দেশীয় চলচ্চিত্রের আজকের বিপর্যস্ত অবস্থার কারণ হিসেবে অনেকেই পাইরেসিকে দায়ি করেন। সিনেমা হল থেকে গোপনে কপি করা হয় সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি।
সম্প্রতি পাইরেসি চক্রের প্রধান হোতা নোবেল ‘হায় প্রেম হায় ভালোবাসা’ ছবির প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরুকে ফোন করে জানায়, ছবির পাইরেটেড প্রিন্ট সে তৈরি করেছে। ৫ লক্ষ টাকা না দিলে সে এটা বাজারে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। প্রযোজক খোরশেদ আলম দাবি করা টাকা দিবে বলে জানালে নোবেল তা নেওয়ার জন্য ঢাকায় আসে। প্রযোজককে ২২ জুলাই সন্ধ্যার মধ্যে টাকা রেডি রাখার নির্দেশ দেয়। খোরশেদ আলম খসরু বিষয়টি র্যাবকে জানান। সন্ধ্যায় ফোনে নোবেল টাকা নিয়ে প্রযোজক খোরশেদ আলমকে খসরুকে পলওয়েল মার্কেটের পাশে সিসিলি চাইনিজ হোটেলের সামনে আসতে বলে। রাত ১১ টায় নোবেল প্রযোজকের কাছে টাকা নিতে আসলে আগেই ওত পেতে থাকা র্যাব-৩ এর একটি দল তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় নোবেলের দেহ তল্লাশি করে তার কোমরে গোঁজা অবস্থায় ০২ রাউন্ড গুলি ভর্তি ১টি বিদেশি রিভলবার পাওয়া যায়। মেজর মোঃ তরিকুল ইসলাম, পিএসসি এই অভিযানের নের্তৃত্ব দেন।
র্যাবের কাছে গ্রেফতার হওয়ার পর মোঃ বনি ইসলাম ওরফে নোবেল স্বীকার করে যে, সে বিভিন্ন ছবি কপি করার পর পরিচালক-প্রযোজকদের ফোন করে তাদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে আসছে। দাবী অনুযায়ী চাঁদা পেলে তাৎক্ষণিকভাবে ঐ ছবিটি পাইরেসি করা হয় না। কিন্তু কিছুদিন পর আবার চাঁদা দাবী করা হয়। দাবী অনুযায়ী চাঁদা না পেলে প্রমাণ হিসেবে ঐ ছবিটির একটি পাইরেটেড কপি সংশ্লিষ্ট নির্মাতা-প্রযোজকের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়া হয় এবং বাজারজাতকরণের হুমকি প্রদান করা হয়। এর পর কিছুদিন অপেক্ষা করে চাঁদা প্রদানে ব্যর্থ নির্মাতাদের ছবি সংশ্লিষ্ট চক্রের মাধ্যমে বাজারজাত করা হয়। নির্মাতা বা প্রযোজক চাঁদা প্রদান করলে তাদের মুক্তি পাওয়া ছবি যাতে কেউ পাইরেসি করতে না পারে তা সে দেখে শুনে রাখবে বলে আশস্ত করে। নতুন মুক্তিপ্রাপ্ত দেশী ছবিগুলোই তার মূল টার্গেট বলে সে জানায়।
পরে নোবেলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে র্যাব কয়েক হাজার ছবির পাইরেটেড কপি উদ্ধার করে।
বাংলাদেশ সময় ১৯১০, জুলাই ২৩, ২০১১