প্রয়াত অভিনেতা, নাট্যকার, নির্দেশক ও চলচ্চিত্র পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুনের ৬৯তম জন্মদিন ১৩ জুলাই বুধবার। বাংলাদেশের নাট্যান্দোলনের এই খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে তিন দিনব্যাপী নাট্যোৎসব।
উদ্বোধনী দিন ১৩ জুলাই বুধবার বিকাল সাড়ে ৬টায় আবদুল্লাহ আল মামুনের স্মারক বক্তৃতার মাধ্যমে উৎসব শুরু হবে। স্মারক বক্তৃতা প্রদান করবেন বিশিষ্ট শিল্প সমালোচক পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস। সন্ধ্যা সাতটায় থিয়েটারের পরিবেশনায় মঞ্চস্থ হবে আবদুল্লাহ আল মামুন রচিত ও নির্দেশিত নাটক ‘মেরাজ ফকিরের মা’।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন ২৪ জুলাই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রদর্শিত হবে থিয়েটারের আরেকটি প্রযোজনা ত্রপা মজুমদারের নির্দেশনায় ‘বালামখানা’। মিজারুল কায়েসের ভাবানুবাদে একই নাট্যদলের মঞ্চ সফল প্রযোজনা ‘মুক্তি’ মঞ্চস্থ হবে ১৫ জুলাই শুক্রবার সন্ধ্যায়। ত্রপা মজুমদারের নির্দেশনায় এ নাটকের মধ্য দিয়েই শেষ হবে আবদুল্লাহ আল মামুন স্মরণে তিন দিনের নাট্যোৎসব।
নাট্যোৎসব আয়োজন প্রসঙ্গে থিয়েটার প্রধান ও আইটিআই সভাপতি রামেন্দু মজুমদার বলেন, ইদানিং যে হারে নাট্যোৎসব হচ্ছে তাতে এভাবে উৎসব আয়োজন করার কথা চিন্তা করিনি। তবু দলের কর্মীদের উদ্দীপনায় এই উৎসব আয়োজন করা হলো। এর আগে ২০০৯ সালের ১০ থেকে ১৭ই জুলাই আমরা আবদুল্লাহ আল মামুনের রচিত নাটক নিয়ে আয়োজন করেছিলাম আট দিনব্যাপী আবদুল্লাহ আল মামুন জন্মোৎসব। এবার তার রচিত নাটকের পাশাপাশি অন্য নাট্যকারের নাটকেরও উপস্থিতি থাকছে। আগামী বছরের আয়োজনে আরও বৈচিত্র্য থাকবে বলে আশা করছি।
আবদুল্লাহ আল মামুনের জীবন ও কর্ম
১৯৪২ সালের ১৩ জুলাই জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল্লাহ আল মামুন। ১৯৬৬ সালে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে অনুষ্ঠান প্রযোজক হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৯১ সালে পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে অবসর নেন। চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রেও তিনি রেখেছেন অসামান্য মেধার ছোঁয়া। ‘সারেং বউ’, ‘সখী তুমি কার’, ‘দুই জীবন’, ‘বিহঙ্গ’, ‘পদ্মাপাড়ের দৌলতী’ প্রভৃতি ছবি আজও স্মরণীয় হয়ে আছে। তার পরিচালনায় নির্মিত ‘দুই বেয়াইয়ের কীর্তি’ ছবিটি বর্তমানে মুক্তির অপেক্ষায়।
আবদুল্লাহ আল মামুন প্রযোজিত ও পরিচালিত টিভিনাটকের সংখ্যা শতাধিক। তার কালজয়ী মঞ্চ নাটক ‘সুবচন নির্বাসনে’, ‘এখন দুঃসময়’, ‘শপথ’, ‘এখনও ক্রীতদাস’, ‘আমাদের সন্তানেরা’, ‘মেহেরজান আরেকবার’ প্রভৃতি। ধারাবাহিক টিভি নাটক নির্মাণে তিনি যুক্ত করে গেছেন নতুন ধারা। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘সংশপ্তক’, ‘শীর্ষবিন্দু’, ‘জীবন ছবি’, ‘ঘরোয়া’, ‘উত্তরাধিকার’, ‘একজনমে’ এবং বাংলাদেশের প্রথম ডেইলি সোপ ‘জোয়ার ভাটা’। মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্র তিন মাধ্যমেই তিনি অভিনয় করেছেন।
আবদুল্লাহ আল মামুন কর্মজীবনে অর্জন করেন প্রথম জাতীয় টেলিভিশন পুরস্কার, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাংলা একাডেমী পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার, থিয়েটার প্রবর্তিত মুনীর চৌধুরী সম্মাননা, একুশে পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার।
বাংলাদেশ সময় ২৩৩০, জুলাই ১২, ২০১১