ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

পাহাড়ি হাতের বাহারি পিঠা

এস বাসু দাশ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১১

পিঠা আমাদের জন্য অত্যন্ত লোভনীয় খাবার। আর সেটি যদি হয় পাহাড়িদের হাতের তৈরি ভিন্ন ধরনের তাহলে তো এর মজাই আলাদা।

হয়ত এর স্বাদ আস্বাদন না করলে বিষয়টি যে কেই উপলব্ধি করতে পারবেনা।

বান্দরবান পার্বত্য জেলায় দূর-দূরান্ত থেকে এই ধরনের বাহারি পিঠা খেতে চলে আসেন অনেকে। এরই মধ্যে পাহাড়ি পিঠার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে জেলা ছাড়িয়ে অন্য জেলায়। আর এই ধরনের পিঠা বিক্রি করে অনেক আদিবাসী নারী হচ্ছে স্বাবলম্বী।

তাদের একজন আদিবাসী নারী উয়ই প্রু মার্মা (৩৯)। বয়স্ক বাবা-মাসহ ৭ জনের পরিবারকে নিয়ে জীবন নামক রেলগাড়িটা টানতে যখন হিমশিম খাচ্ছিলেন ঠিক তখনেই ঠিক করলেন কিছু একটা করবেন। আর সেই চিন্তা থেকে বান্দরবান শহরের উজানীপাড়ায় চালু করেন ভিন্নধর্মী আদিবাসী হাতের তৈরি পিঠার দোকান।

অনেকটা শূন্য হাতে যাত্রা শুরু করেন উয়ই প্রু মার্মা। এখন তার দোকানে প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার টাকার পিঠা বিক্রি হয়ে থাকে। পাটিসাপটা (অলইমু), পুলি (গুংমু), জালি (ছেতবংমু), বিনি গোল পিঠা (কং ন্যা উ),পাতা পিঠা(ফাকদ মু), ভাপা পিঠা (পপমু), বিনি রোল ( কং ইয়া লোই)সহ বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি হয় তার দোকানে। পিঠার দাম হাতের নাগালে হবার কারনে সবার মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তার পিঠা। মাত্র তিন থেকে পাচ টাকার মধ্যেই যে কেউ ইচ্ছা করলেই নিতে পারে মজার পিঠার স্বাদ। এই পিঠা কিনে নিয়ে শহরের এমপি থেকে রাজার দরবার আর বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার অতিথি আপ্যায়নের টেবিলে হাজির করা হয়। আবার অনেকে চাকরির বাজারের সোনার হরিণটি ধরতে এই পিঠাকে ব্যবহার করছে ঘুষের বিকল্প হিসাবে।

অল্পসময়ে ভালো ব্যবসায়ীর কৌশল রপ্ত করার কথা বলতে গিয়ে প্রু মার্মা বলেন, সবার সাথে ভালো ব্যবহার আর খাবারের ভালো মান নিশ্চিত করা হলে যেকোন দোকানে গ্রাহকের ভিড় থাকবে, আয়ও হবে এবং সঙ্গে পাওয়া যাবে সফলতা।

দোকানে পিঠা খেতে এসে রাজেস দাশ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সমাজে সব মেয়েরা যদি এভাবে নিজগুনে প্রতিষ্ঠিত হতেন তাহলে সংসারে অর্থাভাব বলতে কিছুই থাকতোনা।

আমাদের দেশের পিছিয়ে পড়া নারীরাই ছোট ছোট বিণিয়োগের মাধ্যমেই বড় অবদান রাখতে পারে আমাদের সমাজে, সমৃদ্ধ করতে পারে দেশের অর্থনীতি।




আমাদের পাঠক বন্ধুদের জন্য প্রু মার্মার দোকানের পাটিসাপটা পিঠা তৈরির পদ্ধতি।

উপকরণ : দুধ ৩ লিটার, চালের গুঁড়া ৩০০ গ্রাম, ময়দা ১ টেবিল চামচ, চিনি ২ কাপ, এলাচ গুড়া-১/২ চা চামচ।

প্রস্তুত প্রণালী : দুধ ঘন করে আধা কেজি হলে ১ টেবিল চামচ চালের গুঁড়া মিশিয়ে ৫ মিনিট পর ১ কাপ চিনি দিয়ে জ্বাল করে খিরসা তৈরি করে নিতে হবে।

চালের গুঁড়া ও ময়দা পানি দিয়ে খুব ভালো করে মিশ্রন তৈরি করুন। মিশ্রণ তৈরির সময় লক্ষ্য রাখতে হবে এটা যেন খুব পাতলা বা ঘন না হয়।

এবার প্যানে সামান্য তেল মেখে পাটি সাপটা বানানোর আগে মুছে নিন। প্রতিবার ১ চামচ মিশ্রণ দিয়ে প্যান ঘুরিয়ে মিশ্রণ ছড়িয়ে দিন। পিঠা তৈরির পর খিরসা দিয়ে রোল করে নিন। পাটিসাপটা পিঠা চামচ দিয়ে একটু চেপে প্যান থেকে নামিয়ে নিন।    

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।