঐসব নাটক দেখেই একসময় আমার ইচ্ছে হয় অভিনয়ে আসার। মা অবশ্য চেয়েছিলেন আমি নৃত্যশিল্পী হই। কিন্তু অভিনয়টাই আমার বেশি ভালো লাগায় আমি অভিনেত্রীই হয়ে গেলাম।

বাংলাদেশ সময় ০০৫৫, জানুয়ারি ২৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।