শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের কীর্তিনাশা নদীতে বাল্কহেডে ডাকাতির চেষ্টার সময় গণপিটুনিতে নিহত বেড়ে তিনজন হয়েছে। এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে।
শনিবার (১ মার্চ) রাতে পালং মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে ও ডাকাতির প্রস্তুতির অভিযোগে দুটি মামলা করেন।
মামলায় ডাকাত সন্দেহে পিটুনিতে আহত ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনকে আসামি করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর তীরে গণপিটুনির এ ঘটনা ঘটে।
পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন এসব তথ্য জানান।
পুলিশ জানায়, ডাকাতি করতে গিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় জনতার হাতে গণপিটুনির শিকার হন ডাকাতরা। ঘটনার সময় ডাকাতদের ছোড়া গুলিতে পাঁচজন আহত হন।
গণপিটুনির ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পেয়েছে পুলিশ। তার নাম এবাদুল ব্যাপারি, বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কানরগাঁও এলাকায়।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থলে একজনের ও শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। আরেকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আহত পাঁচজনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পালং মডেল থানার পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর এলাকায় কীর্তিনাশা নদীতে ১০ থেকে ১২ জনের একটি ডাকাত দল বাল্কহেডে হানা দেয়। তখন ওই এলাকার নৌযান শ্রমিকেরা ও স্থানীয় জনতা তাদের ধাওয়া করেন। ডাকাত দলের সদস্যরা গুলি ও ককটেল ছুড়ে স্পিডবোট ও ট্রলারে করে কীর্তিনাশা নদী দিয়ে পালাতে থাকেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শরীয়তপুরের আংগারিয়া ইউনিয়নের দাদপুর নতুন হাট এলাকা থেকে ডোমসার তেঁতুলিয়া পর্যন্ত কীর্তিনাশা নদীর দুই তীরে ও নদীতে নেমে স্থানীয় লোকজন তাদের ধাওয়া করতে থাকেন। তখন ডাকাত দল গুলি ও ককটেল ছুড়তে থাকে। এসময় তেঁতুলিয়া এলাকার লোকজন বাল্কহেড দিয়ে তাদের গতিরোধ করেন। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়। বিষয়টি জানার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে এবং আহত ডাকাতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেয়।
নিহত দুজনের মরদেহ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। আরেকজনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেলে আছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করে ওই মরদেহগুলোর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পালং মডেল থানার ওসি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ডাকাতি করে পালানোর সময় গণপিটুনির ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয়েছে। তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে হত্যা মামলাও করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৫
এসআই