ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শাহবাগ-ঢাবি-শহীদ মিনার ফাঁকা, দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২৪
শাহবাগ-ঢাবি-শহীদ মিনার ফাঁকা, দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি

ঢাকা: শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে শুরু হওয়া আন্দোলনটি এখন রূপ নিয়েছে সরকার পতনের। গত কয়েকদিন ধরে বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবিতে ছাত্র-জনতা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও, শনিবার (৩ আগস্ট) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের এক দফা ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।

ছাত্র-জনতার এই সমাবেশ ঘিরে দিনভর স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত ছিল শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা। বিকেলে হাজার হাজার ছাত্র জনতার জনস্রোতে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল শহীদ মিনার এলাকা। সমাবেশ শেষে সন্ধ্যার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও শাহবাগ এলাকায়ও ছিল দেখার মতো ছাত্র জনতার ভিড়। তবে রাতে এসব এলাকায় কোনো আন্দোলনকারীকে দেখা যায়নি। বরং ফাঁকা দেখা গেছে শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শহীদ মিনার এলাকা। তবে বিভিন্ন দেয়ালে ও মেট্রোরেলের পিলারে দেখা গেছে সরকার বিরোধী নানা গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন।

শনিবার (০৩ আগস্ট) দুপুর দেড়টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শহীদ মিনার ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, এদিন দুপুর দেড়টা থেকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন। ক্ষণে ক্ষণে বাড়তে থাকে সেই জনস্রোত। এক পর্যায়ে শহীদ মিনার এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। পায়ে হাঁটার পাশাপাশি রিকশা, সিএনজিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে শহীদ মিনারে আসেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে ছিলেন অভিভাবকরাও। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষক এমনকি রিকশাচালকরাও সমাবেত হন এই সমাবেশে। যেন জনমানুষের ঢল নেমেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। বিকেলে এক পর্যায়ে সমাবেশ যোগ দেওয়া জনমানুষের ভিড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রাঙ্গণ থেকে ছড়িয়ে যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জগন্নাথ হল পর্যন্ত।

এ সময় সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে শহীদ মিনারের আশপাশের এলাকা। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রিকশাচালকদেরও স্লোগানে দিতে দেখা যায়।

বিকাল সাড়ে ৫টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

এরপর ভাগে ভাগে সমাবেশ স্থল থেকে মিছিল নিয়ে বিভিন্ন দিকে চলে যায় আন্দোলনকারীরা। যার একটি বড় অংশ এসে জড়ো হয় টিএসসির রাজু ভাষ্কর্যের নিচে এবং শাহবাগে। এ সময় শাহবাগে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ধীরে ধীরে আন্দোলনকারীরা যে যার গন্তব্যে চলে যান। রাত ৯টার দিকে শাহবাগ পুরো ফাঁকা হয়ে যায়। সর্বশেষ রাত সাড়ে ৯টার দিকে ৪০-৫০ জনের একটি মিছিল দোয়েল চত্ত্বর থেকে এসে টিএসসি হয়ে বুয়েটের দিকে চলে যেতে দেখা যায়। যাদের বেশিরভাগকেই ছিলেন কিশোর।

এরপর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত শাহবাগ-শহীদ মিনার ও টিএসসিতে কোনো আন্দোলনকারীকে দেখা যায়নি। শাহবাগ দিয়ে সীমিত পরিসরে গণপরিবহনসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে রিকশা ও মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য তেমন কোনো যানবাহন দেখা যায়নি। রাত ১১টায় শাহবাগ থানার সামনে ১৫-২০ জন পুলিশ সদস্যকে রাস্তার ওপর চেয়ারে বসে ঘুমাতে দেখা যায়।

এদিকে শাহবাগ-শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বিভিন্ন দেওয়াল ও মেট্রোরেলের পিলারে সরকার বিরোধী বিভিন্ন গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন দেখা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২৪
এসসি/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।