নরসিংদী: নরসিংদীর রায়পুরায় মির্জাচরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইউপি চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিক নিহত হয়েছেন। একটি সভায় সন্ত্রাসীরা খুব কাছ থেকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে।
শনিবার বিকেল ৪টার দিকে রায়পুরায় দুর্গম চরাঞ্চল মির্জাচরে ইউনিয়নের শান্তিপুর স্কুল মাঠে এ হত্যাকাণ্ড হয়। ঘটনার পরপর আতঙ্কে উপস্থিত লোকজন দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। খবর পেয়ে রায়পুরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে রওনা দেয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নিহত চেয়ারম্যান মানিকের ভাই বারসন মিয়া। তিনি জানান, শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ মির্জাচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ মিয়ার সমর্থকরা গুলি করে মানিককে হত্যা করেছে।
নিহত জাফর ইকবাল মানিক মির্জাচর গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালিব মিয়ার ছেলে। তিনি টানা দুই বার মির্জাচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। একই ইউনিয়নের যুবলীগ সভাপতি ছিলেন তিনি।
জানা যায়, একটি সভায় যোগ দিতে রায়পুরায় মির্জাচরে ইউনিয়নের শান্তিপুর স্কুল মাঠে যান মির্জাচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিক। সভাস্থলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ৩ সন্ত্রাসী চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে শর্টগান দিয়ে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে চেয়ারম্যান মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকা নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
মির্জাচর ইউনিয়নের ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক স্বাধীন খান রুবেল বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন মো. ফিরোজ মিয়া। তার সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি জাফর ইকবাল মানিক। এরই জেরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। পরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে এলাকাছাড়া ছিল ফিরোজ সমর্থিত লোকজন। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধে দুটি পক্ষ বৈঠক করে। সমঝোতা না হওয়ায় সভা থেকে উঠে যায় ফিরোজের লোকেরা। এরই মধ্যে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিক শান্তিপুর স্কুলের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে সেখানে তাকে ৩ সন্ত্রাসী গুলি করে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রায়পুরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) সত্যজিত ঘোষ বলেন, চেয়ারম্যান গুলিবিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু মারা যাওয়ার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তাকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। আমরা এলাকার যাচ্ছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২২
জেএইচ