সেখানে আবার শাড়ির থেকে অন্য পণ্যের দোকানই বেশি! যদি এমনটা মনে করেন তাহলে বলতেই হচ্ছে কলকাতায় রুচিশীল, আধুনিক ডিজাইন এবং নিত্য নতুন ভাবনার শাড়ি ও থ্রি পিস মার্কেটের খোঁজ এখনও আপনার জানা নেই! শুধু তাই নয়, ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের শাড়ির যে বৈচিত্র্য তাও আপনার কাছে এখনও অধরা।
লাইফস্টাইল
নারীর সৌন্দর্যে অনন্য ‘মৃগনয়নী’র শাড়ি
কলকাতা: কলকাতায় এসে শাড়ি না কিনে ফিরে যাওয়াটা যে কোনো বয়েসের নারীর জন্যই প্রায় অসম্ভব! কিন্তু কলকাতায় কেনাকাটা মানেই কী নিউমার্কেটের হাতেগোনা কয়েকটা শাড়ির দোকানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা? অথবা চকচকে শপিং মলে হাপিত্যেশ হয়ে চক্কর কাটা?
তাহলে একবার ঘুরে আসতেই পারেন দক্ষিণাপনে মধ্যপ্রদেশ সরকারের এম্পোরিয়াম ‘মৃগনয়নী’। ফ্যাশনেবল, রুচিসম্মত এবং সঠিক দামের শাড়ি পাবেন এখানে।
অনেকটা দায়িত্ব নিয়েই বলা যায়, ‘মৃগনয়নী’তে যে ধরনের এক্সক্লুসিভ শাড়ি আছে, তার মান, নতুনত্ব, ফ্যাশন এবং আভিজাত্য কলকাতার যে কোনো বাজারের থেকে আলাদাই শুধু নয়, একেবারে ভিন্নমানের। এক কথায় কালেকশনের সম্ভার ‘মৃগনয়নী’।
ভারতে শাড়ির পীঠস্থান বলতে যে রাজ্যগুলোর কথা বলা হয়, তার মধ্যে অন্যতম মধ্যপ্রদেশ। এক সময় মারাঠা রানিদের প্রথম পছন্দ ‘মহেশ্বরী’ শাড়ির জন্মভূমি এই রাজ্যে। সুতি ও সিল্কের বুনুনিতে বিভিন্ন ধরনের শাড়ি তৈরি হয়। যার শৈলী ভারতের অন্যান্য জায়গার শাড়িগুলোর থেকে একেবারেই ভিন্ন।
যদি একই রকমের শাড়ি পরে ক্লান্ত হয়ে গিয়ে থাকেন, কিংবা এবার উৎসবে সবাইকে চমকে দিতে চান আভিজাত্যের ছোঁয়ায়, ভিড়ের মধ্যেও হয়ে উঠতে চান অনন্য, তবে ‘মৃগনয়নী’ হতে পারে আপনার সঠিক ঠিকানা।
হাতে বোনা তাঁত বা মধ্যপ্রদেশের হ্যান্ডলুমের শাড়ি গোটা ভারতে বিখ্যাত। সব থেকে বড় কথা ‘মৃগনয়নী’ মধ্যপ্রদেশ সরকারের পরিচালিত দোকান। ফলে এখানে পাওয়া যায় সঠিক দামে তাঁতীদের হাতে তৈরি শাড়ি। মধ্যপ্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে যে তাঁতী পরিবারগুলো হাতে তাঁত শাড়ি বোনেন সেই গ্রামীণ শিল্পীদের নিয়ে সরকার গঠন করেছে ‘মধ্য প্রদেশ লঘু উদ্যোগ নিগম’।
নিগমের সদস্যদের হাতে বোনা শাড়ি গোটা ভারতে ‘মৃগনয়নী’-এর মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে। যেহেতু এই প্রতিষ্ঠানের পেছনে আছে মধ্যপ্রদেশ সরকার সেহেতু দাম আর মান নিয়ে আপনার আলাদা করে চিন্তার দরকার নেই।
