ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

‘আমি ভীষণ বিব্রত ও বিক্ষুব্ধ’

বিপুল হাসান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৯ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১১

পদ্মা পাড়ের হলদিয়া গ্রামে একটু আগে নেমে আসা সন্ধ্যা গাঢ় হচ্ছে। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানার ভাঙন কবলিত এ গ্রামের খলিফাবাড়ির পাশেই চলছিল চ্যানেল আইয়ের ধারাবাহিক নাটক ‘চৈতাপাগল’-এর শুটিং।

এ ইউনিটেই কাজ করছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। আমরা যখন তার মুখোমুখি হই, তখন বিদ্যুৎ চলে গেছে। শুটিং আপাতত বন্ধ। চাপা অন্ধকারেই চোখ-মুখ কালো করে বসেছিলেন জয়া। বাংলানিউজকে নিজের মানসিক অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি বললেন, আমি ভীষণ বিব্রত ও বিক্ষুব্ধ।

একটি দৈনিক পত্রিকায় গত ০৯ মার্চ বুধবার ‘ফয়সালকে ডিভোর্স দিলেন জয়া’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেদিন সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের পদ্মার পাড়ে মাহফুজ আহমেদ পরিচালিত ধারাবহিক নাটক ‘চৈতাপাগল’-এর সেটে এ বিষয়ে কথা হলো অভিনেত্রী জয়া আহসানের সঙ্গে। তিনি প্রতিবেদনটির প্রতিটি লাইন মিথ্যা দাবি করে বলেন, শিল্পীরা একপর্যায়ে হয়ে উঠেন পাবলিক প্রপার্টি। তাই বলে তার সংসার আর দাম্পত্যজীবন নিয়ে মিথ্যা প্রচারণার অধিকার কারো নেই। পুরোপুরিই বানোয়াট এই প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে এ বিষয়ে আমার সঙ্গে কোনো কথা বলা হয় নি। কিন্তু প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এ সম্পর্কে আমার মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে আমি  নাকি কিছুই বলতে চাই নি। আমি এই ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। এই প্রতিবাদ প্রকাশ করা না হলে আমি আমার পরবর্তী পদক্ষেপের কথা ভাববো।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত প্রায় ৫ মাস ধরে জয়া-ফয়সাল আলাদা আলাদাভাবে থাকছেন এবং দু`মাস আগে জয়া ফয়সালকে ডিভোর্স লেটারটি পাঠান। যা বর্তমানে আইনত কার্যকর হয়েছে। বিষয়টি পুরোপুরিই মিথ্যা বলে জানিয়েছেন জয়া আহসান।

তিনি জানান, ‘গেরিলা’ ছবির আউটডোরের কাজের জন্য কিছুদিন তাকে লোকেশনে থাকতে হয়েছে। সংসারে সেভাবে সময় দেওয়া সম্ভব হয়নি। তিলকে তাল ভেবে নেওয়ার মতোই কেউ কেউ এটাকে তাদের সেপারেশন বলে ধরে নিয়েছেন। ছবির শুটিং শেষে সংসারে মনোযোগ দিলেও মানসিক দৈন্যতার কারণে তাদের সন্দেহ রয়েই যায়। চিকিৎসার জন্য ফয়সাল দেশের বাইরে অবস্থান করার সুযোগে সম্প্রতি তারা আবারও কুৎসা রটনায় নেমেছেন।

জয়া আহসান আরো জানান, এই ভিত্তিহীন সংবাদে তার মা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। পুরান ঢাকায় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মধ্যেও বিষয়টি প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। এমন কী দেশের বাইরে অবস্থানকারী স্বামী ফয়সাল আহমেদও তার সঙ্গে রাগারাগি করেছেন। শোবিজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে জয়াকে পরামর্শ দিয়েছেন।

জয়া বলেন, এমনিতেই আমি খুব বেশি কাজ করি না। বেছে বেছে চরিত্র পছন্দ হলে তবেই অভিনয় করি। কাজ ছাড়া বাকিটা সময় সংসারে দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু এ ধরণের বানোয়াট আর মিথ্যা প্রচারণা চললে আমাকে অবশ্যই অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবতে হবে।

জয়া আহসানের সঙ্গে কথা বলার সময় লোকেশনে ছিলেন  ধারাবাহিক নাটক ‘চৈতাপাগল’-এর পরিচালক ও নাম ভূমিকার অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিল্পীর ব্যক্তিজীবন আর ঘরসংসারের সংবাদ পত্রিকার পাতায় যেতেই পারে। কারণ সাধারণ মানুষ এগুলো জানতে চায়। কিন্তু ঘরভাঙা বা ডিভোর্সের মতো সেনসেটিভ বিষয় নিয়ে লেখার আগে অবশ্যই শিল্পীর সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন। তার কাছে বিষয়টির সত্যতা অনুসন্ধান না করেই সংবাদ প্রকাশ করাটাকে আমি অনৈতিক বলে মনে করি। শিল্পী নিজেও একজন মানুষ। মিথ্যা রটনা তার মধ্যেও প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। আজকে যেমন জয়া অভিনয়ে মন দিতে পারছেন না, আমার নাটকের শুটিংয়ের গতিও তাই কমে গেছে। এতে প্রযোজনারও ব্যয় বাড়ছে।

এদিকে উল্লেখিত প্রতিবেদনে জয়া-ফয়সালের ডিভোর্সের বিষয়ে নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীর আক্ষেপের কথাও প্রকাশ করা হয়েছিল। বাংলানিউজকে চয়নিকা চৌধুরী জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তিনি কারো কাছে কোনো মন্তব্য করেননি। তার পক্ষ থেকেও দৈনিকটির কাছে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময় ০১৩০, মার্চ ১০,২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।