ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

রমজানে বিশেষ খাদ্যাভ্যাস, ডাক্তাররা কেন বলেন?

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৬ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৭
রমজানে বিশেষ খাদ্যাভ্যাস, ডাক্তাররা কেন বলেন? রমজানে বিশেষ খাদ্যাভ্যাস

অর্ধেকের বেশি পেরিয়ে এসেছি এবারের রমজান। রমজানের বিশেষ খাদ্যাভ্যাস নিয়ে অনেক লেখাই আমরা দেখছি-পড়ছি। সেখানে অনেক কথাই বলা হবে, অনেক উপদেশ দেয়া হবে কিন্তু জানা হবে না কেন ডাক্তাররা এসব কথা বলেন বার বার। আজ সেসব পেছনের কারণগুলো নিয়েই জানবো আমরা।

বেশি করে পানি ও শরবত খেতে বলা হয়:
এমনিতেই গরমের সময়ে পড়েছে রোজা তার পরে সারাদিন পানি খাওয়া হয় না। কম পানি পান করলে হজমেও সমস্যা হয়, শরীরের অঙ্গগুলোর কাজ ঠিকমতো চলার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পানি।

দেহের পানির চাহিদা মেটাতে তাই রোজা ভাঙার পরে বেশি করে পানি পান করতেই হবে।

ডাবের পানি:
ডাবের পানিতে আছে বেশ কিছু খনিজ পদার্থ যেগুলো শরীরের জন্য খুব দরকার। রয়েছে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ক্লোরিন ইত্যাদির লবণ। ডাবের পানি তাই পানির সাথে এসব প্রয়োজনীয় খনিজেরও অভাব পূরণ করে।  

ভাজা পোড়া খেতে মানা: 
রোজা রেখে এমনিতেই হজম শক্তি থাকে দুর্বল, তার ওপরে তেলে ভাজা জিনিস বেশি খেলে ঝামেলা হবেই। বদহজমের বিপদ আছে, আছে এসিডিটি বাড়ার সুযোগ। তেল, চর্বি এসিডিটি বাড়ায়। বাইরের কেনা খাবার আরো বিপদজনক। এক তেল দিয়ে বার বার ভাজে। এতে দেহে প্রবেশ করে ক্ষতিকর তেলজাত পদার্থ, সাথে বুকজ্বালা ফ্রি।

রমজানে আঁশযুক্ত খাবার:
আঁশযুক্ত খাবার পেটে থাকে অনেকক্ষণ, হজম হতে দেরি হয়। তাই ক্ষুধা লাগেও দেরিতে। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতেও এগুলো সাহায্য করে। সেহেরির সময় এসব আঁশ জাতীয় খাবার খাবেন বেশি করে।

একবারে বেশি খেতে নেই: 
ইফতারের সময় আজানের শব্দ শুনেই হাপুস হুপুস খেয়ে দ্রুত পেটে ভরানো চলবে না। খেতে হবে অল্প করে, সময় নিয়ে। সারাদিন খালি পেটে থাকার পরে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা থাকে খুব কম। ইফতারে দ্রুত খাবার খেতে থাকলে হঠাৎ করে অতিরিক্ত খাবারের কারণে রক্তে থাকা অবশিষ্ট গ্লুকোজও শেষ হয়ে যায়, যার ফলে আমরা খুব ক্লান্তি বোধ করি।

আরও যা খাবেন: 
খেজুরের গ্লুকোজ খুব দ্রুত শরীরে শোষিত হয়ে দেহে শক্তি যোগায়। অন্যান্য মিষ্টি যেমন জিলাপিও শক্তি দেয় খুব কম সময়ের মাঝে।

মিষ্টি ফলে রয়েছে ফ্রুক্টোজ যা শক্তি দেয়। ফল খেলে শরীরে যাচ্ছে ভিটামিন, শক্তি, খনিজ পদার্থ, আঁশবার ফাইবার ইত্যাদি। পেপে, কলা, আম যে ফলই খান না কেন সবগুলোই কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে খুব ভালো কাজ করে।  

চিড়া, দইও ভালো খাবার। চিড়ার রয়েছে এসিডিটি কমানোর ক্ষমতা আর দই পরিপাক হয় খুব সহজেই।  

 হালিম আমিষের চাহিদা মেটাবে। ছোলা-মুড়ি না খেলে যে ভালো লাগে না,
ছোলা-মুড়ি খাবেন না কেন? অবশ্যই খাবেন তবে ছোলাতে বেশি মশলার ব্যবহার একে গুরুপাক করে দিতে পারে। মুড়িতে কোনো আপত্তি নেই, এটা বুক জ্বালা, এসিডিটি কমায়।
 
মাংসের বিভিন্ন আইটেম দেখলে মন মানে না? উপাদেয় খাবার দেখলে খেতে ইচ্ছে করবেই, এটাই স্বাভাবিক। একবেলা মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন, আরেক বেলা না হয় মাংস খেলেন।  

ডিম ও দুধ-সেহরিতে দুধ খেয়ে থাকেন প্রায় সবাই। সারাদিনের রোজার পরে দুধ শরীরের ক্ষয় পূরণে অনেক সাহায্য করে। যাদের বয়স হয়েছে, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি তারা কুসুম ছাড়া ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন, সমস্যা নেই।

রকমারি খাবারের ভিড়ে, খেতে হবে নিজের শরীর ও খাবারের মান বুঝে।  
 
ডা. রায়হান কবীর খান

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।