আমরা অনেকেই জানি না সহনীয় এবং অতিদ্রুততায় দেহের সাথে দ্রবণীয় নির্দিষ্টমাত্রার ভিটামিন ডি’র অভাবে আমরা অকালে এবং অনাহুত ডায়াবেটিস টাইপ-১, হৃদরোগ, হার-মজ্জার ক্ষয়রোগ এমনকি ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারি।
মানবদেহের ব্যথা ও বেদনা নিয়ে কাজ করে আসছেন বিশ্বের বহু ডাক্তার।
যার প্রধান কাজ হচ্ছে লিভার বা যকৃতের এবং কিডনি বা বৃক্কের বিপাকীয় প্রতিক্রিয়ায় হরমোনগ্রন্থিসমূহকে সরাসরি সাহায্য করা। আর এরই ফলাফল হিসেবে দেহে প্রচুর ক্যালসিয়ামের মাত্রা এবং রক্তে প্রয়োজন অনুসারে ক্যালসিয়ামের যোগানও বেড়ে যায়।
ভিটামিন ডি এর প্রধান এবং বলতে গেলে একমাত্র যোগানদাতা হলো সূর্যালোক। অতিবেগুনী রশ্মির সাথে এর আগমন হলেও শরীরের চামড়া এবং ওজন বায়ুমন্ডলের কল্যানে প্রকৃতি এ সর্বনাশা রশ্মিকে প্রতিফলনের মাধ্যমে ফিরিয়ে দিলেও ভিটামিন ডি কে আমাদের চামড়ার নিচে চর্বিতে জমতে সাহায্য করে।
স্বাস্থ্য গবেষকদের মতে যথোপযুক্ত ওষুধ সেবনের পরও এ ধরনের পুরাতন বাত ব্যথার কারণ নির্নয় করতে তারা এখন প্রাথমিক ডায়াগনসিসের জন্য শরীরের ভিটামিন ডি’র মাত্রা পরীক্ষা করতে বলেন। আর আশংকার কথা হলো, এ জাতীয় প্রতিটি ব্যধিগ্রস্থ রোগীর ক্ষেত্রে পরীক্ষার ফলাফলে ভিটামিন ডি এর মাত্রা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম পেয়ে আসছেন বলেও তারা উল্লেখ করেন। শুধু তাই নয় এর প্রতিকার হিসেবে তারা এও প্রমাণ করতে সমর্থ হয়েছেন যে, ভিটামিন ডি এর মাত্রা প্রয়োজনানুসারে এবং পর্যায়ক্রমে বাড়াতে থাকলে এর প্রভুত সুফলও পাওয়া যায়।
বৃটিশ মেডিসিন বিশেষজ্ঞদের মতে ৬০০ থেকে ৮০০ আইইউ হারে একজন প্রতিদিন ৪০০০ আইইউ পর্যন্ত ভিটামিন ডি সেবন করতে পারেন যেখানে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ায় মাত্র সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ খাদ্যের সাথে পাওয়ার নিশ্চয়তা রয়েছে। আর সে কারণেই এসব অঞ্চলে অপুষ্টির সাথে পর্যায়ক্রমে বেড়েই চলেছে দীর্ঘমেয়াদী বাত ব্যথা, অকালপঙ্গুত্বসহ অনেক দুরারোগ্য ব্যাধি।
আর নিশ্চিত করে অনির্দিষ্ট এই পুরাতন গায়ে ব্যথা. পায়ের গিটে ব্যথা, মাংশপেশীতে ব্যথা, দুর্ঘটনা পরবর্তী অপূরনীয় নির্দিষ্ট সময়ভিত্তিক ব্যথা, মাথা ধরা, মেরুদন্ডে ব্যথা, শক্ত মাংশপেশীতে অসহনীয় অনির্দিষ্ট সময়ব্যপী ব্যথাসহ সকল প্রকার মানবদেহের বর্হিকাঠামোগত ব্যথার মূল রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা যা পেয়েছেন তার একটি সাধারণ কারণ হচ্ছে আনুপাতিক হারে ভিটামিন ডি এর অভাব। অথবা এ ধরনের রোগের কারণে দেহের ভিটামিন ডি মাত্রাও আনুপাতিক হারে কমার কথাই তারা ব্যক্ত করতে চেয়েছেন।
ইউএস জার্নালে প্রকাশিত কল্লিন নাদালস্কি কেস স্ট্যাডি থেকে কয়েকটি অভিজ্ঞতার কথা না প্রকাশ করলেই নয়।
* কোষের অপরিপক্কতার রোগে আক্রান্ত ১৬ বছরের একটি মেয়েকে তার অসহনীয় মাত্রার শরীর ব্যথা এবং মাথাব্যথা কমাতে চিকিৎসকরা পরীক্ষামূলকভাবে ৫০০০০ আইইউ মাত্রার ভিটামিন ডি’র সাথে ১০০০ মিগ্রা ক্যালসিয়াম কার্বনেট প্রতি দু সপ্তাহে সেবন করার পর ১৪ তম সপ্তাহে আশ্চর্যজনকভাবে এই দুরারোগ্য ব্যথা অতি দ্রুততায় কমতে থাকে এবং ক্রমহ্রাসমান কোষের সংগঠন বৃদ্ধি পেতে থাকে।
একজন অতিবয়স্কা বৃদ্ধার শরীরের অসহনীয় মাংশপেশীর ব্যথা কমাতে ৫০০০০ মাত্রার ভিটামিন ডি সংশ্লিষ্ট যৌগ রোগীর দেহে ৮ সপ্তাহ দেবার পর রোগী ব্যথামুক্ত হয়ে বাসায় ফেরত যান।
টেনশন বা স্ট্রেস এর কারনে অতি মাত্রায় মাথাব্যথায় ভারাক্রান্ত ৮ জন রোগীর দেহে প্রতিদিন ১০০০ থেকে ১৫০০ মাত্রার ডি৩ এবং ১০০০ মাত্রার ক্যলসিয়াম ওষুধ সেবন করে কারও কারও ক্ষেত্রে ৪ সপ্তাহে আবার কারও কারও ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৮ সপ্তাহে তার লাঘব হতে দেখা গেছে।
যদিও নাদলস্কির মতে সকল প্রকার ব্যথার কারনই ভিটামিন ডি র মাত্রাবিত্তিক অভাব নয় তবু ঐ সব দুরারোগ্য ব্যাধির ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি র প্রয়োগ যে রকম সুফল বয়ে এনেছে সে কারনেই প্রকৃতিলব্ধ এ ভিটামিন প্রতি মানবজাতির ধন্য হওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।
যাই হোক চিকিৎসাবিজ্ঞানের উৎকর্ষের ধারায় ভিটামিন ডি এর মাধ্যমে আরও সুসংহত ব্যধি নিরাময় আমরা ভবিষ্যতে দেখতে পাব তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই।
আসুন আমরা প্রতিদিনই রোদ গায়ে মেখে বিনামূল্যে প্রকৃতির দেওয়া রেশন ভিটামিন ডি গ্রহণ করি।
সবাই ভাল থাকুন...