ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ধুমধাম করে প্রতিবন্ধী তরুণ-তরুণীর বিয়ে দিলেন এলাকাবাসী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪২ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০২৩
ধুমধাম করে প্রতিবন্ধী তরুণ-তরুণীর বিয়ে দিলেন এলাকাবাসী

রাজবাড়ী: রাজবাড়ী পাংশা উপজেলায় ধুমধাম করে দুই বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর বিয়ে দিয়েছেন এলাকাবাসী।

শুক্রবার (৭ জুলাই) জুম্মার নামাজের পর ৫০ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়।

বিয়ের যাবতীয় খরচ বহন করেন বর পক্ষের এলাকার লোকজন।

বর কাঞ্চন সরদার (২৫) পাংশা পৌরসভার সত্যজিৎপুর গ্রামের মৃত কাদের সরদারের ছেলে ও কনে পূর্ণিমা খাতুন (১৮) কালুখালী উপজেলার মাঝবাড়ী ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামের দিনমজুর মো. হিলা শেখের মেয়ে।

জানা গেছে, সত্যজিৎপুর গ্রামের মৃত কাদের সরদারের ছেলে কাঞ্চন সরদার জন্ম থেকেই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। চার ভাই বোনের মধ্যে কাঞ্চন সবার বড়। বাবা মারা যাওয়ার পর কাঞ্চনের মা অন্যত্র বিয়ে করে চলে যায়। সঙ্গে নিয়ে যায় তার আরেক বোনকে। সংসারে দুই ভাই এক বোনের মধ্যে কিছুদিন আগে তার মেজ ভাই বিয়ে করে। কাঞ্চন বড় হলেও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিয়ে করা হচ্ছিল না তার।

অন্যদিকে মো. হিলা শেখের চার মেয়ের মধ্যে পূর্ণিমা খাতুন তৃতীয়। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় তারও বিয়ে হচ্ছিল না।  

কাঞ্চন সরদারের বিয়ের জন্য মেয়ে না পাওয়ায় ঘটকালি শুরু করেন তার প্রতিবেশী বাচ্চু শেখ। খুঁজে বের করেন পূর্ণিমা খাতুনকে। পরে মেয়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিয়ের দিন ধার্য করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি জানানো হয় কাঞ্চনের গ্রামের মানুষকে।

কাঞ্চনের প্রতিবেশী পাংশা মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক সিনিয়র সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, কাঞ্চন সরদার সে ভিক্ষাবৃত্তি করে খায়। তার আসলে বিয়ে করার মতো কোনো অর্থ বা সামর্থ্য নেই। তাই যখন জানতে পারি যে তার বিয়ে ঠিক হয়েছে তখন আমরা এলাকাবাসী মিলে চাঁদা তুলে এলাকার সুশীল সমাজের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বিয়ের প্রস্তুতি গ্রহণ করি। বিয়ের দিন বর কাঞ্চনসহ ১০ জন বরযাত্রী নিয়ে আমরা কনের বাড়িতে যাই ও পূর্ণিমার বাবার সামর্থ্য না থাকায় বিয়ের সমস্ত খরচ আমরাই বহন করি।

প্রতিবেশী বাচ্চু শেখ বলেন, কাঞ্চন যখন বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজে পাচ্ছিল না বা কেউ তার সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দিতে চাচ্ছিল না তখন আমি জানতে পারি ওই গ্রামে পূর্ণিমা নামে একটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ে রয়েছে। পরে আমি তার বাবার সঙ্গে কথা বলে বিয়ের দিন ধার্য করি এবং গ্রামের মানুষের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে চাঁদা তুলে বিয়েটার আয়োজন করি। পরে শুক্রবার শরিয়ত মোতাবেক তাদের বিয়ে সম্পন্ন করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় এখন তারা ভালোই আছে।

তিনি আরও বলেন, রোববার কাঞ্চনের বাড়িতে বৌভাতের আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।