ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

বড়ই কঠিন মায়ের ভালোবাসা...

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৫
বড়ই কঠিন মায়ের ভালোবাসা...

বাবা-মাকে কে না ভালোবাসে? আর মায়ের ভালোবাসা সেতো তুলনাহীন! কিন্তু সন্তান যদি বেয়াড়া হয়? যদি যেতে চায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে- তখন? তখন আসে মায়ের শাসন। সে শাসনেও থাকে কঠিন ভালোবাসার মিশ্রণ।

তাতেই শুধরে যায় সন্তান। আবার পরিবারে ফেরে শান্তির সুবাতাস। সেখানে মাকেও জানতে হয় কেমন শাসন নিতে পারবে তার সন্তানটি। তেমনই একটি গল্প অস্ট্রেলিয়া থেকে ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সংবাদ হিসেবে তা উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতেও।

ছেলেটির নাম অ্যারন হ্যাভিশ্যাম। ১৩ বছরের বালক। শান্ত ছেলেটি ইদানিং বেশ বেয়াড়া হয়ে উঠেছে। মায়ের মুখের ওপর যখন তখন তর্ক জুড়ে দেয়। এমনকি এও জানিয়ে দিয়েছে, তার নিজেরই কামাই আছে তা দিয়েই সে চলতে পারবে। এছাড়াও চরম অশান্ত আচরণ করতে থাকে।

মা স্টেলা এবার ভালোবাসার ডালাখানি ঢেকে রেখে খুললেন শাসনের ডালা। ছেলেকে একটি নোট লিখলেন। আর সেই লেখার লাইনে লাইনে ছড়িয়ে দিলেন কঠিন এক ভালোবাসামিশ্রিত শাসন। শুরুতেই বললেন, ছেলের আচরণ এখন আর ‘প্রিয় সন্তানের’ মতো নেই, তার আচরণ একটু ঝামেলাপূর্ণ রুমমেটের মতো দাঁড়িয়েছে। সেই যদি হয়, বাবা-মায়ের সঙ্গে তার থাকতে ক্ষতি নেই, আর যেহেতু তার নিজের কামাই আছে বলে হুমকি দিয়েছে, সেহেতু তাকে খরচ দিয়েই থাকতে হবে।

মা লিখেছেন, অ্যারন যদি তার রুমের লাইট জ্বালাতে চায়, ইন্টারনেট অ্যাকসেস চায় তাহলে তাকে রুমের ভাড়া হিসেবে মাসে ৪৩০ ডলার দিতে হবে, বিদ্যুতের জন্য ১১৬ ডলার, ইন্টারনেট খরচ বাবদ ২১ ডলার, আর খাবার খরচ বাবদ ১৫০ ডলার পরিশোধ করতে হবে। এছাড়াও তাকে ময়লার ঝুড়ি নিয়মিত পরিস্কার করতে হবে, ঘর ঝাড়ু দিতে হবে, প্রতি সোম, বুধ ও শুক্রবার ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে ধুলা সরাতে হবে, প্রতি সপ্তাহে একবার বাথরুম পরিষ্কার করতে হবে, নিজের খাবার নিজেই তৈরি করে খেতে হবে। এই কাজগুলো ঠিকঠাক না হলে তার মা কাজগুলো করবেন তবে তার বিনিময়ে দিনে কাজের মেয়ের খরচা বাবদ ৩০ ডলার করে পরিশোধ করতে হবে।
 
নোট রেখেই ক্ষান্ত হননি, তা ছেলেকে যেমন দিয়েছেন, তেমনি তুলে দিয়েছেন ফেসবুকেও। যা ইন্টারনেট জগতে ভাইরাল হয়ে ছড়াচ্ছে। লাখ লাখ শেয়ার হয়ে যাচ্ছে।

মা লিখেছেন, গতরাতে ছেলে আমার সঙ্গে যে আচরণ করেছে, যেসব কথা বলেছে, তার বিপরীতে এটাই আমার উদ্যোগ। এখানেই শেষ করিনি ওর জন্য যেসব খেলনা, কাপড় কিনেছি সেগুলোও জব্দ করেছি। এখন তার কাছে তিনটি পথ খোলা রয়েছে- নিজের নতুন কাপড় কিনে নেবে, নয়তো প্রতিদিন ৩ ডলার ভাড়া দিয়ে আমার কাছ থেকে কাপড় নিতে পারবে, নয়তো শিশুসুলভ আচরণে ফিরবে।

অ্যারনের জন্য শিক্ষা হয়ে গেছে, মায়ের সঙ্গে ভদ্রতা, শিষ্ঠতা, দয়া আর মর্যাদার সঙ্গে আচরণ করতে হয়, না হলে তার পরিণতি কী হতে পারে তা অ্যারনের চেয়ে এখন কে-ই আর ভালো জানে!

ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়া এই ফেসবুক পোস্টে মন্তব্যগুলোতেও পাওয়া যাচ্ছে মা আর সন্তানের মধ্যে ভালোবাসা আর শাসনের সম্পর্কের হাজারো উদাহরণ।  

বাংলাদেশ সময় ১০২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৫
এমএমকে           

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।