আবহমান কাল হতে বাঙালির চিরন্তন সার্বজনীন পার্বণ বাংলা নববর্ষ। বাঙালি ও বাংলা নববর্ষ বিকল্পহীন এক অভিযাত্রা।
এই সময়কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের ফ্যাশন ভুবন আন্দোলিত হয় নব আনন্দে, পোশাকের আয়োজনে আসে নব নব সংযোজন। আর এই ধারার ধারক-বাহক যে কয়টি ফ্যাশন হাউস, তার মধ্যে ‘রঙ’ শীর্ষস্থানীয়। রঙ-এর ফ্যাশন ভাবনার মূলস্রোতকে বেগবান করেছে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের মূল্যবোধ। তাই বৈশাখ এলেই বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে ‘রঙ’ নতুন নতুন পসরা নিয়ে নিজস্ব পরিচয়ে ও সৃজনশীল ভাবনায় আপ্লুত হয় সবার মাঝে আপন সৌরভে।
বাঙালির জীবনযাপনে যন্ত্রবিহীন কারুপণ্যের উৎপাদনে, কৌশলগত বুদ্ধিমত্তায় হাতে তৈরি অনেক বৈচিত্র্যময় ব্যবহার্য্য সামগ্রীর উদ্ভব হয়েছিল যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে আরো সুখময় ও আনন্দময় করে রেখেছে আজও। লোকজশিল্পের ভুবনে ‘হাতপাখা’ স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে বলিয়ান এক অনন্য শিল্পকর্ম। নান্দনিক অলংকরণ ও উপকরণভেদে কৌশলগত ও দৃষ্টিনন্দন সৃজনশীলতা, হাত পাখাকে অঞ্চলভিত্তিক নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে বিশেষমাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন আমাদের শ্রদ্ধাভাজন কারুশিল্পীরা। বাংলাদেশের নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী হাতপাখার অলংকরণের বৈশিষ্ট্যকে চিহ্নিত করে, এর অনুপ্রেরণায় এবারের বাংলা নববর্ষে সাজানো হয়েছে “বৈশাখের রঙ” শীর্ষক পোশাকের বর্ণিল সম্ভার।
ঐতিহ্যবাহী হাতপাখার মোটিভ এবারের বৈশাখে শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, সালোয়ার-কামিজ, কুর্তা, টি-শার্ট, মগ, ব্যাগ, গহনায় বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। বৈশাখের সময় যেহেতু প্রচন্ড গরম থাকে তাই পোশাকগুলোতে আরামদায়ক পাতলা সুতি কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে বৈশাখের রং বলতে যে সকল উজ্জ্বল রং আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে, যেমন লাল, কালো, হলুদ, নীল, বেগুনী, মেজেন্ডা সাদা প্রভৃতি রং ছাড়াও গ্রামবাংলার উজ্জ্বল রংগুলো ব্যবহার হয়েছে পোশাকেগুলোতে ।