ময়মনসিংহ: মহাপরিচালকের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষুব্ধ বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এলাকাবাসীর আন্দোলনের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) কার্যক্রম।
এতে আটকা পড়েছে বেতন-ভাতা, বিল-ভাউচার ও মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অডিট রিপোর্ট।
বাকৃবি সংলগ্ন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ভবনে টানা পঞ্চম দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছেন বঞ্চিত বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এলাকাবাসী। সরেজমিন ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগে গত রোববার থেকে ডিজি ড.আবুল কালাম আজাদের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করে প্রতিষ্ঠানটির বঞ্চিত বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এলাকাবাসী। বিগত গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র–জনতার বিপক্ষে লাঠিমিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া, ২৭ ছাত্রলীগ নেতার পদোন্নতি চূড়ান্ত করা, বঞ্চিতদের জ্যেষ্ঠতা দিতে পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গড়িমসি করাসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে এ আন্দোলন চলছে।
সূত্র জানায়, মহাপরিচালকের পদত্যাগ দাবিতে টানা পাঁচদিন ধরে আন্দোলন করছেন বঞ্চিতরা। এ আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন বিনার প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুল আলম তরফদার, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রেজা মোহাম্মদ ইমন, কৃষিবিদ মো. আব্দুর রসিদ, মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন, কর্মচারী নেতা মোহাম্মদ দীপুসহ অনেকে।
আন্দোলনকারীরা জানান, গত ৫ আগস্টের পর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর মহাপরিচালক অফিস থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। ফ্যাসিস্টের দোসর মহাপরিচালকের (ডিজি) বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে ডিজিকে অপসারণ করা হোক। অন্যথায় বঞ্চিতদের আন্দোলন চলবে।
এদিকে আন্দোলনের কারণে প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধান পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ড. মো. হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, বঞ্চিতদের আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড। আটকে আছে, বেতন-ভাতা ও বিল-ভাউচার এবং ট্যুর বিল। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের একটি অডিট রিপোর্ট এ স্থবিরতার কারণে আটকা পড়েছে।
তিনি আরও জানান, বেশ অনেকদিন ধরে ডিজি অফিস করছেন না, তার কক্ষে তালা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। প্রতিদিনই তারা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ মিছিল করছেন। এসব কারণে এ স্থবিরতার সৃষ্টি হয়েছে।
একই ধরনের মন্তব্য করেছেন বিনার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: ফরহাদ হোসেনসহ অনেকেই। তারা বলেন, বিগত সরকারের সময়ে একটি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে ডিজি পদে নিযুক্ত হন ড. আবুল কালাম আজাদ। ফলে দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নিয়মিত অফিস না করে ঢাকায় ব্যস্ত থাকেন ডিজি। এরই মধ্যে বঞ্চিতদের আন্দোলনের কারণে ডিজি এখন আর অফিসেই আসেন না। এতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সব ধরনের কাজে।
তবে এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে ডিজি ড. আবুল কালাম আজাদের কক্ষে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ডিজির একান্ত সচিব (পিএস) ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শাহ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আন্দোলনকারীরা স্যারের (ডিজির) কক্ষে তালা দিয়ে রেখেছেন। আমি অন্য রুমে বসে কাজ করছি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৫
এসআই