ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রেল উদ্বোধন: নির্বিঘ্নে ঢাকা যাওয়ার নতুন পথ খুলছে আজ

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
রেল উদ্বোধন: নির্বিঘ্নে ঢাকা যাওয়ার নতুন পথ খুলছে আজ পদ্মা রেল সেতু

মাদারীপুর: পদ্মা সেতু চালুর পর রাজধানী ঢাকা যাওয়া-আসায় ঘাটের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের দোর গোড়ায় এখন রাজধানী ঢাকা।

 

তবে ঢাকা যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে পদ্মা পাড়ের শিবচর উপজেলাসহ আশপাশের মানুষের বড় ভোগান্তি অনুন্নত পরিবহন সেবা এবং ঢাকায় প্রবেশের যানজট। এবার এই অসুবিধা থেকেও মুক্তি মিলছে এই অঞ্চলের মানুষের।  

মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে যোগাযোগের নতুন দিগন্ত খুলছে পদ্মা পাড়ের মানুষের জন্য। বিশেষ করে শরীয়তপুরের জাজিরা, মাদারীপুরের শিবচর, ফরিদপুরের ভাঙ্গাসহ আশপাশের এলাকার মানুষের জন্য রাজধানী ঢাকায় যাওয়া-আসায় রেল হবে অন্যতম বাহন বলে মনে করেন তারা। বাসের তুলনায় কম ভাড়া, যানজট এড়িয়ে ঢাকা পৌঁছানো এবং রেলযাত্রা আরামদায়ক হওয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যমে পরিণত হবে এই ট্রেন। এমন অভিমত পদ্মা পাড়ের শিবচরসহ আশপাশের এলাকার মানুষের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত দীর্ঘ ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মিত হচ্ছে।  

এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ঢাকা-মাওয়া ৪০ কিলোমিটার ও মাওয়া-ভাঙ্গা ৪২ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধন হচ্ছে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর)। আর প্রকল্পের তৃতীয় অংশের ভাঙ্গা-যশোর ৮৭ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ কাজ ২০২৪ সালের জুনে শেষ হবে। এ অংশের কাজের অগ্রগতি ৭৮ ভাগ হয়েছে বলে জানা গেছে।  

এই প্রকল্পের রেলপথে ৩২টি কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডারপাস, ১৩টি রেল সেতু রয়েছে। ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৪২ দশমিক ২ কিলোমিটার রেলপথে পাথরবিহীন রেলপথ রয়েছে ১৩ দশমিক ৩ কিলোমিটার ও ২৮ দশমিক ৯ কিলোমিটার রয়েছে পাথরযুক্ত। এই রেলপথে ১টি জংশন ও ৪টি স্টেশন রয়েছে। পদ্মা সেতু পার হয়ে পদ্মা স্টেশন, এর পর শিবচরের বাচামারা এলাকার এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন শিবচর স্টেশন এবং এর পরেই রয়েছে ভাঙ্গা উপজেলার বামনকান্দা স্টেশন।  

মঙ্গলবার রেল উদ্বোধন ঘিরে পদ্মা পাড় থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত যেন এক রকম উৎসব বইছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। আনন্দ-উদ্দীপনা আর কৌতূহল রয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। ভাঙ্গা উপজেলার বামনকান্দা স্টেশন সংলগ্ন সড়কে কথা হয় এক ইজিবাইক চালকের সঙ্গে। মো.আহসান নামের ইজিবাইক চালক বলেন, এখন পর্যন্ত ট্রেনে উঠি নাই। শুনেছি ট্রেনে শান্তিতে যাতায়াত করা যায়। এবার ঢাকা যাব ট্রেনে। বাড়ির কাছ থেকে ট্রেনে উঠে ঢাকা যেতে পারবো। বেশ আনন্দ লাগছে। '

মো.হৃদয় হাসান নামে এক তরুণ বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেন আসবে আমাদের এলাকায়। এখান থেকে ট্রেনে চড়ে আমরা ঢাকা যেতে পারবো। আমি মনে করি নির্বিঘ্নে ঢাকা যাওয়ার নতুন এক পথ খুলছে আজ। আমরা গর্বিত।

এদিকে রেল উদ্বোধনকে আনন্দঘন করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ রেল লাইন সংলগ্ন সড়কে ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে সাজিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে অসংখ্য নেতাকর্মী ও সমর্থক শিবচরের পদ্মা স্টেশন থেকে শুরু করে রেললাইনের সড়কে অবস্থান নিয়েছে। এসময় রঙিন টি-শার্ট ও প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগানে মুখরিত করে তুলছে সড়ক-মহাসড়ক।

শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. সেলিম বলেন, শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শিবচরের পদ্মা ও শিবচর স্টেশন, রেল লাইন সংলগ্ন এলাকায় অসংখ্য ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। নৌকার প্রতিকৃতি টাঙানো হয়েছে। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসব বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে আমার মাঠে রয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।