ক্ষুদে গানরাজ থেকে উঠে এলেও ক্ষুদে ভাব ঝেড়ে জনপ্রিয় গায়িকা হিসেবে পড়শি উঠে এসেছেন প্রথম সারিতে। গত বছর অডিও বাজারে বাণিজ্যিক সাফল্যের দিক থেকে গায়িকাদের মধ্যে তার অ্যালবাম ছিল শীর্ষে।
এরই মধ্যে প্রায় দু’ডজন ছবির প্লে-ব্যাকে কণ্ঠ দিয়েছেন। স্টেজ-শোতেও তার পারফরম্যান্স মাতিয়ে তুলছে অডিয়েন্স। সব মিলিয়ে খুব অল্প সময়েই এই কিশোরী কন্ঠ-তারকার ক্যারিয়ারে লেগেছে বৃহস্পতির ছোঁয়া।
সামনে ঈদ, এই নিয়ে অডিওবাজারে পড়ে গেছে সাজ-সাজ রব। পড়শিও এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন রেকর্ডিংয়ের কাজে স্টুডিওতে। পৃথ্বিরাজ এবং মাহমুদ সানির সংগীতায়োজনে দু’টি মিক্সড অ্যালবামে থাকছে তার গান। আরো দুটি মিক্সড অ্যালবামে কথা আছে কণ্ঠ দেওয়ার। পাশাপাশি আরফিন রুমির একক অ্যালবামেও একটি দ্বৈত গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। তাছাড়া নিজের দ্বিতীয় একক অ্যালবামের কাজও অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন।
প্রথম অ্যালবামের সাফল্য প্রসঙ্গে পড়শি বাংলানিউজকে বলেন, `প্রথম অ্যালবামের কাজ করার আগে কেউ কেউ বলেছিলেন এত কম বয়সে অ্যালবাম না করার জন্য। তাদের ধারণা ছিল, আমার মতো কম বয়সী শিল্পীর গান কেউ শুনবে না। আমার আত্মবিশ্বাস ছিল। যত্ন নিয়ে প্রথম অ্যালবামের গানগুলো করি। আমি আনন্দিত, গানগুলো সবাই গ্রহণ করেছে। আর এ কারণে আত্মবিশ্বাসও অনেক বেড়ে গেছে। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই দ্বিতীয় একক অ্যালবামের কাজ শুরু করেছি। `
নিজের দ্বিতীয় একক অ্যালবাম সম্পর্কে তিনি বলেন, `প্রথম অ্যালবাম বের হওয়ার পর থেকেই দ্বিতীয় অ্যালবামের কাজ শুরুর জন্য অনেক অডিও কোম্পানিই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিন্তু গত কয়েক মাস চলচ্চিত্রের গান নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিলাম। তাই একক অ্যালবামের কাজ শুরু করতে দেরি হয়ে যায়। তবে বেশ কিছু মিক্সড অ্যালবামে কাজ করেছি, সামনেও আছে আরো কয়েকটি কাজ। রোজার ঈদে হয়তো একক অ্যালবাম প্রকাশ করতে পারবো না। কারণ প্রথম একক অ্যালবামটি শ্রোতারা বেশ ভালভাবে গ্রহণ করেছে। তাই আমার কাছে তাদের চাওয়াটাও স্বাভাবিকভাবেই বেশি। এ কারণেই তাড়াহুড়ো করে দ্বিতীয় অ্যালবামটি বের করতে চাই না। সময় নিয়েই কাজ করতে চাচ্ছি। বেশ ক’জন সংগীত পরিচালকের সংগীতায়োজনে এবারের অ্যালবামটির গান করছি। বৈচিত্র্যময় গান দিয়ে অ্যালবামটি সাজানোর চেষ্টা করছি। `
পড়শি জানালেন, স্টেজে গান গাইতেই তার সবচেয়ে ভালো লাগে। কারণ দর্শক-শ্রোতার প্রতিক্রিয়া এখানে সরাসরি জানা যায়। দেশ-বিদেশে বহু স্টেজ শো’তেই অংশ নিয়েছেন তিনি। তবে পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ দেওয়ার জন্য স্টেজ শো করা ইদানিং কমিয়ে দিয়েছেন। পড়শি এখন ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্লাস টেনে পড়াশোনা করছেন। `
বয়স কম হলেও পড়শির কন্ঠে চপলতা নেই , আছে মাদকতা। যার কারণে চলচ্চিত্রের প্লে¬ব্যাকে তার চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
প্লেব্যাক করা সম্পর্কে পড়শি বললেন, ‘শুরুতে চলচ্চিত্রের গান গাইতে একটু অস্বস্তি লাগত। প্রেম-ভালোবাসা, বিরহ আর রোমান্সের গান। তখন সবাই বলত, মনের ভেতর থেকে অনুভব করে রোমান্টিকভাবে গাইতে। আমি শুধু ভাবতাম, কীভাবে অনুভব করব। ভালোভাবে গান গাইতে হলে রোমান্টিকভাবে আবার গাইতে হবে কেন? এখন অবশ্য সেই অস্বস্তি আর নেই। সবকিছু অনুভব করেই কণ্ঠ দিচ্ছি গানে। `
পড়শি আরো বললেন, আমি মনে করি প্লে¬ব্যাক করলে শেখার অনেক সুযোগ থাকে। কখনো মেলোডিয়াস, কখনো লোকগান করতে হয়। এই বৈচিত্র্য বেশ ভালো লাগে। `
পথ চলা শুরু পড়শির খুব বেশি দিন আগের নয়। তবুও এতো অল্প বয়সে এগিয়েছেন অনেক দূর। তবে আত্মতুষ্টি তার মোটেও নেই। কারণ তিনি জানেন, সামনে আছে বিস্তীর্ণ পথ। এখনই তিনি পথের বাঁকে হারিয়ে যেতে রাজি নন। তাই দেখে শুনেই পথ চলছেন।
বাংলাদেশ সময় ১৭৪০, জুলাই ২৩, ২০১১