ঢাকা, শুক্রবার, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

উত্তরায় দুইজনকে কোপানোর ঘটনায় জড়িত চক্রের সবাই গ্রেপ্তার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫
উত্তরায় দুইজনকে কোপানোর ঘটনায় জড়িত চক্রের সবাই গ্রেপ্তার ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ঢাকা: রাজধানীর উত্তরা এলাকায় মেহেবুল হাসান (৩৭) ও নাসরিন আক্তার ইপ্তিকে (২৮) প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানোর চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত পুরো চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।  

গ্রেপ্তাররা হলেন - মো. মোবারক হোসেন (২৫), রবি রায় (২২), মো. আলফাজ মিয়া ওরফে শিশির (২২), সজীব (২০) ও  মেহেদী হাসান সাইফ (২৪)।

 

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ৯ নং রোডের ১০ নম্বর বাসার সামনে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ওই দুইজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। তখনই খবর পেয়ে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের একটি সেখানে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় ঘটনায় জড়িত মো. মোবারক হোসেন ও রবি রায়কে গ্রেপ্তার করে।

এ ঘটনায় ভিকটিম নাসরিন আক্তার ইপ্তি বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সেদিন মেহেবুল ও ইপ্তি উত্তরা পশ্চিম থানাধীন আমির কমপ্লেক্স থেকে কেনাকাটা করে বাসায় ফেরার সময় ১০ নম্বর ওই বাসার সামনে পৌঁছেন। এ সময় সেখানে তিন ব্যক্তি দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে বিকট শব্দ করে দ্রুতগতিতে এলোমেলোভাবে চালিয়ে যাওয়ার সময় সামনে থাকা একটি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। সে সময় রিকশায় চার বছরের একটি শিশু তার মায়ের সঙ্গে ছিল। শিশুটির বাবা রিকশা থেকে নেমে মোটরসাইকেলচালক মো. মোবারক হোসেনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু করেন। ওই সময় রিকশার পেছনে থাকা মেহেবুল-নাসরিন তাদের ঝামেলা করতে নিষেধ করেন। সেসময় রিকশার যাত্রীরা চলে যান।  

কিন্তু মোটরসাইকেলে থাকা তিনজন মেহেবুলের সঙ্গে তর্ক শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে তাকে মারধর শুরু করেন। এ সময় তারা বলতে থাকেন, ‘আমাদের চিনিস? আমরা কে?’। সে সময় ভিকটিমরা আশপাশের লোকজনের সহযোগিতায় আক্রমণকারী একজনকে ধরে ফেলেন এবং তার মোটরসাইকেল আটক করেন। তখন ফোনকল করে আটক যুবক তার আরও কয়েকজন সহযোগীকে ডেকে নিয়ে আসেন। তারা দেশীয় অস্ত্র রামদাসহ ঘটনাস্থলে এসে মেহেবুল হাসানকে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। এ সময় মেহেবুলকে বাঁচাতে নাসরিন চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাকেও রামদা দিয়ে আঘাত করে। এতে তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত পান। সংবাদ পেয়ে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের টহল টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার সহায়তায় মোবারক হোসেন ও রবি রায়কে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ আহত দুজনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন।

এদিকে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আব্দুল্লাহপুর পশ্চিম পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভিকটিমদের কুপিয়ে আহত করা আসামি আলফাজ মিয়া ওরফে শিশিরকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার হেফাজত থেকে ঘটনার সময় তার পরিহিত হালকা জলপাই রঙের একটি ফুলহাতা শার্ট জব্দ করা হয়। আলফাজের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকা থেকে সজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর আসামি মেহেদী হাসান সাঈফকে গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন মাজার বস্তি এলাকা থেকে ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়। সাঈফের হেফাজত থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল ও ঘটনার সময় তার পরিহিত একটি শার্ট জব্দ করা হয়।  

এছাড়া গ্রেপ্তার আলফাজ মিয়া ওরফে শিশির ও মেহেদী হাসান সাইফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তুরাগ নদীর পাড় থেকে আজ দুটি রামদা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা,  ফেব্রুয়ারি ১৯,  ২০২৫
এজেডএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।