ঢাকা, শনিবার, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১৪ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বন্ধের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৫
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বন্ধের দাবি

ঢাকা: তিস্তা মহাপরিকল্পনাকে আত্মঘাতী আখ্যা দিয়ে তা বন্ধের দাবি তুলেছে বিভিন্ন পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠন।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুরে ঢাকায় আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষে আয়োজিত নদ-নদী ও খাল দখল-দূষণ মুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন ও বুড়িগঙ্গা নদী সরেজমিনে পরিদর্শন কর্মসূচি থেকে এ দাবি করা হয়।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন, বাদাবন সংঘ, বারসিক, ক্যাপস, সিডাব্লিএফ, সিডিপি, ক্লিন রিভার বাংলাদেশ, দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা, গ্রীন সেভার্স, হাওর অঞ্চলবাসি, নাগরিক উদ্যোগ, নদী যাত্রিক, নোঙ্গর ট্রাস্ট, নদীপক্ষ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট), রিভারাইন পিপল, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), নবাব বাগিচা সামাজিক উন্নয়ন কল্যাণ পরিষদ, পরিবেশ উদ্যোগ ও গ্রীন ভয়েসের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

বাপা’র নির্বাহী সদস্য, ড. হালিম দাদ খানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক, মো. আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় পরিদর্শন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন নদীকৃত্য দিবস উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব ও নোঙর ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সুমন শামস, বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক, ফরিদুল ইসলাম ফরিদ, বাপা’র নির্বাহী কমিটির সদস্য জাভেদ জাহান, বাপা জাতীয় পরিষদ সদস্য হাফিজুল ইসলাম, হাজী শেখ আনছার আলী।

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রীন ভয়েস কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সমন্বয়ক আরিফুর রহমান, সিডাব্লিউএফ এর সভাপতি, শাহ্ ইশরাত আজমেরী, সিডিপির কর্মকর্তা এ্যডওয়ার্ড এলিয় মধু, এএলআরডির প্রতিনিধি, সানজিদা খান, নবাব বাগিচা সামাজিক উন্নয়ন কল্যাণ পরিষদের সহ-সভাপতি মো. সেলিম, গ্রীন ভয়েস কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তিতলি নাজনীন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রতিনিধি বাবুল মিয়া, ক্যাপস প্রতিনিধি সাকিব আল হাসান ও বারসিক প্রতিনিধি হেনা আক্তার রুপা।

মানববন্ধন শেষে বুড়িগঙ্গা নদী সরজমিনে পরিদর্শনে বসিলার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে নদীর দুপাশের বর্তমান দখল ও দূষণের বর্তমান অবস্থা পরিদর্শন করা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে ড. হালিম দাদ খান বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। গঙ্গা-বহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর পলিমাটি দিয়ে গঠিত একটি ব-দ্বীপ ভূমি। একাদশ শতাব্দিতে বাংলাদেশে নদীর সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় হাজার। নদীগুলো ছিল প্রশস্ত, গভীর ও পানিতে টইটুম্বুর, বর্ষাকালে প্রমত্তা। সারা বছর নাব্যতা থাকে তেমন নদীর সংখ্যা আজ সব মিলিয়ে ২৩০টি।

দখল উচ্ছেদের পর প্রত্যেকটি নদী, খাল, হাওর, ও বিলের সীমানা পানি বিজ্ঞানের আলোকে নির্ধারণ করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আর কোনো নদীকে মরতে দিতে পারি না।

মানবন্ধন থেকে আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবসে ১১ দাবি ঘোষণা করা হয়। দাবিগুলো হলো-

১. জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে পুনর্গঠন করে হাইকোর্টের নির্দেশের আলোকে দেশের অভ্যন্তরে সমস্ত নদী-বিল-হাওর এবং জলাশয়ের অভিবাবক হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।

২. সমস্ত দখলদারদের তালিকা হালনাগাদ করে প্রকাশ করা এবং দখলকৃত নদীগুলোকে দখলমুক্ত করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ।

৩. দখল উচ্ছেদের পর প্রত্যেকটি নদী, খাল, হাওর, ও বিলের সীমানা পানি বিজ্ঞানের আলোকে নির্ধারণ করা।

৪. তিস্তা নদীকে জীবন্ত ও আইনি সত্তা হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের ঘোষিত রায়ের বিধান মেনে চলায় সকলকে বাধ্য করা।

৫. নদী এবং অন্যান্য ভূপৃষ্ঠস্থ জলাশয়ে অপরিশোধিত পয়োনিষ্কাশন সম্পূর্ণ বন্ধে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

৬. নদী ও জলাশয় আইন মানতে বাধ্য করা।

৭. নদী, খাল ও জলাশয় দূষণকারীদের ওপর উপযুক্ত জরিমানা আরোপ করার বিধান চালু করা। একই সঙ্গে দূষণকারী প্রতিষ্ঠান/ ব্যক্তিকে কোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রদানে বিরত থাকা।

৮. নদী থেকে অবৈধ ও অপরিকল্পিত বালি উত্তোলন বন্ধ করা এবং বালি উত্তোলনের একটি নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়া চালু করা।

৯. নদীর ক্ষেত্রে কর্ডন পদ্ধতি পরিত্যাগ করে উন্মুক্ত পদ্ধতি অবলম্বনসহ অবিলম্বে সব প্রকল্প ও উদ্যোগ সমন্বিত করার উদ্যোগ গ্রহণ।

১০. দেশের সব নদ-নদী ও খাল দখল-দূষণ মুক্ত করা।

১১. আত্মঘাতী তিস্তা মহাপরিকল্পনা বন্ধ কর।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৫
আরকেআর/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।