ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মাদারীপুরে সড়কে অবৈধ যানবাহনের দাপট, ঘটছে প্রাণহানি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪
মাদারীপুরে সড়কে অবৈধ যানবাহনের দাপট, ঘটছে প্রাণহানি

মাদারীপুর: মাদারীপুর জেলার শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামের সড়ক-মহাসড়কে যত্রতত্র চলাচল করছে অবৈধ নানা রকম যানবাহন। ইটভাটার মাটি, বালু, ইট বহনকারী অনুমোদনবিহীন ট্রাক্টর (ট্রলি), মাহেন্দ্রা এবং শ্যালো ইঞ্জিনচালিত অবৈধ যানবাহন দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে সড়ক-মহাসড়ক।

ফলে একের পর এক ঘটছে দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি!। এসব যানবাহনের কারণে নষ্ট হচ্ছে সড়ক, দ্রুত গতিতে চলাচল করায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার শিবচর, সদর, কালকিনিসহ জেলার প্রত্যন্ত এলাকা বিশেষ করে নদীকেন্দ্রিক এলাকাগুলোতে মাটি, বালু নিয়ে দিনরাত চলাচল করছে এসব যানবাহন। অপরিপক্ব চালক, নিয়ন্ত্রণহীন গতির ফলে প্রায়ই ঘটছে নানা ধরনের দুর্ঘটনা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক।

স্থানীয়দের দাবি অবৈধ যানবাহনের মালিকরা প্রশাসনকে নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে থাকে। সে কারণেই বন্ধ হচ্ছে না এই অবৈধ যানবাহন। তবে প্রশাসনের কাছে এসব অনুমোদনবিহীন বালু ও ইটবাহী মাহেন্দ্রা, ট্রাক্টর এবং শ্যালো ইঞ্জিনচালিত গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।  

জানা গেছে, গত ২৮ জানুয়ারি অবৈধ মাহিন্দ্রের ধাক্কায় মাদারীপুর জেলার কালকিনিতে মো. নেছার উদ্দিন হাওলাদার (৩৮) নামে এক আইনজীবীর সহকারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে নিহতের স্বজনেরা ও স্থানীয় জনতা সড়ক অবরোধ করে এবং ওই ঘাতক মাহিন্দ্রটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন।  

এদিকে কয়েক মাস আগে জেলার ডাসার থানার বালিগ্রাম ইউনিয়নের ধুলগ্রাম নামকস্থানে রেজাউল করিম বারেক নামে এক মুক্তিযোদ্ধা ইটবাহী নছিমনের ধাক্কায় নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত ছাড়াও ছোটখাটো দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। আহত হচ্ছেন অনেকে।

সরেজমিন দেখা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত কয়েকশত অনুমোদনবিহীন বালু ও ইটবাহী মাহেন্দ্রা, ট্রাক্টর এবং শ্যালো ইঞ্জিনচালিত গাড়ি চলছে সড়ক-মহাসড়ক দিয়ে। এই অতিরিক্ত ওজনের মাটি, ইট ও বালু বহনের কারণে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা সড়কগুলোর কার্পেটিং উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বেড়েছে জনদুর্ভোগ। মাটি, বালু ও ইট টানার কাজে ব্যবহৃত এসব ট্রাক্টর এবং তিন চাকার যান সড়ক-মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এসব যানবাহনের চালকদের নেই কোনো লাইসেন্স।

স্থানীয়রা জানান, মাদারীপুরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে প্রতিনিয়ত অবৈধ যানবাহন চলাচল করে। গ্রামের রাস্তায় বিকট শব্দ ও গতি নিয়ে চলে এসব গাড়ি। চালকেরাও বখাটে প্রকৃতির কিশোর-যুবক। সাধারণ মানুষের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। স্কুলগামী শিশুদের সড়ক পারাপারে উদ্বিগ্ন থাকতে হয়। এসব অবৈধ যানবাহনের দুর্ঘটনায় প্রায়ই লোকজন মারা যাচ্ছেন।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, ইটভাটার মাটি, বালু ও ইট বহনের ট্রাক্টরের চাকায় কোটি কোটি টাকার সড়ক নষ্ট হচ্ছে। মারাত্মক শব্দদূষণ ও ধুলাবালির প্রভাব পড়ছে পরিবেশের উপর। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। তাই এইসব গাড়ির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান জানান, অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ যানবাহনকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। তাছাড়া পুলিশ কোনো মাসোহারা নেয় না। আমরা এসব যানবাহন বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।