এসব শাড়ির প্রধান বিশেষত্ব হলো- এগুলো মধ্যপ্রদেশের প্রাচীন ইতিহাস বয়ে চলেছে। যে ইতিহাসে জড়িয়ে আছেন প্রাচীন মারাঠা হলকার বংশের রানি ও রাজ নন্দিনীরা। শুধুমাত্র যাদের জন্য বোনা হতো ‘মহেশ্বরী’ শাড়ি।
আজও গ্রামীণ তাঁতীরা সেই পরম্পরা মেনেই বুনে চলেছেন শাড়ি। তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সরকারও। ফলে একেবারে তাঁতীদের বাড়ি থেকে সরাসরি ক্রেতাদের হাতে উঠে আসছে কোশা, মহেশ্বরী, তসর, মালবেরি, চান্দেরির মতো শাড়ি।
এছাড়া আছে ক্রেপ সিল্ক, কোটা, শিফন, সুতি প্রভৃতি। শাড়ি ও থ্রিপিসের ডিজাইনগুলো দেখতে দেখতে আপনি হারিয়ে যেতেই পারেন সবুজ বনানী, পাহাড়ি ঝর্নার পাশে বৌদ্ধ গুম্ফা কিংবা নদীর গভীরতায়।
তবে মধ্যপ্রদেশ সরকারেরে এম্পোরিয়াম ‘মৃগনয়নী’কে শুধুমাত্র শাড়ির দোকান ভাবলে কিন্তু ভুল হবে। রাজ্যের যা কিছু তার ঐতিহ্যের স্বাক্ষর বহন করে চলেছে তা সব কিছুই পাওয়া যাবে এখানে।
এখানে আছে মধ্যপ্রদেশের শিল্পীদের হাতের সূক্ষ্ম কাজ করা চুড়িদার, ঘর এবং অফিস সাজাবার নানা ধরনের শিল্প সামগ্রী, ঐতিহ্য মণ্ডিত হাতে তৈরি গয়না, উপহার সামগ্রীর সম্ভার। পবিত্র রমজান উপলক্ষে যে কোনো কেনাকাটায় আছে ২০ শতাংশ ছাড়। এছাড়া বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য রয়েছে আকর্ষনীয় ছাড়।
কলকাতার পার্ক স্ট্রিট থেকে ট্যাক্সিতে উঠলে খুব বেশি হলে ৩০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাবেন ঢাকুরিয়া দক্ষিণাপনে। যারা কলকাতায় মেট্রো চড়ে যেতে ইচ্ছুক তারা, ‘কালীঘাট’ মেট্রো স্টেশনে নেমে সরাসরি বাসে যেতে পারেন ঢাকুরিয়া দক্ষিণাপন।
অথবা মেট্রো থেকে নেমে সিএনজি অটোরিকশা চেপে গড়িয়াহাটে, আবার সেখান থেকে অটোরিকশায় মিনিট পাঁচেকের মধ্যে পৌঁছে যেতে পারেন দক্ষিণাপন।
এই ঈদে অন্যদের থেকে এক্সক্লুসিভ সম্ভারে অনন্য হয়ে উঠতে একবার ঘুরে আসতেই পারেন দক্ষিণাপনে এম্পোরিয়াম ‘মৃগনয়নী’ থেকে। অপূর্ব শিল্পকর্ম, যা শুধু পোশাক নয় আক্ষরিক অর্থেই সম্পদ!
মৃগনয়নী’র ঠিকানা: ২, গড়িয়াহাট রোড (এস), দক্ষিণাপান, কলকাতা। বিস্তারিত জানতে কল করুন- +91 98747 43568 ও 033 24236715। ইমেইল: info@mrignayanikolkata.com। এছাড়া দোকানটির ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজেও জানতে পারবেন আগ্রহীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০১ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৮
এমএ/