ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘কথা রাখা’ সুমাইয়ার স্বপ্ন এখন মেডিকেল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩
‘কথা রাখা’ সুমাইয়ার স্বপ্ন এখন মেডিকেল

মাদারীপুর: এবার এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছে মেধাবী সুমাইয়া ফারহানা। ২০২০ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে এই অভিযাত্রা শুরু করে মাদারীপুর জেলার শিবচরের হতদারিদ্র পরিবারের এই সন্তান।

এ বছর উপজেলার ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয় সে।

২০২০ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পর দরিদ্রতার জন্য কলেজে ভর্তি নিয়ে সংশয়ে ছিল সুমাইয়া ও তার পরিবার। ঠিক তখনই জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি মেধাবী সুমাইয়াদের জরাজীর্ণ ঘরটি পাকা করে টাইলস বসিয়ে দেন, সুপেয় পানি, এমনকি বাড়ির রাস্তাও নির্মাণ করে দেন। একই সঙ্গে একটি স্মার্ট ফোনও তুলে দেন সুমাইয়ার হাতে।  

সেই সময় চিফ হুইপ সুমাইয়াদের বাড়িতে গিয়ে তাকে নির্বিঘ্নে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে বলেন। চিফ হুইপের কাছে তখন মেধাবী সুমাইয়া প্রতিজ্ঞা করে, আগামীতেও ভালো ফলাফলের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাবে সে।  

২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে 'সেই কথা' রেখেছে সুমাইয়া!

জানা গেছে, শিবচর উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের সাড়ে এগারো রশি লপ্তিকান্দি গ্রামের পেশায় দর্জি দেলোয়ার হোসেন ও সালেহা বেগম দম্পতির ৬ মেয়ের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ সুমাইয়া ফারহানা। করোনার অচলাবস্থার মধ্যে এ ফল অর্জনে সুমাইয়া অনলাইনে বিভিন্ন কোর্স ও ক্লাস করে এ সাফল্য পায় বলে দাবি তার। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন বুকে লালন করা সুমাইয়া গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেলেও আর্থিক সংকটের কারণে শঙ্কিত তার পরিবার।

টিউশনি করে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে ২০২০ সালে এসএসসিতে পাঁচ্চর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ অর্জন করে সে। ভালো ফলাফল অর্জনের পরও সেদিন দরিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত সুমাইয়া ও তার পরিবার কলেজে ভর্তি নিয়ে সংশয়ে ছিল। খবর পেয়ে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে তার বাড়িতে মিষ্টি পাঠান। ফোনে সুমাইয়ার সঙ্গে কথা বলে তার লেখাপড়া ও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ খবর নেন চিফ হুইপ। পরে সুমাইয়ার বাড়ির ফ্লোর টাইলস ছাড়াও পলেস্তারা সংস্কার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থাসহ অনেক কিছু সম্পন্ন করা হয় চিফ হুইপের ব্যক্তিগত উদ্যোগে।  

এর কয়েক দিন পরেই চিফ হুইপ সুমাইয়ার বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ খবর নেন এবং সুমাইয়ার লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার দায়িত্বও নেন। এরপর ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজে ভর্তি হয় সুমাইয়া।

মেধাবী সুমাইয়া বাংলানিউজকে বলে, 'আমি চিফ হুইপ মহোদয়ের নিকট কৃতজ্ঞ। তিনি নির্বিঘ্নে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আমি এখন মেডিকেলে ভর্তি হতে চাই। '

সুমাইয়ার মা সালেহা বেগম বলেন, আমার মেয়েটি ডাক্তার হতে চায়। সবার সহায়তা থাকলে সুমাইয়া তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।

ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ হাফিজুল্লাহ মিয়া বলেন, 'সুমাইয়া মেধাবী শিক্ষার্থী। চিফ হুইপ স্যারের নির্দেশে তাকে কলেজে বিনা বেতনে লেখাপড়া করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সে এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে। '

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।