ঢাকা, সোমবার, ৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বড় ভাই আহত ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে, ছোট ভাই ফিরলেন কারাগার থেকে

সরোয়ার হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৫
বড় ভাই আহত ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে, ছোট ভাই ফিরলেন কারাগার থেকে

যশোর: বড় মেঘলা গ্রামের খায়রুল হোসেন সরদারের দুই ছেলে জাফর সরদার ও বজলুর রহমান সরদার। জীবনের উন্নতির লক্ষে তারা বিদেশ গিয়েছিলেন।

জাফর ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে বোমার আঘাতে আহত হয়েছেন; বজলুর দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ার কারাগারে কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন।

জাফর সরদার, যিনি পাচারের শিকার হয়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধ করতে বাধ্য হন। বর্তমানে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত বছরের ১৭ আগস্ট উন্নত জীবনের আশা নিয়ে বাড়ি ছেড়ে তিনি সাইপ্রাস যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার সেই পরিকল্পনা তার জীবনের অন্যতম কষ্টকর অভিজ্ঞতায় পরিণত হয়।

সৌদি আরব, দুবাই, লিবিয়া হয়ে তিনি পৌঁছান রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে। যেখানে তাকে ও আরও ১০ জন বাংলাদেশিকে জোর করে যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শিবিরে পাঠানো হয়। প্রশিক্ষণের পর তাদের পাঠানো হয় ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে। যেখানে তারা বোমার আঘাতে আহত হন।

জাফরের ছোট ভাই বজলুর রহমান মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন কাজের সন্ধানে। কিন্তু, কাগজপত্র সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সেখানে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এক বছর কারাভোগ শেষে গত ২৫ মার্চ তিনি দেশে ফিরে আসেন। বর্তমানে তিনি তার বাবা খায়রুল হোসেনের সঙ্গে চায়ের দোকানে কাজ করছেন।

বজলু জানালেন, তার বিদেশ যাওয়া ও দুই ভাইয়ের খরচ জোগাতে তাদের পরিবার এনজিও এবং মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। এখন, জীবনের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয় তার পরিবারকে।

খায়রুল হোসেন, যিনি তার দুই ছেলের এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পার করছেন। তিনি বলেন, এখনো ঢাকায় আমার স্ত্রী রাশিয়ান দূতাবাসে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন, যাতে আমাদের বড় ছেলে জাফরের শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত জানাতে পারেন।

তিনি আরও জানান, এখনো পর্যন্ত জাফরের আঘাত কতটা গুরুতর তা স্পষ্ট নয়, কিন্তু পরিবারের চিন্তা ও উদ্বেগের শেষ নেই।

এদিকে, খায়রুল হোসেনের পরিবার যেন এক কঠিন সময় পার করছে। তার বড় ছেলে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে ও ছোট ছেলে মালয়েশিয়ার কারাগারে থাকার কারণে তাদের জীবন প্রায়ই এক অনিশ্চিত যাত্রার পথে। তবে, তারা আশা করেন, একদিন তাদের ছেলেরা নিরাপদে ফিরে আসবে এবং তাদের পরিবার আবার সুখি হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৫
এমজে/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।