দীর্ঘ ৩৯ বছর পর ভারতীয় ছবি বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে। ভারতীয় ছবি সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়।
দেশীয় চলচ্চিত্রের স্বার্থে স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে ভারতীয় ছবি প্রদর্শন নিষিদ্ধ রাখা হয়। দীর্ঘদিন পর ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় ছবি আমদানি ও প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের অনুমতি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে ভারতীয় ছবি প্রবেশের বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমদানি নীতিমালার বাধানিষেধ তুলে নেয়। কিন্তু সরকারের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে দেশীয় চলচ্চিত্রের পরিচালক-প্রযোজক ও শিল্পী কলাকুশলীরা প্রবল আপত্তি জানান এবং আন্দোলন গড়ে তোলেন। চলচ্চিত্রশিল্পী, কলাকুশলী ও নির্মাতাদের এই আপত্তির মুখে সরকার ভারতীয় ছবি আমদানির ওপর পুনরায় বিধিনিষেধ আরোপ করে।
সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমদানিকারক ও প্রদর্শকরা উচ্চ আদালতে রিট আবেদন জানান। আদালতের নির্দেশে উল্লেখিত সময় যেসব ছবি আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয় সেসব ছবিকে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড ও তথ্য মন্ত্রণালয় অনাপত্তিপত্র দেয়। এই অনাপত্তিপত্রের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘জোর’, ‘সংগ্রাম’ ও ‘বদলা’ নামের তিনটি ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি করা হয়। ছবি তিনটি সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়া হয়েছে। সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেলেই এ তিনটি ছবি বাংলদেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনে বাধা-নিষেধ থাকবে না। এই তালিকায় রয়েছে আরো নয়টি ভারতীয় ছবি। এসবের মধ্যে আছে বলিউডের সুপারহিট ছবি সোলে, দিলওয়ালা দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে, দিল তো পাগল হ্যায়, কুছ কুছ হোতা হ্যায়, কাভি খুশি কাভি গম, ধুম-২, ডন, ওয়ান্টেড ও থ্রি ইডিয়টস।
ঈদ-উল-ফেতরের পর আসছে সেপ্টেম্বরে জোর’, ‘সংগ্রাম’ ও ‘বদলা’ নামের তিনটি ভারতীয় বাংলা ছবি বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য ছবিগুলোও মুক্তি পাবে। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ৩৯ বছর পর বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে ভারতীয় চলচ্চিত্র।
যদিও প্রেক্ষাগৃহে ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শনের বিরোধিতা করে আবারও আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি সহ চলচ্চিত্রাঙ্গনের কলাকুশলীদের অন্যান্য সংগঠন। কিন্তু তাদের এই বিরোধিতা উচ্চ আদালতের রায়ের পরিপন্থি হবে বলে আন্দোলনের সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যায়।
চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞ অনেকেই মনে করছেন, উল্লেখিত ছবিগুলো বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের বিষয়টি একধরণের পর্যবেক্ষণ হিসেবে গ্রহণ করেছে সংশ্লিষ্টরা। তারা দেখতে চাচ্ছে, ভারতীয় ছবিগুলো কীভাবে গ্রহণ করে বাংলাদেশের দর্শকেরা। যদি ছবিগুলো বাণিজ্যিক সাফল্যের মুখ দেখে, তবে আমদানিকারক আর পরিবেশকরা এটি নিয়মিত রাখতে গ্রহণ করবেন জোর পদক্ষেপ। এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা কি হয়, তাই এখন দেখার বিষয়।
বাংলাদেশ সময় ১৭১৫, আগস্ট ০৪, ২০১১