ঢাকা, রবিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বগুড়ায় আন্দোলনে নিহত ৩ পরিবার পেল বসুন্ধরা শুভসংঘের সহায়তা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২৪
বগুড়ায় আন্দোলনে নিহত ৩ পরিবার পেল বসুন্ধরা শুভসংঘের সহায়তা

বগুড়া: বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শ্রমজীবী তিন পরিবারের হাতে খাদ্য সহায়তা তুলে দিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ।

সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুরে ওই তিন পরিবারের হাতে খাদ্য সহায়তা তুলে দেন বসুন্ধরা শুভসংঘ বগুড়া জেলা শাখার সদস্যরা।

বগুড়া শহরের চক আকাশতারা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন কমর উদ্দিন বাঙ্গি (৪০)। তিন ছেলে মেয়ে, বৃদ্ধা মা ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জীবিকা নির্বাহে রিকশা চালাতেন বাঙ্গি। গত ৫ আগস্ট রিকশা নিয়ে বের হন তিনি। এরপর সংঘর্ষ শুরু হলে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান বাঙ্গি।

এক মেয়ে, দুই ছেলে ও বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে চরম সংকটে পড়েছেন তার স্ত্রী কমেলা বেগম (২৯)। বিষয়টি জানার পর বসুন্ধরা শুভসংঘ তার বাড়িতে হাজির হয় খাদ্য সহায়তা নিয়ে। ২০ কেজি চাল, দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি পেঁয়াজ, এক কেজি মসুরের ডাল ও কিছু সবজি তুলে দেওয়া হয় পরিবারের সদস্যদের হাতে। এসময় আবেগে কোনো কথাই বলতে পারেননি বাঙ্গির মা ও স্ত্রী।

তাদের প্রতিবেশী সামসু মিয়া বলেন, একে তো পরিবারটির কোনো উপার্জন নেই, তার ওপর মেয়েটাও বড় হচ্ছে। এখন কী করবে তার বৃদ্ধা মা ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, এটা নিয়ে এলাকাবাসী চিন্তিত।

বগুড়া শহরের দক্ষিণ বৃন্দাবনপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন শিমুল মণ্ডল মতি (৪৫)। দর্জি শ্রমিক মতির মেয়ে স্নাতকে এবং ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়েন। ৫ আগস্ট মার্কেটে কাজে যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি।

তার বৃদ্ধা মা মোকসেদা বেগম বলেন, এভাবে তরতাজা ছ্যোলডা বের হয়ে যায়া লাশ হয়া ফিরবি, সেডে তো হামরা জানতাম না। তার দুই ব্যাটা-বেটির লেখাপড়া, সংসার খরচ কী করে চলবি অ্যাখন সেই চিন্তায় হামাকেরে দিন যাচ্ছে।

বগুড়া সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের কুটুরবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন মাহফুজার রহমান (৩১)। ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করতেন। আন্দোলনের কারণে কাজ বন্ধ হওয়ায় গ্রামে ফেরেন। ৫ আগস্ট বগুড়া শহরের আন্দোলন দেখতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে হাসপাতালে মারা যান মাহফুজার। এখন ছয় বছরের মেয়েকে নিয়ে চরম সংকটে দিন কাটছে তার স্ত্রী রিপা আকতারের।

নিহত এ তিনজনের পরিবারে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন বগুড়া শুভসংঘের সাধারণ সম্পাদক আশফাক উর রহমান চন্দন, সহসাধারণ সম্পাদক রায়হান সিদ্দিকী সজল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক হারুনর রশীদ, মেঘলা, নাহিদ, শান্ত, সনিসহ অন্যান্য শুভার্থী।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২৪
কেইউএ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।