ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ঐক্য বিনষ্ট হতে দেওয়া যাবে না: ইশরাক হোসেন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৫
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ঐক্য বিনষ্ট হতে দেওয়া যাবে না: ইশরাক হোসেন

মেহেরপুর: বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, এদেশে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, জামায়াতসহ ছোট বড় অনেক দল রয়েছে। তাদের ভিন্ন ভিন্ন মত ও আলোচনা থাকতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের অধিকারের প্রশ্নে আমরা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, সেই ঐক্যকে কোনোভাবে বিনষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মঠমুড়া ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর ফার্স্ট চয়েজ মডার্ন স্কুল, হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা কর্তৃক আয়োজিত নবীনবরণ ও নবনির্মিত ভবন এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মোহাম্মদপুর ফার্স্ট চয়েজ মডার্ন স্কুল, হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার চেয়ারম্যান রাশেদ গনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নবীনবরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, মেহেরপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ২ (গাংনী) আসনের সাবেক এমপি মো. আমজাদ হোসেন, আল্লামা দেলোওয়ার হোসেন সাঈদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শামীম সাঈদী, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রেজা আহমেদ বাচ্চু, বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির জনশক্তি উন্নয়ন বিষয়ক সহ-সম্পাদক অর্পনা রায় দাস প্রান্তি, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইছাহাক সরকার, গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে খুনি হাসিনা সরকার অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছিল। তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করার ফলে তিনি শারীরিকভাবে সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছিলেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যে চিকিৎসাধীন। তিনি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আবারও বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনবেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা দেলোওয়ার হোসেন সাঈদীকে মিথ্যা অপবাদ ও মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে চিকিৎসা বঞ্চিত করে হত্যা করা হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েস্বর চন্দ্র রায়কে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে। খুনি হাসিনা ও আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকারকে বিশ্বাস করে না। তারা আওয়ামী লীগের বাইরে যারা রয়েছে তাদের মানুষ মনে করে না, দাস মনে করে, প্রজা মনে করে। তারা এই দেশটাকে তাদের বাবার সম্পত্তি মনে করে। তারা যা বলবে সেটাই মেনে নিতে হবে। এই দেশের অর্থ সম্পদ তাদের বাবার সম্পত্তি। সেটা যেভাবে ইচ্ছে ব্যবহার করবে, লুটপাট করে বিদেশে পাচার করবে। হাসিনার আমলের লুটপাট, জনগণের ওপর অন্যায় অত্যাচার জুলুমের ফিরিস্তি তুলে ধরতে গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগবে।

তিনি বলেন, খুনি হাসিনার পরিবারের সদস্যদের এখন বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি পাওয়া যাচ্ছে। এদেশে দুর্নীতি করে সম্পত্তি লুটপাট করে নিয়ে গেছে। লুটপাটের সেই সম্পত্তি থাকলে আজ বাংলাদেশে হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব হতো। এদেশের গ্রামীণ জনপদ আজ পিছিয়ে পড়া জনপদ থাকতো না। বাংলাদেশের দারিদ্র্য, অর্থকষ্ট ও অভাব দূর করা যেত।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থ সম্পদ ফিরিয়ে এনে এদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী দেশ গড়তে চাই। এটাই আমাদের ওয়াদা এটাই আমাদের  প্রতিশ্রুতি।

ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক বলেন, ঐক্যের প্রতীক খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে ঐক্যের প্রতীক হয়ে সব দলমত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এক করার ক্ষেত্রে যে পথ রচনা করেছিলেন সেই ধারাবাহিকতায় জুলাই-আগস্ট বিপ্লব হয়েছে। জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ পেয়েছি, তরুণ প্রজন্মের একজন প্রতিনিধি হিসেবে বলবো, তারেক রহমান দেশ গড়ার যে ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন, বিএনপির সেই কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে।  
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এদেশের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে আসছে। ভারত যে আগ্রাসন চালিয়ে আসছে সেই আগ্রাসন রুখে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।  

বিএনপি, জামায়াতসহ ছোট বড় অনেক দলের ভিন্ন ভিন্ন মত ও আলোচনা থাকতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের অধিকারের প্রশ্নে আমরা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, সেই ঐক্যকে কোনোভাবে বিনষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।

এসময় তিনি জুলাই আগস্টের সংগঠিত গণহত্যায় শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও আহতদের সুস্থতা কামনা করেন। পরে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিশিষ্ট বক্তা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কবির বিন সামাদ। অনুষ্ঠানে এলাকার হাজার হাজার নারী পুরুষ যোগদান করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।