ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কালশী ফ্লাইওভারে দূর হলো মিরপুরবাসীর ভোগান্তি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
কালশী ফ্লাইওভারে দূর হলো মিরপুরবাসীর ভোগান্তি ওয়াই আকৃতির কালশী ফ্লাইওভার। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: কালশী ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ায় দূর হলো মিরপুরবাসীর সকাল-বিকেলে ভোগান্তি।  

উত্তরা, বিমান বন্দর, বনানী গুলশানমুখী মানুষকে দীর্ঘ সময় ধরে আর কালশী মোড়ে অপেক্ষা করতে হবে না।

পোহাতে হবে না জরুরি কাজের পথের অনিবার্য ভোগান্তি।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কালশী সেতু খুলে দেওয়ার সাক্ষী হতে আসা হাজারো মানুষের অভিব্যক্তিতে ফুটে উঠেছে সে উচ্ছ্বাসের কথা।  

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর মানুষের ঢল নেমেছে ফ্লাইওভারের উপর-নিচে। চলছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। ছেলে-বুড়ো, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই মেতেছেন যেন উৎসবের আমেজে। মোবাইল ফোনে সেলফি অনুসঙ্গ যোগ করেছে নতুন মাত্রা।  

যেন কোনো ঈদ, পূজা বা ফাগুন বর্ষবরণের আনন্দ চলছে। আনন্দ নিজেরদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিচ্ছে কালশীকেন্দ্রিক বিভিন্ন রকম স্মৃতি-সুখ, দুঃখের গল্প করে।

পঁচাত্তর-উত্তর নুরুল ইসলাম তাদের মধ্যে অন্যতম। দুপুরে  প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ার পর নুরুল ইসলাম মেতেছেন আনন্দে। পরিচিত যার সাথে দেখা হচ্ছে কথা বলছেন তিনি।  

নুরুল ইসলাম বলেন, সকাল হলেই শত শত গাড়ির জ্যাম লাগত। মানুষ জরুরি কাজে বের হয়ে এখানে এসে যেন বন্দী হয়ে যেতেন। ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ার পর মানুষ নিমিষেই সাঁই করে চলে যাচ্ছে।

এক সময়ের খারাপ জায়গা হিসাবে পরিচিত কালশীর স্মৃতিও হাতড়ালেন তিনি। বললেন, তখন তো আসাই যেত না। মানুষকে খুন করা হতো। মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরের এইসব স্মৃতি। রাস্তা ছিল ভাঙাচোরা, কোনটা ফুটপাত আর কোনটা রাস্তা বোঝা যেন না। এখন রাস্তায় ভাত রেখে খাওয়া যাওয়ার মতো পরিস্কার। মানুষ যাবে আর আসবে।   

ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ার পর দেখছে এসেছেন আমেনা খাতুনও। তিনি বলেন, গাড়িগুলো অনেক সময় ধরে জ্যামে আটকে থাকতে।  কয়েকবার ভোগান্তিতে পড়েছি। গাজীপুর, উত্তরা-বিমানবন্দর, বনানী, গুলশান এমনকি তেজগাঁও যেতে হলে অনেক ভোগান্তি অতিক্রম করে যেতে হতো। মনে হতো আমরা যেন উপেক্ষিত সিটমহলের বাসিন্দা; দেখার কেউ নেই। মূল সড়ক বা জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন মনে হতো নিজেদের। মিরপুর ১০, ১১,১২ ও ১৩ নম্বর সেকশনের মানুষ এখন এই ফ্লাইওভার ব্যবহার করে সহজেই গন্তবেই পৌঁছতে পারবে। এখন মনে হচ্ছে নিশ্চয়ই আমাদের দেখার কেউ ছিল।   

ইংরেজী বর্ণ ওয়াই আকৃতির মূল ফ্লাইওভারটির দৈর্ঘ প্রায় দুই কিলোমিটার (১ দশমিক ৭ কিলোমিটার)। সেনানীবাসের ইসিসি চত্বরের দিকে থেকে একটি অংশ চলে গেছে মিরপুর ডিএইচএসে। অপরটি কালশীতে সাংবাদিক আবাসিক এলাকার পাশে নেমেছে।  

ফ্লাইওভারটি নির্মিত হয়েছে সরকারি অর্থায়নে। এতে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ১২ কোটি ১১ লাখ টাকা। ১ দশমিক ৭ কিলোমিটারে ফ্লাইওভারের প্রকল্পে সড়ক, ফুটপাত এবং ড্রেনের উন্নয়ন কাজও করা হয়েছে। ৩ দশমিক ৭ কিলোমিটার সড়ক, ফুটপাত প্রশস্তকরণ, সড়ক বিভাজক তৈরি এবং ড্রেন নির্মাণ ও কমিউনিকেশন ডাক্টও তৈরি করা হয়েছে।  

এই প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় সাড়ে ১৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এই প্রকল্পটির স্বত্বাধিকারী সংস্থা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
জেডএ/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।