ঢাকা: প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ রাখাসহ মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে নয় দফা প্রস্তাবনা দিয়েছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ‘এনআরবি রাইটস মুভমেন্ট, ম্যানচেস্টারের’ চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মিজানুর রহমান।
সোমবার (১৭ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
প্রবাসীদের সমস্যা সমাধান, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও নতুন শ্রম বাজার তৈরিতে করণীয় শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি সংগঠন ‘এনআরবি রাইটস মুভমেন্ট, ম্যানচেস্টার’।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মিজানুর রহমান বলেন, আমরা যারা নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশি-এনআরবি আছি, আমাদের কোনো হক বা রাইট ছিল না। আমরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার, পাউন্ড, ইউরো, দিরহাম রেমিট্যান্স পাঠিয়েছি বাংলাদেশে। বিনিময়ে আমরা কিছু পাইনি। আমরা যারা বিভিন্ন দেশে থাকি, তাদের কোনো মৌলিক অধিকার নেই।
তিনি বলেন, আমাদের কোনো ভোটাধিকার নেই। দীর্ঘ দিন ধরে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে যে, আমরা যারা প্রবাসে থাকি তারা সকলে ভোট দিতে পারব। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ ভোট দিতে পারে নাই। আমাদের শুধু আশা দিয়ে রেখেছে, মূলত কার্যক্রম কিছু হয়নি। তাই আমরা চাচ্ছি, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে যাতে আমরা ভোটার হতে পারি।
প্রবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নয় প্রস্তাব তুলে ধরেন মিজানুর রহমান। প্রস্তাবগুলো হলো:
১. প্রবাসীদের ভোটের অধিকার থাকতে হবে, যাতে তারা বিদেশে থেকে ভোট দিতে পারেন। অনেকদিন ধরেই এ নিয়ে কথাবার্তা চললেও সেটার কোনো বাস্তবায়ন হয়নি।
২. প্রবাসে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের মধ্যে যাদের দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদেরও সংসদ সদস্য (প্রার্থী) হওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
৩. যেসব এনআরবি’র সন্তানরা বিদেশে জন্মগ্রহণ করেছে, তাদের বাংলাদেশে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে নানা হয়রানির শিকার হতে হয়। তারা যাতে এই হয়রানির শিকার না হয়, সেই অধিকার দিতে হবে।
৪. প্রবাসীদের যেন দেশে আলাদা চোখে না দেখা হয়, তাকে যেন তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা না হয়। কারণ প্রায়ই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যাওয়ার সময় এয়ারপোর্টে এমন ঘটনা ঘটছে।
৫. যারা বিদেশে থাকে তারা হয়রানির শিকার হলে কোর্ট কাচারির মাধ্যমে, তাদের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
৬. এয়ারপোর্টে নামার পর যেন কোনো হয়রানির শিকার হতে না হয় কোনো প্রবাসীকে। তাদের যেন এয়ারপোর্টে সঠিক সম্মান করা হয়। তাদের প্রতি যেন কোনোরকম আক্রমণ না হয়।
৭. বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য এয়ারপোর্টে একটা আলাদা ভিভিআইপি কাউন্টার থাকা উচিত, যেন তাদের বাংলাদেশে এসে কোনো ঝামেলা পোহাতে না হয়। বাংলাদেশিদের সন্তানরা যখন প্রথম বাংলাদেশে আসে, তখন যেন তারা ঝামেলামুক্ত হয়ে দেশে ঢুকতে পারেন। দেশের পরিবেশ সম্পর্কে ভালো ধারণা পান।
৮. প্রবাসীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। যেন তারা সুচিকিৎসা পায়—সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
৯. যারা বিদেশে দীর্ঘদিন থাকছেন বা থাকেন, তাদের মধ্যে থেকে একজনকে শ্রম মন্ত্রণালয় বা প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হোক। যেহেতু তিনি বিদেশে থাকেন, তাই এ বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা আছে। আর যাদের বিদেশে থাকার অভিজ্ঞতা নাই, তাদের দায়িত্ব দিলে তারা সেভাবে কাজ সম্পন্ন করতে পারেন না, প্রবাসীদের অনুভূতি তাদের মধ্যে সেভাবে কাজ করে না।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৫
জিসিজি/এমজেএফ