ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলার প্রস্তুতি

সুমন কুমার রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২২
শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলার প্রস্তুতি

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের মির্জাপুর সরকারি এস কে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে (শেখ রাসেল মিনি স্টেটেডিয়াম নামে পরিচিত) মাসব্যাপী আয়োজন করার হচ্ছে বাণিজ্যমেলা। তবে এ মেলার বিপক্ষে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য সদস্যরা।

 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেলার বিপক্ষে থাকলেও এক প্রকার বাধ্য হয়ে মাঠ ব্যবহারের প্রত্যায়নপত্র দিয়েছেন মেলা কর্তৃপক্ষকে।

শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে মেলায় স্টল তৈরির কাজ। মাঠের মাঝখানে বড় একটি অংশজুড়ে পাকা করে সেখানে তৈরি করা হচ্ছে ফোয়ারা। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে বাণিজ্যমেলা উদ্বোধনের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত অনুমতি না পাওয়ায় নির্ধারিত দিন থেকে মেলা শুরু নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন আয়োজকরা।

স্থানীয়রা জানান, পুরো উপজেলায় একটি মাত্র বড় খেলার মাঠ রয়েছে। যা শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নামে পরিচিত। এখানে বছরের ৬/৭ মাস পানি জমে থাকে। আর বাকি দিনগুলোতে খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। কিন্তু এবার এই মেলার কারণে পুরো এক বছরের জন্য খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেল।

সুকুমার সরকার নামের স্থানীয় বাসিন্দা জানান, বাণিজ্যমেলা একটি ব্যবসা। মেলা কমিটির লোকজন এক মাসে দুই থেকে তিন কোটি টাকা ব্যবসা করে যাবে আর ক্ষতি করবে খেলার মাঠের। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে খেলার মাঠে কোনো প্রকার মেলা করার অনুমতি না দেওয়ার দাবি জানান।

ইসতিয়াক আহমেদ নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, এভাবে খেলার মাঠ দখল করে মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলা করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এতে করে বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া মেলা কমিটির লোকজন মেলা করে চলে যাবে কিন্তু পরবর্তীতে এই মাঠ সংস্কারের জন্য এভাবেই পড়ে থাকবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার একজন সদস্য জানান, তাদের নিজস্ব কোনো খেলার মাঠ না থাকায় এস কে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠটিই তারা ব্যবহার করেন। আর এ জন্য এটির নাম দেওয়া হয়েছে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম। কিন্তু স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীদের কারণে এখন মাঠটির সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পথে। মাঠের মাঝ খানে পাকা করে নির্মাণ করা হচ্ছে পানির ফোয়ারা। পরবর্তীতে সেটি যখন ভেঙে ফেলা হবে তখন মাঠের ওই অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, তিনি মেলা করার পক্ষে নন। এছাড়া খেলার মাঠ এভাবে পাকা করে মেলার আয়োজন করাটা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। কোনো খেলার মাঠে শুধু খেলাধুলা ছাড়া মেলা বা সভা/সমাবেশ করার অনুমতি না দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

সরকারি এস কে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, মাঠটি তার বিদ্যালয়ের। তিনি খেলার মাঠে বাণিজ্যমেলার আয়োজনের বিপক্ষে তারপরও বাধ্য হয়েই মাঠটি ব্যবহারের প্রত্যায়নপত্র দিয়েছেন। তবে মাঠটির কোনো প্রকার ক্ষতি হয় এ ধরনের কোনো স্থাপনা করা যাবে না এ শর্তেই মাঠ ব্যবহারের প্রত্যায়নপত্র দিয়েছেন।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, খেলার মাঠে বাণিজ্যমেলার অনুমতির বিষয়ে তার কিছু জানা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।