ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বিপুর ঘনিষ্ঠ অনুচর সেলিম হচ্ছেন আরপিসিএল এমডি

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
বিপুর ঘনিষ্ঠ অনুচর সেলিম হচ্ছেন আরপিসিএল এমডি

রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হতে যাচ্ছেন কোম্পানির বর্তমান নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম ভূঁইয়া। ছলচাতুরীর মাধ্যমে তিনি এ পদে অধিষ্ঠিত হতে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

সরকারি কোম্পানিগুলোতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিয়োগের বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৬০ বছর হলেও, সেলিম ভূঁইয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ আইন করে বয়সসীমা শিথিল করা হয়েছে। তার বর্তমান বয়স ৬১ বছর ৭ মাস, যা নিয়ম অনুযায়ী তাকে অযোগ্য করে তোলে।

আরপিসিএলের নিয়ম অনুযায়ী, সেলিম ভূঁইয়ার আর মাত্র ৫ মাস পর অবসর নেওয়ার কথা।

তবে তাকে এমডি পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য শর্ট লিস্ট থেকে আরপিসিএলের বাইরের ৭ জন যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে। শর্ট লিস্টে থাকা অন্য দুই প্রার্থী সেলিম ভূঁইয়ার অধীনস্ত দুই চিফ ইঞ্জিনিয়ার। এতে স্পষ্ট যে, ইন্টারভিউ কেবল একটি প্রক্রিয়ামাত্র এবং সেলিম ভূঁইয়াকেই এমডি করা হবে। ইন্টারভিউ ৬ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত হয়েছে।

জানা যায়, সেলিম ভূঁইয়া সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ঘনিষ্ঠ অনুচর। গত ১১ বছর ধরে তিনি আরপিসিএলের বিভিন্ন পদে দাপটের সাথে কাজ করছেন। বিপুর আস্থাভাজন হিসেবে সেলিম ভূঁইয়াকে আরপিসিএল এবং শেনজেনস্টারের যৌথ উদ্যোগ বিপিএমসির সিইও হিসেবেও নিয়োগ দেওয়া হয়। শেনজেনস্টারের সঙ্গে বিপুর শ্যালকের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল।

শেনজেনস্টার বিপিএমসিকে প্রতি মিটারের যন্ত্রাংশ ৬ ডলার বেশি দামে সরবরাহ করে, যা থেকে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সেলিম ভূঁইয়া এই প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, আরপিসিএলের বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

ময়মনসিংহ ৩৬০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং জামালপুর ১০০ মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের মতো বড় প্রকল্পগুলোতে সেলিম ভূঁইয়া বিপুর পছন্দের কম্পানিগুলোকে কাজ দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, কনসালটেন্ট নিয়োগেও পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকারের পতনের পর সেলিম ভূঁইয়া রাতারাতি রাজনৈতিক রূপ পরিবর্তন করে বিএনপির সমর্থক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি এখন বিএনপির নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করছেন।

বিশেষজ্ঞ মহল মনে করেন, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। তাই, নিয়মনীতি মেনে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত। সেলিম ভূঁইয়ার নিয়োগ যেন কোনোভাবেই দুর্নীতি ও পক্ষপাতের শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।

এই ঘটনাটি আরপিসিএলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশ্নে একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ যেন প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন না করে, সে দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।

সৌজন্যে কালের কণ্ঠ

বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৫
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।