একদিকে আশা আনন্দ ও খুশি এবং আরেক দিকে দুঃখ বেদনা ও উৎকণ্ঠা। পরস্পর বিরোধী এই ভাবাবেগগুলোর সঠিক অনুপাত রক্ষা করতে না পারলে জীবন যুদ্ধে পরাজিত হই আমরা।
আমরা যখন কোনো সংকটের মুখোমুখি হই তখন খুব দ্রুত গতিতে আমাদের শরীরের গ্লুকোজ ভেঙ্গে শক্তি তৈরি হয় সেই সংকটকে মকাবেলা করার জন্য। এই গ্লুকোজ ভাংতে প্রয়োজন হয় অক্সিজেন। আর গ্লুকোজ থেকে শক্তি তৈরির সময় কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়। এই প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্রহণ ও উৎপাদিত কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে শরীরের বাইরে বের করে দিতে আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুততর হয়। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যে শক্তি তৈরি হয় তা পেশীতে পৌঁছে দিতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। যার ফলে আমাদের হৃদস্পন্দনও বেড়ে যায়। উত্তেজনা বা সংকটে দেহ দ্রুত রক্ত জমাট বাধার ক্ষমতা লাভ করে। পরিণামে হাই ব্লাড প্রেশার, ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা – এই ধরনের মানসিক চাপ পেপটিক আলসার, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের মত রোগের জন্ম দেয়। পেপটিক আলসারের ক্ষেত্রে উদ্বেগ, উত্তেজনা, পাকস্থলীতে এসিড নিঃসরণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় যা পাকস্থলীর আবরণকে ঝলসে দিয়ে ঘা তৈরি করে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
অনেক রোগ আছে যাদের উৎপত্তি মনে, কিন্তু প্রকাশ পায় দেহে। এর মধ্যে হাইপার টেনশন, আলসার, মাথাব্যাথা, হাঁপানি উল্লেখযোগ্য।
এ থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রয়োজন জীবনধারার ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। যে কোনো পরিবর্তিত পরিস্থিতিকে সহজভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা অর্জন করতে হবে। জীবনের সব সংকটে জয়ী হতে না পারলেও তার মুখমুখি হতে হবে। পরাজয়কে মেনে নেওয়া শিখতে হবে।
প্রিয়জনের সঙ্গে শেয়ার করতে শিখুন, প্রাণ খুলে হাসতে শিখুন। রোগমুক্ত থাকুন।
ডাঃ আফরোজ হেলালী
সিনিয়র লেকচারার, এস সি এইচ এস
জেনারেল ও সেক্সুয়াল হেল্থ কাউন্সিলর, স্বাস্থ্য বাংলা