ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের বৈষম্য নিরসনে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২৪
দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের বৈষম্য নিরসনে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি

ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল। এ অঞ্চলে বৈষম্য নিরসন ও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ আন্দোলন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

তারা বলেছেন, ওই অঞ্চলের সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মান আরও নাজুক হবে। যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন পরিবেশ আন্দোলন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

উন্নয়ন সংস্থা ‘লিডার্স’ এবং ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র। মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল।

আলোচনায় অংশ নেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) সদস্য সচিব শরীফ জামিল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রসুল, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী, নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ ও কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সংগঠক সাকিলা পারভীন, লিডার্সের অ্যাডভোকেসি অফিসার তমালিকা মল্লিক প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ কবলিত দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের (খুলনা-সাতক্ষীরা-বাগেরহাট) বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবনায় মোহন কুমার মণ্ডল বলেন, ওই এলাকার সামগ্রিক ও টেকসই উন্নয়নে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।

তিনি বলেন, স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। ওই এলাকার প্রতিটি বাড়িকে দুর্যোগ সহনশীল করে গড়ে তুলতে হবে। সুপেয় পানির স্থায়ী সমাধানে বৃষ্টির পানির সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। নদী ও জলাশয়কে অবৈধ দখলমুক্ত করতে হবে। সুন্দরবন সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। জলবায়ু তহবিলের অর্থ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই এলাকায় বরাদ্দ দিতে হবে এবং তা ব্যবহারে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ধরার সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে অঞ্চল দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল। এ অঞ্চল প্রকৃতিগতভাবে একটি ঐশ্বর্যপূর্ণ ও ভূ-রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই উপকূল ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় মানুষের অভিজ্ঞতা ও বিজ্ঞানকে কাজে লাগাতে হবে। বৈষম্য নিরসনের পাশাপাশি অনাচার বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় আমাদেরকে ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি হতে হবে। বাংলাদেশের পাশাপাশি সমগ্র দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

উপকূলের উন্নয়নে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বাপার যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রসুল বলেন, এই অঞ্চলটি দীর্ঘ অবহেলার শিকার। জলবায়ু পরিবর্তন, নদী ভাঙন, লবণাক্ততার বৃদ্ধি এবং পরিকল্পিত অবকাঠামোর অভাবে মারাত্মক সংকটে আছে সেখানকার জনগণ। তাই উপকূলের উন্নয়নে একটি দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, দুর্যোগের পূর্বাভাস দেওয়ার পর থেকে সাগরে না যাওয়া জেলেদের জীবন-জীবিকার বিষয়ে ভাবতে হবে। এনার্জির নামে উপকূলের নদীগুলোকে ধ্বংস করায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ইলিশের ওপর নির্ভরশীল জেলেরা। তাছাড়া জাহাজ চলাচলের কারণে নদীতে ছোট নৌকা নিয়ে যাওয়া জেলেদের মাছ ধরাই অনেকাংশে বন্ধ হয়েছে। ফলে ওই নদীর জেলেরা মালিক থেকে সাগরের মাছ ধরা জাহাজের শ্রমিকে পরিণত হচ্ছে। এ সকল সংকট নিরসনে সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২৪
টিএ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।