ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পাবলিক মানি বেড়ে যাওয়ায় দুর্নীতির মাত্রা বেড়েছে: পরিকল্পনামন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
পাবলিক মানি বেড়ে যাওয়ায় দুর্নীতির মাত্রা বেড়েছে: পরিকল্পনামন্ত্রী

ঢাকা: পাবলিক মানি (সরকারি অর্থ) ৩০ থেকে ৪০ বছর আগের তুলনায় দুই থেকে চার গুণ বেড়ে যাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির মাত্রা আগের তুলনায় বেড়েছে। এমনটি বলেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি বিল–২০২৩ পাসের আলোচনায় দুনীতি প্রসঙ্গে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের আলোচনার পর পরিকল্পনামন্ত্রী তার বক্তব্যে এ কথা বলেন। এর আগে, বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরাম ও জাতীয় পার্টির একাধিক সংসদ সদস্য বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ করেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, একটি বিষয়ে তারা (আলোচনায় অংশ নেওয়া সংসদ সদস্যরা) সবাই একমত, আমিও তাদের সঙ্গে একমত। সারা দেশে সর্বত্র, অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির মাত্রা আগের তুলনায় আনুপাতিক হারে বেড়েছে। যে পরিমাণ পাবলিক মানি ৩০-৪০ বছর আগে ব্যয় হতো, এখন সেই তুলনায় দুই, তিন, চারগুণ বেশি ব্যয় হচ্ছে। ফলে সুযোগ-সুবিধা, চুরির সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। এটি জাতীয় সমস্যা। আইন-কানুন পাস করে, বর্তমান প্রযুক্তি ব্যবহার করে, জনমত তৈরি করে, জনগণের কাছে স্বচ্ছতা তুলে ধরে প্রচার চালালে এর পরিমাণ ক্রমান্বয়ে কমে আসবে।

তিনি বলেন, হাজার হাজার লাখ লাখ কোটি টাকার প্রকল্প আমার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাস হয়ে যায়। এগুলোর জন্য এক সময় ক্রয়ে যেতে হয়। অতীতের যে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) ছিল, তা বর্তমান সময়ে ভলিউমের সঙ্গে সক্ষমতা দেখাতে পারছে না। তাদের জনবল, যন্ত্রপাতির অভাব, অনেক ক্ষেত্রে তাদের অভিজ্ঞতার অভাব। সেই সমস্যার সমাধানে বিলটি আনা হয়েছে।  

এর আগে দেওয়া বক্তব্যে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, এখন টেন্ডারবাজি বন্ধ হয়েছে। কিন্তু তাতে রাষ্ট্রের কোনো লাভ হয়নি। এক শ্রেণির আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ বর্তমান টেন্ডার ব্যবস্থাকে নিরাপদ মনে করেন এবং এর আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছেন। এর ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে, পর্দা কেনা, বালিশ কেনা...।

জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, এই আইনের মূল উদ্দেশ্য টেন্ডারবাজি বন্ধ করা। আগে ১০ শতাংশ, ২০ শতাংশ দুর্নীতি হতো। আর এখন ১০ শতাংশ, ২০ শতাংশ কাজ হয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ দুর্নীতি হয়। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প, মেগা প্রকল্প ওনার (পরিকল্পনামন্ত্রী) কাছ থেকে যখন যায়, তখন তিনি যদি আটকাতে পারতেন, তাহলে দেশের অর্থনীতি, আমাদের কাছে অনেক টাকা থাকত।  

পাস হওয়া বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি বিল–২০২৩ এ বলা হয়েছে, এই আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) বিলুপ্ত হবে। বিপিপিএর ১৭ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। তবে সরকার চাইলে সদস্য সংখ্যা বাড়াতে-কমাতে পারবে। পরিকল্পনামন্ত্রী হবেন এই কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। আর সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ কাউকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ করবে সরকার। এই কর্তৃপক্ষের একটি তহবিল থাকবে। বিপিপিএ তার কাজ সম্পাদনের জন্য যেকোনো ব্যক্তি বা সংস্থার জন্য চুক্তি সম্পাদন করতে পারবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
এসকে/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।