করোনাকালে সবাই যেন হাসতে ভুলে গেছি, অথচ হাসি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি শিশু যখন হাসে, তখন তাকে নিয়ে গবেষণা করলে বোঝা যায়, সে তার অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে কীভাবে তার চারপাশের পৃথিবীকে দেখছে।
হাসি মানুষের মনের হাজার কথা বলে। একজন প্রাণ খুলে হাসলে চারপাশে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। সুন্দর হাসি আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিতে পারে। হাসি সৌন্দর্যের প্রতীক। কখনো হাসি ভুলিয়ে দেয় রাশি রাশি দুঃখ ও বিষাদের কথাও। হাস্যোজ্জ্বল মানুষকে সবাই ভালোবাসে। আপন ও কাছের ভাবে। হাসির মাধ্যমে আন্তরিকতা ও বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়। একটুখানি মুচকি হাসি দু'জনের সম্পর্কে নতুনমাত্রাও যোগ করতে পারে।
কিন্তু কেউ যদি গোমড়া-মুখে থাকে, তাহলে পরস্পর দূরত্ব ও ব্যবধান তৈরি হয়। তাই পরিচিত-অপরিচিত সবার সঙ্গে হাসি দিয়েই শুরু হোক কথা বলা।
হাসি-খুশি ও প্রফুল্লতা বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করে এবং শরীরে নানা ধরনের ক্যান্সারের দ্রুত ছড়িয়ে পড়াকেও ঠেকিয়ে রাখে।
যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত লোমালিন্ডা ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের ক্লিনিকাল ইমিউনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. লোরেন্স বার্ক হাসি নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং মজার তথ্য আবিষ্কার করেছেন।
বার্কের মতে, হাসি মানুষের উদ্বেগ বাড়ানো হরমোনের ‘করটিসোল’ নিঃসরণ কমায় যা মানুষকে উদ্বেগমুক্ত করে। রক্তে রোগ প্রতিরাধ ক্ষমতা বাড়াতে করতে নির্মল হাসির জুড়ি নাই। তিনি এ সম্পর্কে আরও বলেন, প্রতি ঘণ্টায় ১৫ সেকেন্ড অর্থাৎ দিনে ৬মিনিট করে হাসতে পারলে আমাদের বুক, কাঁধের মাংসপেশী সঙ্কুচিত-প্রসারিত হবে এবং থাকবে নিরুদ্বিগ্ন ও প্রফুল্ল। আর এতে করে আমাদেরও আয়ুও বাড়ে।
করোনাকালে নিজে ভালো থাকার জন্য এবং সবাইকে ভালো রাখার জন্য মন-প্রাণ খুলে হাসি, দুশ্চিন্তা দূরে রেখে বেশিদিন বাঁচি।
হাসি অবশ্যই প্রয়োজন, তবে কোনোভাবেই অন্যকে উত্যক্ত করা বা খোঁচা দেওয়ার জন্যে কৌতুক করা যাবে না। হাসতে গিয়ে কাউকে নিয়ে হাসাহাসি করা থেকেও বিরত থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০২০
এসআইএস